শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভালোবাসাকে সঙ্গী করে অন্তিমযাত্রায় শিল্পী কালিদাস কর্মকার

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০৮
একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকারের মরদেহ সোমবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে নেওয়া হলে ঢাবি উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান -ফোকাস বাংলা

জীবদ্দশার মতো শেষ যাত্রায়ও শিল্পী কালিদাস কর্মকারের ভালোবাসার অভাব হলো না। সহকর্মী-শুভানুধ্যায়ীদের ভালোবাসার ফুলের সুবাস মেখে অনন্তের পথে যাত্রা করলেন বাংলাদেশে স্থাপনা শিল্প ও পারফরমেন্স শিল্পের সূচনাকারী এই শিল্পী। সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা এবং এরপর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শিল্পীর প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে শহিদ মিনার থেকে বেলা সাড়ে ১২টায় শিল্পীর মরদেহ সবুজবাগের শ্মশানঘাটে নেওয়া হয়। সেখানেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শহিদ মিনারে শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় জাদুঘর, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, ঢাকা গ্যালারি, গ্যালারি কসমসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। গত ১৮ অক্টোবর মারা যান কালিদাস কর্মকার। শহিদ মিনারে শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার সহপাঠী ভাস্কর হামিদুজ্জামান অশ্রম্নসিক্ত কণ্ঠে বলেন, 'কালিদাস সত্যিকার অর্থেই একজন আন্তর্জাতিক মানের শিল্পী ছিলেন। তার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি আছে। এই মুহূর্তে আমি বলতে পারছি না। নতুন প্রজন্মকে সে উৎসাহিত করে তুলেছে। এই দেশের আধুনিকতার আন্দোলন শুরু করে গেছে সে, এটা আমি স্বীকার করি।' শিল্পী হাসেম খান বলেন, 'শিল্পী কালিদাস আমাদের মাঝে থেকে অকস্মাৎ চলে গেলেন। তাই আমরা যারা তাকে চিনি বা তার সম্পর্কে জানি তাদের জন্য তার এই মৃতু্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তিনি সারা জীবন তার ছবি আঁকা এবং অন্যান্য কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষকে আনন্দ দিয়ে গেছেন, মানুষকে প্রাণবন্ত করে রেখেছেন। তাকে কেউ এসব দায়িত্ব দেয়নি, তিনি নিজে এই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন।' শিল্পী মনিরুল ইসলাম স্মৃতিচারণ করে বলেন, 'কালিদাস খুব ফ্রি লাইফ নিয়ে চলতেন। যখন ইচ্ছা আমেরিকা বা স্পেনে চলে গেছেন। কিন্তু তিনি যেখানেই থাকতেন না কেন সবসময় বাংলাদেশের খোঁজ রাখতেন।' শিল্পী মোস্তফা আশরাফ বলেন, 'শিল্পী কালিদাসের শূন্যতা আমরা কিভাবে পূরণ করব জানি না। কিন্তু তাকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে তার একটা কথাই আমাদের মনে রাখতে হবে, তিনি বারবার করে বলতেন আমাদের একটা জাতীয় চিত্রশালা হতে হবে, যেখানে আমাদের প্রতিটা আর্টিস্ট যারা এই দেশের ছবি এঁকে গেছেন তাদের ছবিকে সেখানে সংরক্ষণ করতে হবে। এ ছাড়া আমাদের একটি ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারি থাকবে সেই বিষয়টিও শিল্পী কালিদাসের একটি বড় আকাঙ্ক্ষা ছিল।' শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, শিল্পী কালিদাস চিত্রকর্মের বহু শাখায় ও বহু মাত্রায় দেশ ও বিদেশে তার বিচরণ ঘটিয়েছেন এবং প্রত্যেক জায়গায় বাংলাদেশের মর্যাদাকে তুলে ধরেছেন। 'তার চিত্রকর্ম এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাকে আগামী প্রজন্মের কাছে বাঁচিয়ে রাখবে এই প্রত্যাশা করি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে