গণভবনের সামনে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের অবরোধ

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের সামনের সড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে সরকারি চাকরিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সুযোগের দাবি জানিয়েছে একটি সংগঠন। 'চাকরি প্রত্যাশী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট পরিষদ' ব্যানারে শতাধিক প্রতিবন্ধী বুধবার সকালে এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ব্যাপারে সুষ্ঠু সমাধানের দাবি জানান তারা। সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আলিফ হোসেন বলেন, ছয় দফা দাবিতে তারা সকাল ৯টা থেকে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা অবস্থানের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একজন প্রতিনিধি এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের দেখা করার সুযোগ দেওয়ার আশ্বাস দিলে সড়ক ছেড়ে ফুটপাতে অবস্থান নেন তারা। আলিফ হোসেন বলেন, 'আমাদের ছয় সদস্যের একটি দল প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে যাবে। দাবি পূরণ না হলে আমরা আবার সড়ক অবরোধ করব।' শেরেবাংলানগর থানার ওসি জানে আলম বলেন, সকালে অফিস শুরুর সময় এই কর্মসূচির কারণে মিরপুর সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় রাস্তায় আটকে থাকতে হয় অফিসগামী যাত্রীদের। 'পরে আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সকাল ১০টার দিকে তারা সড়ক ছেড়ে ফুটপাতে উঠে গেলে যান চলাচল শুরু হয়।' ছয় দফা : নবম থেকে ২০তম গ্রেডভুক্ত সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি চাকরিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়োগ। গত ১৭ এপ্রিল প্রকাশিত বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের দশম গ্রেডভুক্ত ৩৮ নম্বর রিসোর্স শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে ওই পদে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠদানের জন্য শুধু উপযুক্ত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রম্নতিলেখক নীতিমালা সরকারিসহ স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি চাকরি পরীক্ষাতেও কার্যকর করা। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত মাসে অন্তত ১০ হাজার টাকা করে বেকার ভাতা দেওয়া। বিশেষ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধীদের চাকরির সুযোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিবছর একবার বিশেষ ব্যবস্থায় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত চাকরিতে নিয়োগ এবং তীব্র মাত্রার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সর্বস্তরে কাজের সুযোগ দেওয়া। গতবছর পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ বরাদ্দ ছিল। ওই পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেয় সরকার। কমিটি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল করে পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করলে গত বছরের ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভা তাতে সম্মতি দেয়। সরকার কোটা বাতিলের পরিপ্রত্র জারি করার পর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটার দাবিতে গতবছর নভেম্বরে শাহবাগ মোড়ে সমাবেশ করে প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীরা।? আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতবছর অক্টোবরে এক অনুষ্ঠানে বলেন, কোটা বাতিল করা হলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীরা সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় অগ্রাধিকার পাবেন। আর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম গত জানুয়ারিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিল করা হলেও প্রতিবন্ধীদের কোটা বহাল আছে। তবে তা কীভাবে আছে, সে ব্যাখ্যা তিনি দেননি।