শপথবাক্য পাঠের মাধ্যমে 'পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধ' শুরু

প্রকাশ | ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ পস্নাজায় শুক্রবার পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধ ঘোষণা করে শপথবাক্য পাঠ করান গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম -যাযাদি
যাযাদি রিপোর্ট শপথবাক্য পাঠের মধ্য দিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশ পরিচ্ছন্ন রাখার 'পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধ' ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ পস্নাজায় আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে এই যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এ সময় পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, মন্ত্রী, মেয়র, চিত্রনায়ক-নায়িকা ও বাংলাদেশ স্কাউটস সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে স্কাউট সদস্যদের হাতে এই 'পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধ'র দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। এর আগে গতকাল ভোর থেকে সংসদ ভবনের এই দক্ষিণ পস্নাজা পরিচ্ছন্ন করতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে অংশ নেন চিত্রনায়ক রিয়াজ, স্কাউট সদস্যরা। এরপর সকাল ৯টার দিকে শপথবাক্য পাঠ করান গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, চিত্রনায়ক রিয়াজ, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও স্কাউট সদস্যরা। শপথ পাঠে বলা হয়, 'আমি শপথ করছি যে, যেখানে-সেখানে আর কোনোদিন ময়লা-আবর্জনা ফেলব না। বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে দেশ স্বাধীন করে আমাদের উপহার দিয়েছেন, সেই দেশ পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব আজ থেকে আমি নিলাম। ঘোষণা করলাম, পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধ। এবারের অঙ্গীকার, পরিচ্ছন্ন সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার।' শপথবাক্য পাঠের পর স্কাউট সদস্য হারুন বলেন, 'এখানে এসে সুন্দরভাবে পথ চলার দিক-নির্দেশনা পেলাম। সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় খুঁজে পেলাম। আমরা চেষ্টা করব, আমাদের দায়িত্বগুলো সুন্দরভাবে পালন করার।' এই পরিচ্ছন্নতা যুদ্ধের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছেন। আমি যদি একটি যুদ্ধ করতে পারতাম! আমাদের নতুন প্রজন্ম যদি একটি যুদ্ধ করতে পারত! আজ সেই সুযোগ এসেছে। আমাদের পরিচ্ছন্ন সোনার বাংলা গড়ার যে যুদ্ধ, আমরা সবাই মিলে আজকে থেকে সেই যুদ্ধে একসঙ্গে শামিল হব। সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।' সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু বলেন, 'আমাদের পরিষ্কার যে শহরটা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, কারা এর নেপথ্যে আছে? সেই নেপথ্যের কারিগর কারা? নেপথ্যের নায়ক-নায়িকা কারা? তারা সেই আমাদের পরিচ্ছন্নকর্মীরা। মধ্য রাতে তারা মাঠে আসে। ভোর পর্যন্ত কাজ করে তারা নগরীকে বসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করেন। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই।' মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, 'পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দেশটাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে চাই। যারা এই পরিচ্ছন্নতায় জড়িত, আপনারা সবাই, আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। আমরা সবাই মিলে সারাদেশকে পরিচ্ছন্ন করার যুদ্ধে আছি।' তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ ছিল অন্যায়, অবিচার, বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। সেই যুদ্ধ এখনও চলমান। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বাংলাদেশকে আমরা স্বাধীন করেছি। কিন্তু অন্যান্য কিছু পরাধীনতা আছে, সেখান থেকে কিন্তু এখনও মুক্তি আসেনি।' কী সেই পরাধীনতা, তা তুলে ধরে রেজাউল করিম বলেন, 'সেই পরাধীনতা হলো অনৈতিকতার সঙ্গে যারা জড়িত, দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত, সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, ইভটিজিংয়ের সঙ্গে জড়িত, ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত, খারাপ কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ কিন্তু চলমান।' তিনি বলেন, 'বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা। তারা পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। তারা নীতি-নৈতিকতাপূর্ণ বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। তারা ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান দূর করার বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। তারা বাংলাদেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্যের লালন, চর্চা ধারণের বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। আজকে সেই মুক্তিযোদ্ধাদের হাত থেকে সেই পরিচ্ছন্নতার যুদ্ধ সূচিত হতে যাচ্ছে। যারা পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আপনাদের সকলকে নিয়ে।'