ট্রাফিকের গায়ে থাকবে ক্যামেরা অবৈধ সুবিধা নিলেই ব্যবস্থা

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশ | ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ০০:১৯

যাযাদি রিপোর্ট
সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম -যাযাদি

ট্রাফিক আইন নিয়ে কেউ সুবিধা নিতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম। সোমবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে 'সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮' নিয়ে ব্রিফিংকালে ডিএমপি কমিশনার একথা জানান। শফিকুল ইসলাম বলেন, কেউ অবৈধভাবে সুবিধা নিতে চাইলে, মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা নিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রত্যেক ট্রাফিকের গায়ে ক্যামেরা লাগানো থাকবে। মামলা দেওয়ার সময় ছবি না তোলা থাকলে সেই ট্রাফিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, আইন কার্যকরের আগে কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ করেছে ডিএমপি। সচেতন করা হচ্ছে, প্রচারণা চালানো হচ্ছে, লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে মামলা-জরিমানার নতুন পদ্ধতি কার্যকর করা হবে। তিনি বলেন, 'নতুন আইনে সাজা বাড়ানো হয়েছে। সাজার ভয়ে আইন মানবে মানুষ। চালকদের পয়েন্ট সিস্টেম রাখা হয়েছে। চালকদের পয়েন্ট কমতে থাকলে একটা পর্যায় লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। সেই চালক আর পরে লাইসেন্স নিতে পারবেন না।' ডিএমপি কমিশনার বলেন, আইন পুরোদমে বাস্তবায়ন শুরু হলে সড়কের ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সব মামলা সার্ভারে জমা হবে। ট্রাফিকের কেউ আইন অমান্য করলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথমবার কেউ অমান্য করলে অল্প জরিমানা করা হবে। পরেরবার তাকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে লিফলেটও দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যেসব সড়কে ফুটওভার ব্রিজ নেই সেখানে পথচারীদের সড়ক পারাপারে সহযোগিতা করবে ট্রাফিক পুলিশ। আর যেসব সড়কের ফুটওভার ব্রিজ আছে সেখানে ব্রিজ ব্যবহার না করা হলে পথচারীদের শাস্তি দেওয়া হবে। ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের নামে মামলা দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে ৯৯% যাত্রী হেলমেট পরছে। গুটিকয়েক পরছে না, যাদের অধিকাংশই পুলিশ ও সার্জেন্ট। এই আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা? জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, 'আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ স্বচ্ছ থাকবে। আমরা পুলিশের সবাইকে বলে দিয়েছি, ট্রাফিকের লোকজন যদি আইন অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।' আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন সম্পর্কে সার্জেন্টদের মাসখানেক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, তাদের বই দেয়া হয়েছে এবং সেই বইয়ের ওপর পরীক্ষা নেয়া হবে। আর আইনের কোনো ধারায় যদি কাউকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়, তাহলে সে বিষয়ে শুনানির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রায়ই মামলার কাগজ তোলা নিয়ে অনেককে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ভোগান্তি রোধে পুলিশের কোনো উদ্যোগ আছে কিনা- জানতে চাইলে মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, 'আমরা মামলা দিলে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ে তার দায়িত্বে কাগজ দেই। অন্য কোথাও কাগজ দেই না। উনার কাছে গেলেই ভোগান্তি ছাড়া গাড়ির কাগজপত্র পাওয়া যাবে।' আইনের ধারাগুলোতে সর্বনিম্ন টাকার পরিমাণ লেখা না থাকলে সর্বোচ্চ শাস্তির পরিমাণ রয়েছে। সেক্ষেত্রে পুলিশ কীভাবে মামলা দেবে? জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, নতুন আইন যদি কেউ প্রথমবার ভঙ্গ করে তাহলে তাকে সামান্য পরিমাণ জরিমানা করা হবে। একই সঙ্গে তাকে একটি লিফলেট দেয়া হবে যে, পরবর্তীতে এই একই অপরাধ করলে তাকে আইন অনুযায়ী পুরো জরিমানা বা শাস্তি ভোগ করতে হবে। প্রথম এক সপ্তাহ নতুন আইনে কোনো মামলা হবে না। এরপর থেকে রসিদের মাধ্যমে মামলা নেয়া শুরু হবে। আর পস মেশিনের সার্ভার আপডেট করার পরে এ পদ্ধতিতে মামলা নেয়া শুরু হবে। পথচারীরা জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে পার না হলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা। এই পরিমাণটি আগে ছিল ২০০ টাকা। অথচ রাজধানীর অনেক সড়কে ওভারব্রিজ বা জেব্রা ক্রসিং নেই। সেক্ষেত্রে কীভাবে মামলা দেয়া হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেসব জায়গায় জেব্রা ক্রসিং নাই ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের রাস্তা পারাপারে সাহায্য করবেন।