কারওয়ানবাজারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ভাঙা পড়ল আ'লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষকলীগ ও যুব সংহতির কার্যালয়

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:২০

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বৃহস্পতিবার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম -যাযাদি

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সড়ক ও ফুটপাতের পাশে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোশেন- ডিএনসিসি। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সগির হোসেন ও সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রেললাইনের পাশ থেকে অভিযান শুরু হয়। অভিযানে কারওয়ানবাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসের পশ্চিম দিকে তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের কারওয়ানবাজার শাখা, জনতা টাওয়ারের পশ্চিমে জাতীয় যুব সংহতি ও উত্তর দিকে জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিচে কৃষক লীগের তেজগাঁও থানা কার্যালয় উচ্ছেদ করা হয়। দুপুর ২টার পর কারওয়ানবাজারের কাঠপট্টি এলাকায় দোকান মালিকদের একটি তিন তলাবিশিষ্ট আধাপাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঈসমাঈল মোলস্না বলেন, 'মেয়র হানিফ সাহেবের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আমরা এখানে বসেছিলাম। প্রায় ৩০ বছর ধরে করছি। আমরা বারবার সিটি করপোরেশনকে রাজস্ব দিতে চেয়েছি। কিন্তু তারা নিতে রাজি হয়নি। তাহলে আমরা কীভাবে অবৈধ হলাম?' অভিযানে ১০০ জন কাঠ ব্যবসায়ীর মোট ১০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সগির হোসেন বলেন, ফলপট্টি এলাকা থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। কারওয়ানবাজারে সিটি করপোরেশনের সব রাস্তা ও ফুটপাতের পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে তবেই অভিযান শেষ হবে। মেয়র আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'কারওয়ানবাজারের রাস্তা ও ফুটপাত অবৈধ স্থাপনামুক্ত রাখতে ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হবে। যেসব এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে, সেখানে রাস্তা ও ফুটপাত যেন আর পুনর্দখল না হয় তারা নিয়মিত খোঁজখবর রাখবে।' উচ্ছেদ অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারওয়ানবাজারে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে অবস্থানের ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে দুপুর ১টায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুর ইসলাম বলেন, রাজধানীর কারওয়ানবাজারে রাস্তা ও ফুটপাতে অবৈধ দখল রুখতে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ লক্ষ্যে সিটি করপোরেশনের একটি জায়গা ইতোমধ্যে নির্ধারণও করা হয়েছে। মেয়র বলেন, 'এখানে দেখুন রাস্তা কত বড় ও চওড়া। কিন্তু একটি গোষ্ঠী ফুটপাত দখল করতে করতে রাস্তাও দখল করে ফেলে। এই রাস্তা-ফুটপাত জনগণের টাকায় হয়েছে। তারা এই দখল চায় না। যারা এমন কাজ করছে, তাদের আমি হুশিয়ার করছি। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণ যা চায় সেটাই হবে।' দখল উচ্ছেদের পরও আবার পুনর্দখল হয়, এটা কীভাবে থামাবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের সিটি করপোরেশনের নিজস্ব জায়গা আছে এখানে। কিন্তু আফসোসের বিষয়, সেই জায়গাগুলোও দখলে ছিল। একটিতে ক্লাব ছিল। আমরা সেগুলো সরিয়ে দিয়েছি। আর আমাদের একটি জায়গা আমরা পুলিশকে দেব ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য। পুলিশ ফাঁড়ি থেকেই অত্র এলাকায় দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশও দীর্ঘদিন ধরে এখানে ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য একটি জায়গা চাইছিল। আমরা জায়গা চূড়ান্ত করেছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশকে দেয়া হবে।' কারওয়ানবাজার এলাকার বিভিন্ন সড়ক বাইপাস হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা আছে বলেও জানান ডিএনসিসি মেয়র। তিনি বলেন, কারওয়ানবাজার থেকে বাংলামোটরের দিকে চলে যাওয়ার রাস্তায় কাজ চলছে। এরমধ্যে ফার্মগেট থেকে হলিক্রসের সামনে দিয়ে এফডিসির মুখে বের হয়ে যাওয়ার একটি বাইপাস রাস্তা হবে। \হকারওয়ানবাজার প্রধান সড়ক থেকে বাজারের ভেতর দিয়ে হোটেল সোনারগাঁওয়ের সামনে দিয়ে উঠে হাতিরঝিলের দিকে বের হয়ে যাওয়া যাবে। মেয়র বলেন, 'এই বাজারের বদলে গাবতলী, যাত্রাবাড়ী এবং মহাখালীতে বাজার করা হবে। এখানকার বাজার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। সেগুলো মিটে গেলেই বাজার সরে যাবে।'