বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আইনে কিডনি প্রতিস্থাপনের সুব্যবস্থা নেই: জাফরুলস্নাহ

যাযাদি রিপোর্ট
  ২১ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুলস্নাহ চৌধুরী -যাযাদি

২০১৮ সালের সংশোধিত 'মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯' এ কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়ে কোনো সুব্যবস্থা নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুলস্নাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, কেউ যদি তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিক্রি করার অধিকার রাখে তাহলে সুস্থ-সবল মানুষেরা দুটো কিডনি থেকে একটি দান বা বিক্রি করে দেওয়ার অধিকার রাখে। এজন্য কিডনি দাতা ও গ্রহীতার কোনো সমস্যা হয় না। তবে সংশোধিত আইনে কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়ে কোনো সুব্যবস্থা নেই। বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুলস্নাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন। '২০১৮ সালের সংশোধিত মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ১৯৯৯-এর অসম্পূর্ণতা ও সমস্যা সম্পর্কে অবহিতকরণে'র উদ্দেশ্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল। ডা. জাফরুলস্নাহ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১০ হাজার মানুষের কিডনি পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। এটা বড় কোনো অপারেশন নয়। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মানুষ কিডনি প্রতিস্থাপন করে। কিডনি প্রতিস্থাপনের বিপরীতে যে চিকিৎসাটি রয়েছে সেটা হলো ডায়ালাইসিস, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। 'এতে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি টাকা খরচ হয়। অথচ আমাদের দেশে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি দরিদ্র মানুষ। যাদের এত টাকা খরচ করার সামর্থ্য নেই। এক্ষেত্রে যদি প্রতিস্থাপনের দিকে যাওয়া হয় তাহলে দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচ হয় মাত্র দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা।' তিনি বলেন, প্রতিস্থাপনের এক বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে দুই হাজার টাকার ওষুধের প্রয়োজন হয়। আর যদি ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতি বাস্তবায়ন করা হয় তাহলে ওষুধের দাম হবে মাত্র ৫০০ টাকা। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুলস্নাহ চৌধুরী বলেন, 'কিডনি দানে আসলে আমাদের আরেকটা বাধা হলো ধর্মীয় গোঁড়ামি। মৃত মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নেওয়া এজন্য সম্ভব হয় না। যদিও জীবিতদের কিডনি বেশি কার্যকর। কিন্তু ইরানের মতো মুসলিম দেশে কিন্তু সবচেয়ে বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন হয়। আর কিডনি দান করার পর দাতা গ্রহীতা বড় কোনো রোগে আক্রান্ত না হলে বেঁচে থাকতে কোনো সমস্যা হয় না। ৯৫ শতাংশ কিডনি প্রতিস্থাপন সফল হয়ে থাকে।' আগামী বছর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানিয়ে ডা. জাফরুলস্নাহ চৌধুরী বলেন, 'আমাদের এখানে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হলে গরিবদের খরচ হবে দেড় লাখ এবং ধনীদের জন্য আড়াই লাখ টাকা লাগবে। তাছাড়া কৃত্রিম কিডনি (মেশিন) বাংলাদেশে সহজলভ্য হতে আরো ১০ বছর লেগে যেতে পারে। আর বর্তমানে প্রায় ১০ জন সার্জন রয়েছেন দেশে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে