পর্দা উঠল ঢাকা লিট ফেস্টের

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বৃহস্পতিবার ঢাকা লিট ফেস্টের ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ -যাযাদি
১৮টি দেশের প্রায় তিনশ লেখক-সাহিত্যিক-চিন্তাবিদের অংশগ্রহণে শুরু হলো ঢাকা লিটারারি ফেস্ট-২০১৯। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে লিট ফেস্টের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বরাবরের মতো এবারের আয়োজনেও বিশ্বনন্দিত শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা শতাধিক অধিবেশনে অংশ নেবেন। সকালে উদ্বোধনী আয়োজনের শুরুতেই রবীন্দ্রনাথের শিল্পসৃষ্টি 'পঞ্চভূত' নিয়ে নৃত্যনাট্য পরিবেশন করেন সাধনা নৃত্যগোষ্ঠী। এরপর কথা বলেন আয়োজনের পরিচালক ও অতিথিরা। লিট ফেস্ট নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, নয় বছর আগে যে 'হে উৎসব' বিশ্বসাহিত্য থেকে বাংলাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার আয়োজন ছিল, আজ 'ঢাকা লিট ফেস্ট' হিসেবে সেই উৎসবই বাংলা সাহিত্য দ্বারা বিশ্বসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করছে। ফেস্টের পরিচালক সাদাফ সায্‌ বলেন, আজকের দিনে ঢাকা লিটারেচার ফেস্টিভাল সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মুক্তচিন্তা এবং বাক স্বাধীনতার জন্য। এ উৎসব আমাদের সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যে আরো পরিচিত করে তুলবে। প্রতিবছরের মতো এবারের আয়োজনেও বিশেষ করে দেশ ও বিদেশের সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতি, নারীর ক্ষমতায়ন ও বাকস্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুলস্নাহ সিরাজী বলেন, এ আয়োজন আমাদের হৃদয়ের সংযোগ, মস্তিষ্কের সংযোগ, বিশ্বরেখায় পথযোগাযোগ। এ আয়জনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা থেকে উপাদান নিয়ে আমরা যেন আমাদের সাহিত্যে তা স্থাপন করতে পারি, সে মনরূপ আমাদের সৃষ্টি হোক। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক মণিকা আলী বলেন, এ মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমি গর্বিত। ১৯৭১ সালে মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে আমি বাংলাদেশ ছেড়েছি। তারপর আর আসা হয়নি। এখন ঠিক করে বাংলা ভাষাটাও বলতে পারি না। এজন্য অবশ্য দুঃখ হয়। এত সমৃদ্ধ যে ভাষা, সে ভাষা আমি জেনেও ভুলে গেছি। তবে এ ভাষার প্রতি ভালোবাসাটা কমেনি। তবে সবকিছুর পরও এই বাংলা ভাষা আমার বেড়ে ওঠা এবং লেখালেখির প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। ২০১১ সালে 'হে ফেস্টিভ্যাল' নামে যাত্রা শুরু হয় এ আয়োজনের। পরে ২০১৫ সাল থেকে এটি ঢাকা লিট ফেস্ট নামে আত্মপ্রকাশ করে। বিগত আট বছরে এ উৎসবে যোগ দিয়েছেন নোবেল, ম্যান বুকার, পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী সাহিত্যিকরা। এবারের উৎসবে বিদেশি অতিথিদের মধ্যে অংশ নিচ্ছেন- ম্যানবুকার পুরস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত সাহিত্যিক মনিকা আলী, 'চৌরঙ্গী'খ্যাত পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত সাহিত্যিক শংকর, পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী লেখক জেফরি গেটলম্যান, ডিএসসি অ্যাওয়ার্ড ফর সাউথ এশিয়ান লিটারেচার পুরস্কার বিজয়ী সাহিত্যিক এইচ এম নাকভি, ইতিহাসভিত্তিক লেখক উইলিয়াম ডালরিম্পল, ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও লেখক শশী থারুর, কবি তিশানি দোশি, সাহিত্যিক স্বপ্নময় চক্রবর্তী, কবি ও সাংবাদিক মৃদুল দাশগুপ্ত, ভারতীয় সাংবাদিক প্রেয়াগ আকবর, ফিনিশ সাংবাদিক মিন্না লিন্ডগ্রেন, ব্রাজিলের কথাসাহিত্যিক ইয়ারা রড্রিগেজ প্রমুখ। বাংলাদেশের শিল্পী, সাহিত্যিকদের মধ্যে রয়েছেন- কবি আসাদ চৌধুরী, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ইমদাদুল হক মিলন, শাহীন আখতার, মোস্তফা কামাল, আসাদুজ্জামান নূর, ফখরুল আলম, মঈনুল আহসান সাবের, আলী যাকের, শামসুজ্জামান খান, আনিসুল হক, কামাল চৌধুরী, আফসান চৌধুরী, কাইজার হক, খাদেমুল ইসলাম প্রমুখ। এবারের উৎসবে অন্যতম আর্কষণ হিসেবে থাকছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র 'হাসিনা: আ ডটারস টেল'-এর বিশেষ প্রদর্শনী ও আলোচনা। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের আগাম আয়োজন হিসেবে থাকছে আলোচনা ও তাকে নিবেদিত কবিতা পাঠের আসর। অন্যদিকে আজ বিকেলে উৎসবের প্রথম দিনই দেওয়া হবে জেমকন সাহিত্য পুরস্কার।