সারের দাম কমাতে চায় সরকার

এবারও ধানের দাম কমার শঙ্কা কৃষিমন্ত্রীর

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক -যাযাদি
কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, 'আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে এবারও ধানের বাম্পার ফলন হবে। তাই এবারও ধানের দাম কমে যেতে পারে। এ থেকে কৃষকদের সুরক্ষা দিতে সরাসরি তাদের নিকট থেকে ধান কেনার পাশাপাশি কয়েকটি সারের দাম কমানোর প্রস্তাব করবেন তারা।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারের দাম কমানোর জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। তাই এ অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সার বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, 'এ বছরও আমরা বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে দেখতে পাচ্ছি, একই সঙ্গে আমাদের নিকটও যেসব তথ্য রয়েছে তাতে করে ধানের ভালো ফলন হবে। প্রকৃতি খুব অনুকূলে ছিল, সে কারণে আমনের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। আপনাদের রিপোর্ট ও আমাদের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ধানের দাম আবারও কমে যাচ্ছে।' 'মিলাররা বলছে, তাদের গুদামে যে চাল আছে সেগুলোই বিক্রি করতে পারছেন না। আমন মৌসুমে মিলাররা যদি ধান না কেনে, কিছু কিনবে অবশ্য, না কেনার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ আমন চালটা ভালো। তারপরও আমি মনে করি, বেশি উৎপাদন হলে দামটা কমে যাবে।' তিনি বলেন, 'এর ক্ষতি থেকে (ধানের দাম) রক্ষা করতে কৃষকদের আমরা দুভাবে প্রণোদনা দেই। একটা হচ্ছে, সরকার সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ধান কেনে এবং অন্যটা ভর্তুকি দিয়ে। এবার আমন মৌসুমে সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ছয় লাখ টন ধন কেনা হবে। যেটা এর আগে আর কোনো দিন হয়নি। গত বোরো মৌসুমে আমরা চার লাখ টন ধান কিনেছি।' কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'আগামী ২০ তারিখ থেকে আমন মৌসুমের ছয় লাখ টন চাল কেনা শুরু হবে। এ ধান কেনা আমরা কঠোরভাবে মনিটরিং করব, যাতে সত্যিকারের কৃষক ধান সাপস্নাই দিতে পারে। সত্যিকারের কৃষকের নিকট থেকে কেনা হয়। এটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে চাষির সংখ্যা যদি বেশি হয়, তাহলে লটারি করে ধান কেনা হবে। আমনে যেসব কৃষক ধান সাপস্নাই দেবে, তারা যেন আবার বোরোতে সাপস্নাই দিতে না পারে সেটাও কঠোরভাবে মনিটরিং হবে। এক বছরে আমরা বেশি সংখ্যক কৃষককে এ সুবিধাটা দিতে চাই।' আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'যদি আমরা ধান চাষের মূল উপকরণ সারের দাম আরও কমাতে পারি বা বেশি ভর্তুকি দেই তাহলেও কৃষকরা উপকৃত হবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দ্রম্নত এ বিষয়টা আলোচনা করা হবে। দু-একটি সারের দাম আরও কমানো যায় কি না? আজকের বৈঠকে এ সারের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয়নি। তবে কমানোর জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্ত লাগবে। \হআমরা সুপারিশ আকারে এটা পাঠাব।' তিনি আওর বলেন, 'এমনিতেই আমরা কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি দিচ্ছি। এটি আরও বাড়ানো হবে। কৃষিকে লাভজনক করতেই হবে। এটা লাভজনক করতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। আশা করছি ফসল উৎপাদন করে কৃষক সঠিক মূল্য পাবে। কৃষি যাতে লাভজনক পেশা হিসেবে থাকে সেদিক নিশ্চিত করতে চায় সরকার।' উলেস্নখ্য, গত মৌসুমেও ধানের দাম অস্বাভাবিক কমে গিয়েছিল। উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম অনেক কম হয়। ধানের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দেয়। ক্ষোভে কৃষকরা ধানে আগুন লাগিয়ে বা রাস্তায় ধান ঢেলে দিয়ে নানা অভিনব কায়দায় প্রতিবাদও জানায়।