কৃষকের বাজার উদ্বোধনকালে কৃষিমন্ত্রী

চালের চেয়ে পেঁয়াজ নিয়ে সরকার বেশি উদ্বিগ্ন

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো দরকার নেই। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল রয়েছে। চাল নিয়ে কারও উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:১১

অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ের সেচ ভবনে শুক্রবার কৃষকদের বাজারজাত করা সবজির হাট পরিদর্শন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক -যাযাদি

যাযাদি রিপোর্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলে চাল নিয়ে চিন্তার কারণ আছে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার কারণে চালের উৎপাদন যথেষ্ট। কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো দরকার নেই। অপরিপক্ব অবস্থায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ের সেচ ভবনে কৃষকদের বাজারজাত করা সবজির হাট 'কৃষকের বাজার'-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো দরকার নেই। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল রয়েছে। চাল নিয়ে কারও উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। চালের বাজার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। পেঁয়াজের বিষয় উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'নতুন পেঁয়াজ এখনো পরিপক্ব হয় নাই। নির্দিষ্ট সময়ের আগে উত্তোলন করলে তাতে পচন ধরে যাবে। পেঁয়াজ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা করছে। আমরা ভেবেছিলাম ভারত থেকে পেঁয়াজ আসবে, কিন্তু পেঁয়াজ আরও আমদানি করতে হয়েছে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় এই পেঁয়াজ বিপর্যয় হয়েছে। বর্তমানে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য।' 'চালের বাজার নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। চিন্তা হতে পারে যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়। এখন আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন, কৃষক যাতে তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায়। খামারে যারা কৃষিকাজ করে তারা যেন সঠিক মূল্য পায়, এটিও আমাদের দেখতে হবে। এক মণ ধান করতে লাগে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। সেটা যদি ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়, কৃষকরা করবে? করবে না। এবার ৭০০ টাকা হয়েছে এটা আমাদের জন্য, বাংলার লাখ লাখ কৃষকের জন্য। তাদের ন্যায্যমূল্য দিতে হবে।' বাজারে মোটা চালের চাহিদা নেই কেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, 'মোটা চাল বিক্রি করতে পারি না আমরা। ওএমএসের গাড়ি যায়, তারা চাল বিক্রি করতে পারে না, ডিলাররা এক টনও চাল তুলছে না। কোনো গ্রাহক নাই। মোটা চাল খারাপ তো কিছু না। পুষ্টির দিক দিয়ে ভালো।' এদিকে বাজারে পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে কৃষক পর্যায়ে ছোট ছোট পেঁয়াজ উঠিয়ে ফেলায় সরকার উদ্বিগ্ন বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, পেঁয়াজ এখনো বড় হয়নি। আরও অনেক বড় হওয়া দরকার। আমরা এটা নিয়ে শঙ্কিত আছি। সব ছোট ছোট পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছে। জানুয়ারি মাসে কী উপায় হবে? পেঁয়াজের উৎপাদন তো কমে যাবে। এ বছর পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় আগামী বছর দেশে অনেক বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। এতে করে পরবর্তী বছর কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পাবে কি-না তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, যখন দেশে পেঁয়াজ উত্তোলন করা হয় তখন বিদেশি পেঁয়াজের আমদানির কারণে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারে না আমাদের কৃষকরা। তাই আমরা পেঁয়াজের মৌসুমে তা আমদানি বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। মন্ত্রী বলেন, চালের বাজার বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করার কোনো দরকার নাই। দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল রয়েছে এবং চাল নিয়ে কারও উদ্বেগ প্রকাশ করার কোনো কারণ নাই। বাংলাদেশের এখন ৫০ ভাগ মানুষের জীবিকা আসে কৃষি থেকে। আর এজন্য তাদের নায্যমূল্য দিতে হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে 'কৃষকের বাজার' উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, এফএও বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ড. সিম্পসন প্রমুখ।