স্মরণসভায় ওবায়দুল কাদের

অন্তর্কলহ চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের বড় দুর্বলতা

ওবায়দুল কাদের বলেন, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু জনগণকে ভালোবাসতেন বলেই তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা আজও দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
চট্টগ্রাম নগরীর কেবি কনভেনশন সেন্টারে বুধবার আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের -যাযাদি
যাযাদি ডেস্ক চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অন্তর্কলহই বড় দুর্বলতা বলে মনে করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বুধবার দুপুরে নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে প্রয়াত নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। কাদেরের বক্তব্যের আগের দিনই মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে নগর যুবলীগ আয়োজিত সমাবেশে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ক্ষুব্ধ হয়ে বক্তব্য না দিয়েই চলে যান। বুধবারের সভায় প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের বলেন, "চট্টগ্রামে মাঝে মাঝে যখন অবাঞ্ছিত অপ্রীতিকর ঘটনা হয় তুচ্ছ কারণে তখন মনে বড় কষ্ট লাগে। বড় দুঃখ পাই। সামান্য কারণে একে অন্যের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। চট্টগ্রামে মাঝে মাঝে যখন দেখি আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের শত্রু কষ্ট লাগে, দুঃখ পাই। "এই চট্টগ্রামে মাঝে মাঝে যে কলহ দেখি এটাই চট্টগ্রামের বড় দুর্বলতা। নেত্রী শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে।" তিনি বলেন, "যারা অন্তর্কলহ করবে, অপকর্ম করবে, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, ভূমি দখল, মাদক ব্যবসা করবে সেসব অপকর্মকারীদের স্থান আওয়ামী লীগে নেই। গুটিকয়েক খারাপ লোকের জন্য গোটা আওয়ামী লীগ বদনামের ভাগিদার হবে না। গোটা আওয়ামী লীগের ভালো লোকদের ত্যাগ বৃথা যেতে পারে না।" ওবায়দুল কাদের বলেন, "খারাপ আচরণ উন্নয়নকে ম্স্নান করে দিতে পারে। আমরা পরিবর্তন চাই শিকড়ের সাথে যুক্ত যে পরিবর্তন। সে পরিবর্তন চাই না যেটা আওয়ামী লীগের আদর্শের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন।" "ট্র্যাডিশন চাই, সেটা হচ্ছে সিনিয়র জুনিয়রকে স্নেহ করবে, জুনিয়র সিনিয়রকে সম্মান করবে। এখানে আমরা ডিজিটাল চাই না। আওয়ামী লীগে গণতন্ত্র অক্ষুণ্ন রাখতে হবে, সেটাই ট্র্যাডিশন। মানুষের মাঝে থেকেই পরিবর্তনের ধারা এগিয়ে নিতে হবে।" প্রয়াত নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, "শুধু ব্যবসা করলে তিনি দেশের এক নম্বর ধনী হতেন। কিন্তু রাজনীতিকে তিনি মানি মেকিং মেশিন করেননি। আজ অনেকে রাজনীতিকে কেনাবেচার পণ্য মনে করে।" "জনগণকে তিনি ভালোবাসতেন বলেই তার প্রতি জনগণের ভালোবাসা আজও দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। চট্টগ্রামের সমার্থক হয়ে গিয়েছিল দুই নাম- বাবু ভাই ও মহিউদ্দিন চৌধুরী।" বাবুর আদর্শ অনুসরণের আহ্বান সভায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর দল যখন মহাবিপর্যয়ে তখন সব চক্রান্ত উপেক্ষা করে যারা চট্টগ্রামের মাটিতে দলের রাজনীতি করেছেন, স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের একজন আখতারুজ্জামান বাবু। দলের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, "তিনি রাজনীতিকে ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। অনেক বিত্ত-বৈভবের মালিক রাজনীতিতে এসে রাজনীতিকে ক্রয় করতে চায়। যারা রাজনীতিকে অর্থ দিয়ে কিনতে চান তাদের বলব বাবু ভাইয়ের কাছ থেকে শেখার জন্য, যার অর্থ-বিত্ত থাকার পরও রাজনীতিকে কেনার চেষ্টা করেননি। তিনি বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে কখনও বেঈমানি করেননি।" শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, "ওয়ান ইলেভেনের পর দুঃসময়ে যখন অনেক বড় বড় নেতা আস্থার সংকটে ভুগছিলেন তখন তিনি (আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু) আস্থা হারাননি। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে অনেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্টের লোভে পড়েছিলেন তখন আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু দল ছেড়ে যাননি বরং নিজের সর্বস্ব ঢেলে দিয়ে দলের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপস্নব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী, উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, নোমান আল মাহমুদ, আবুল কালাম আজাদ, শাহজাদা মহিউদ্দিন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, মোতাহারুল ইসলাম চৌধুরী।