প্রস্তুত কামারশালার লোহা শিল্পীরা

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নগরীর কামারশালাগুলো। এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে কঁাচামাল হিসেবে ব্যবহৃত কঁাচা-পাকা লোহা বা ইস্পাতের। এসেছে বস্তায় করে ভালোমানের কয়লাও। যদিও এখনো জমেনি বিকিকিনির হিসাব। তবে চিন্তার কোনো বালাই নেই এতে। দুই-তিন দিন বাদেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকবে বলে ধারণা লোহা শিল্পীদের। প্রায় দুই কোটি নাগরিকের এই মেগা সিটির প্রধান লোহা-লক্কড়ের তৈরি তৈজসপত্র ও দা-বটির বাজার পুরান ঢাকায়। এরপরই ঠঁাঠারি বাজার, কাপ্তান বাজার, মীর হাজারীবাগ, পোস্তগোলা, শনির অঁাখড়া, আজমপুর, নিউমাকের্ট, মেরুল বাড্ডা, রামপুরা, কারওয়ান বাজার, নদ্দা, মিরপুর, আব্দুল্লাহপুরে রয়েছে কামারশালা ও নিত্যব্যবহাযর্ এইসব পণ্যের দোকান। বছরজুড়ে তেমন কোনো খেঁাজ-খবর না থাকলেও কোরবানির ঈদ এলেই ব্যস্ততা বাড়ে কামারশালার। দূর থেকেই শোনা যায় কামারপট্টিতে হাতুড়ি পেটানোর শব্দ। নতুন চাপাতি, বটি, ছুরি, চাকু তৈরি ও পুরনোগুলোতে শান দিতে সময় কাটে কামারশিল্পীদের। আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এমনই কমর্যজ্ঞে এখন ব্যস্ত শহরের কামারশালাগুলো। বুধবার কারওয়ানবাজারসহ কয়েকটি কামারপট্টি সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার যন্ত্রপাতি তৈরিতে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়েছে কামারশিল্পীদের। ঈদের বিক্রি এখনও তেমন শুরু না হলেও যন্ত্রপাতি তৈরিতে কারও যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। কামারশালার লোকজন বলছেন, আগের মতো তাদের পণ্যের চাহিদা নেই। ঘর-গৃহস্থালিতে কমর্জীবী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ভিনদেশি স্টেইনলেস স্টিলের ছুরি, কঁাচি ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। কমর্জীবী নারীদের ব্যাক পেইন কমাতে চিকিৎসকরা যে বটি ব্যবহারে অনুৎসাহিত করে ছুরি ব্যবহারের পরামশর্ দেন-তাও আজ অজানা নেই লোহা শিল্পীদের। তাছাড়া একটা জিনিস কিনলেও তো পরের বছর কিনতে হয় না, তাই ব্যবসায় একটা মন্দা ভাব এসেছে বলে জানালেন তারা। তবে কামারপট্টির লোকদের ভাষ্য, বছরে অন্তত একবার জমজমাট ব্যবসা করেন তারা। তা হচ্ছে তা এই কোরবানির ঈদে। এজন্য ভোর থেকে শুরু করে মধ্যরাত পযর্ন্ত চলে কয়লার আগুনে রড গলানো, গেøয়ারিং মেশিনে বটি, দা, কুড়াল, চাকু ও ছুরিতে শান দেয়া। আর হঁাতুড়ি দিয়ে লোহা পিটিয়ে পাইল করা, যন্ত্রপাতিতে বাট লাগানোসহ নানা কাজের ব্যস্ততা। কারওয়ান বাজারের কামারপট্টিতে দীঘর্ ৪০ বছর ধরে ব্যবসা করছেন সুবির কমর্কার। কয়লার আগুনে লোহা পোড়াতে পোড়াতেই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি। বলেন, ‘সারা বছর মোটামুটি হলেও ঈদের কয়েকদিন খুব ভালো বেচা-বিক্রি হয়। ঈদ এলে আমাদের ব্যস্ততাও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এবারের ঈদের বেচা-বিক্রি তেমন শুরু হয়নি। শুধু ঢাকার বাইরে থেকে অডার্র আসছে। যন্ত্রপাতি তৈরি করে রাখছি। আশা করি ২/৩ দিনের পর ভালো বিক্রি হবে।’