অনুমোদনের অপেক্ষা

বাংলাদেশ-ভারত রেল ট্রান্সশিপমেন্ট শুরু হচ্ছে

বাংলাদেশ-ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট চালু করতে সব প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। যা এখন অনুমোদনের জন্য রেলপথ মন্ত্রীর স্বাক্ষরের অপেক্ষায় বলে বাংলাদেশ রেলওয়ে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
শিগগির বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাশের সিরাজগঞ্জ বাজার আইসিটি থেকে বাংলাদেশ-ভারত রেল ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। রেওয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর লোড ক্যাপাসিটি (ধারণক্ষমতা) কম হওয়ায় ভারত থেকে কন্টেনারবাহী রেল, ব্রিজের ওপর দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই যমুনা নদীর ওপর দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত ট্রানজিটের পরিবর্তে আপাতত সিরাজগঞ্জ বাজার আইসিটি থেকে বাংলাদেশ-ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট চালু করতে চাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ ব্যাপারে সকল প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়। যা এখন অনুমোদনের জন্য রেলপথ মন্ত্রীর স্বাক্ষরের অপেক্ষায় বলে বাংলাদেশ রেলওয়ে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। জানা গেছে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর দিয়ে নৌপথে বাংলাদেশ-ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট চালু হয়েছে। কিন্তু যমুনার ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর রেলের লোড ক্যাপসিটি ১৬ 'এস্কএল' কন্টেইনারসহ তা ২৭ মেট্রিকটনে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই একইসময় বেশি কন্টেইনার নিয়ে রেল চলাচল করলে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বঙ্গবন্ধু সেতু। যে কারণে পৃথক রেল সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত কন্টেইনারবাহী ভারতীয় ট্রেন সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশনের পাশে আইসিটিতে এনে তা ট্রাকে ট্রান্সশিপমেন্ট করে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে নেয়ার মাধ্যমে এ কার্যক্রম চালাতে চাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সূত্র জানায়, ২০১০ সালে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার। ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মধ্যে ট্রানজিটসহ অন্য কয়েকটি বিষয়ে যৌথ ইশতেহার সই হয়। ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশের সড়ক ও রেলপথ উন্নয়নে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা ঋণও মঞ্জুর করে ভারত। অর্থাৎ এ ঋণ ব্যবহৃত হবে আমাদের সড়ক-রেলপথ উন্নয়নে। তবে বাংলাদেশের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের আখাউড়া-ভারতের আগরতলা ও ফেনী-ভারতের বিলোনিয়া নতুন করে রেল সংযোগ নির্মাণের জন্য অনুদান হিসেবে দিয়েছে ভারত। জানা গেছে, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট বিষয়ে বিভিন্ন চুক্তি হলেও সড়ক ও রেলওয়ের অবকাঠামো ঠিক না থাকায় এ কার্যক্রম এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি রেলপথ মন্ত্রী ভারত সফরকালে নতুন রেল সেতু না হওয়া পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ বাজার আইসিটি ব্যবহার করে ট্রান্সশিপমেন্টে কার্যক্রম চালাতে সম্মত হয় ভারত সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রান্সশিপমেন্ট শুরু করতে যাচ্ছে রেল। আর ২০১৬ সালের ১৬ জুন আশুগঞ্জ নৌবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ-ভারত প্রথম নৌ-ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রম শুরু হয়। ট্রান্সশিপমেন্টের ব্যাপারে জানতে চাইলে, বাংলাদেশ রেলওয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান যায়যায়দিনকে বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর যেহেতু লোডক্যাপাসিটি কম, তাই পৃথক রেল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে ট্রান্সশিপমেন্ট চালাতে হবে। তবে নির্মাণ শেষ হলে রেল সেতুর ব্যয় তোলার জন্য হলেও ট্রানজিট শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এতে ভারতের পাশাপাশি যানবাহন ব্যবহার করে বাংলাদেশও লাভবান হবে বলে তিনি জানান। \হ