কর্ণফুলীর পাড়ে অলস বসে আছে মাছ ধরার ট্রলার

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ১৮ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণার পর জাল বুনে সময় কাটাচ্ছেন জেলেরা -যাযাদি
যাযাদি ডেস্ক আশ্বিনের পূর্ণিমার চার দিন আগে এবং পূর্ণিমার পর ১৮ দিন দেশের উপকূলীয় অঞ্চল, নদীর মোহনায় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণার পর ফিশারিঘাটসংলগ্ন বাজারে নৌকা ও ট্রলারের জ্বালানি তেলের অধিকাংশ দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। মাছের আড়তগুলোকেও ইলিশ সংগ্রহ না করতে বলা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বুধবার থেকে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময়ে ইলিশের আহরণ, পরিবহণ, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। এ আইন অমান্য করলে জেল অথবা জরিমানা এমনকি উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। ৮০ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়ে এই সময়েই। একটি বড় ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়তে পারে। যেসব জেলার জেলেরা মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল, তাদের খাদ্য সহযোগিতা দেওয়া হবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকাকালীন সময়ে। জেলা সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজিম উদ্দিন বলেন, সরকারঘোষিত ২২ দিনের এই অভয়াশ্রম কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা টাস্কফোর্স তৎপর রয়েছে। ইলিশ মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘণ্টা কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ টিমের অভিযান চলবে। মৎস্য বিভাগের গবেষণা অনুযায়ী, ইলিশের মূল উৎপাদন কেন্দ্র ছয়টি অভয়াশ্রমের দুটি হচ্ছে- উত্তর-পূর্বে মিরসরাই উপজেলার শাহেরখালী থেকে হাইতকান্দী, দক্ষিণ-পূর্বে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর কুতুবদিয়া-গন্ডামারা পয়েন্ট। ফিশারিঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ইলিশের মৌসুমে এবার সাগরে ইলিশ ধরা পড়েছে বেশি। পুরো ভাদ্র মাসজুড়েই ইলিশ এসেছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে এখন সাগরমুখী ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই মাছ আহরণ, পরিবহণসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ফিশিংবোট মালিক সমিতির সভাপতি নূর হোসেন বলেন, উত্তাল সমুদ্রে দাপিয়ে বেড়ানো মাছ ধরার ট্রলারগুলো এখন অলস বসে আছে কর্ণফুলীর দু'পাড়ে। পুরানো যন্ত্রাংশ সংস্কার, জাল মেরামতের পাশাপাশি নদীর তীরে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে জেলেরা। পাথরঘাটার জেলে সুমন জলদাস অভিযোগ করে বলেন, এর আগে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকার সময়টাতে চট্টগ্রামের প্রায় ৪ হাজার জেলে পরিবার কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা পায়নি। মৎস্য অধিদপ্তরের করা তালিকা থেকে তারা বাদ পড়ে যায়। আবার এসময়ে বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও মিয়ানমার ও ভারতের জেলেরা ঠিকই মাছ ধরছে। জানা গেছে, এর আগে ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকার সময়ে সীতাকুন্ড, মীরসরাই, সন্দ্বীপ, বাঁশখালী ও আনোয়ারা এলাকার ২৪ হাজার ৪টি জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এদের মধ্যে সীতাকুন্ডের প্রায় ৫ হাজার জেলে পরিবার চাল গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। নগরের উত্তর কাট্টলী থেকে মোহরা এলাকার প্রায় আড়াই হাজার জেলে পরিবার ও কর্ণফুলী উপজেলার দেড় হাজার জেলে পরিবারও এর আগে কোনো সহায়তা পায়নি। এ ব্যাপারে জেলা সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজিম উদ্দিন বলেন, সাধারণত তালিকাভুক্ত জেলেরাই অগ্রাধিকার পায়। তালিকায় যাদের নাম থাকে না, তারা বরাদ্দ পায় না।