ভারতের সঙ্গে চুক্তির প্রতিবাদে মৎস্যজীবী দলের বিক্ষোভ

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মৎস্যজীবী দল আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী -যাযাদি
যাযাদি রিপোর্ট ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল। শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। মিছিল শেষে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাবের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রিজভী বলেন, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা নিছক একটি হত্যাকান্ড নয়। আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ ও চিন্তা চেতনায় যে পচন ধরেছে, আবরার হত্যা তারই নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। অবৈধ চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসই ছিল আবরার ফাহাদের অপরাধ। আবরার বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে, বাংলাদেশের জনগণের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে কথা বলায় এ দেশীয় তাবেদাররা তাকে সহ্য করতে পারেনি। আর পারেনি বলেই আবরারকে নির্মমভাবে হত্যা করে আধিপত্যবাদী অপশক্তি বাংলাদেশের বিরোধী গোষ্ঠীকে তারা একটি সতর্ক বার্তা দিয়েছে। তাই আবরারের মৃতু্য কোনো সাধারণ মৃতু্য নয়। তবে আবরারের মৃতু্য দেশপ্রেমিক জনগণকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছে আর তা হলো সাহসিকতার সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বর্তমান আওয়ামী জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। আর এ বার্তা থেকেই বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ আবরার হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে। তিনি বলেন, আধিপত্যবাদী অপশক্তি এবং তাদের এ দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক জনগণের আন্দোলনের মূর্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছেন শহীদ আবরার ফাহাদ। আবরার ফাহাদ বর্তমান দুরাচার সরকারের বিরুদ্ধে কেবল বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরই নয়, শহীদ আবরার এখন দেশপ্রেমের প্রতীক। রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা প্রায়ই তার নিজের স্বজন হারানোর কথা বলে কাঁদেন। স্বজন হারানোর সুবিধাভোগী হিসেবে তিনি কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আপনজনকে হারিয়ে আপনি যেমন ব্যথাতুর হন, অন্যদিকে আপনার শোষণ-পীড়নে বাংলাদেশের হাজার হাজার পরিবার আজ সর্বস্বান্ত, স্বজনহীন-গৃহহীন। তারা নীরবে-নিভৃতে কাঁদেন; কিন্তু তাদের কান্না তো টেলিভিশনে দেখানো হয় না। রিজভী বলেন, জনগণ নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি যে, ইতোপূর্বে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী-সন্তানদেরও গণভবনে ডেকে নিয়ে সান্ত্বনা দেয়া হয়েছিল। তাকে উদ্ধার এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজও ইলিয়াস আলীর পরিবার তার সন্ধান পায়নি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির মা-বাবাও গণভবনের আশ্বাস পেয়েছিলেন। বিশ্বজিৎ এর মা-বাবা, নুসরাতের মা-বাবা, তনুর বাবাকেও গণভবনে ডেকে নিয়ে বিচারের গ্যারান্টি ও সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব মামলার কী পরিণতি হয়েছে দেশবাসী তা জানেন। রিজভী আরো বলেন, শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী। সরকার দেশনেত্রীকে কোনোভাবেই মুক্তি না দিয়ে কারাগারে হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নে জোরাল তৎপরতা চালাচ্ছে। এখন আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্য জনসমাবেশে বুক ফুলিয়ে ঘোষণা করছেন বেগম খালেদা জিয়াকে আমৃতু্য কারাগারে বন্দী রাখা হবে। মিছিলে মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাদিম চৌধুরী, অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, জাকির হোসেন খান, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, লোকমান হোসেন হাওলাদার, শাহ আলম, জহিরুল ইসলাম বাশার, এম এ হান্নান, কবির উদ্দিন মাস্টার, সাইদুল ইসলাম টুলু প্রমুখ অংশ নেন।