রাস্তার বেহাল দশায় গাড়ির গস্নাস খুলতে পারি না: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ | ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৩১

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার আয়োজিত সেমিনারে বক্তৃতা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল -যাযাদি

রাস্তার অবস্থা এত খারাপ যে এলাকায় গাড়ির গস্নাস খুলতে পারেন না বলে না মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, 'রাস্তায় অবস্থা এতই খারাপ যে আমার এলাকায় যদি যান রাস্তা দেখে কান্না আসবে। মানুষ আমাকে প্রতিদিন গালি দেয়। আমি গস্নাস নামাতে পারি না। গস্নাস বন্ধ করে যাওয়ার চেষ্টা করি। তাও যেতে পারি না। এই হলো আমাদের অবস্থা।' বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত 'মহাসড়কের লাইফটাইম : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব ক্ষোভে কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কথায় কথায় রাস্তা নষ্ট হওয়ার জন্য নদীমাতৃক দেশ হওয়ার উদাহরণ টানেন। এসব আর কখনও বলবেন না। এটা ঠিক নয়। এগুলো কাকে বোঝাচ্ছেন? নিজেরা কাজ করতে পারবেন না বা করেন না কিংবা বোঝেন না, না হয় করেন না; দুটোর একটা। করতে চাইলেই করা যায়। তিনি আরও বলেন, 'ইংল্যান্ড, শ্রীলংকায় কোথায় পাহাড়-পর্বত নাই। আমরা তো মহাসাগর বিস্তৃত দেশেও দেখি। তারাও তো রাস্তা করে, সেখানে রাস্তার লাইফটাইম ৫০ বছর। তাহলে আমরা কেন পারব না।' মুস্তফা কামাল বলেন, 'কারণটা কী? আমরা কী অন্যায় করেছি? ইংল্যান্ডের একটি এক নম্বর কোম্পানি নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু তাদের কাজ করতে দেয়া হয়নি। কেন দেয়া হয়নি তা আমরা জানি। ওই কোম্পানি রাস্তাঘাট তৈরি করতে তিনটা গাড়ি ব্যবহার করে। তিনটি গাড়ি মিলে চোখের নিমিষেই ১ কিলোমিটার রাস্তা করে ফেলে।' তিনি বলেন, এসব রাস্তার লাইফটাইম হচ্ছে ৫০ বছর। তৈরির প্রথম দশ বছর কিছুই করা লাগবে না। দশ বছর পর ৫ শতাংশ এগ্রি গ্যাস মেশাবে, এর ফলে আরও দশ বছর চলবে। এভাবে প্রতি ১০ বছর পর পর এগ্রি গ্যাস মেশালেই এর লাইফটাইম ৫০ বছর হবে। কামাল বলেন, 'আমাদের দেশে এগ্রি গ্যাস জীবন ব্যবহার করতে দেখিনি। এগ্রি গ্যাস কী জিনিস সেটিও আমাদের দেশীয় কোম্পানিগুলো জানে কিনা সন্দেহ। সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, কার্যক্রমে গুণগত মান আনতে হলে অবশ্যই আপনাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি বলেন, অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই, তার পরও শুধু তারাই কাজ পায়। এদের কারণে বিদেশি ভালো প্রতিষ্ঠানও কাজ পায় না।' সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন, লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকৌশলী এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করিম।