দক্ষিণে বর্জ ব্যবস্থাপনায় রোড সুইপার

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর একটি সড়কে রোড সুইপার -ফাইল ছবি
নতুন যুক্ত হওয়া ১৮ ওয়ার্ডের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ইউরোপিয়ান মানের ৯টি অত্যাধুনিক 'মেকানিক্যাল রোড সুইপার' কেনার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বর্তমানে রোড সুইপার নেই। তিনটি ছিল বর্তমানে এগুলো বিকল হয়ে পড়ে আছে। ঢাকার সড়কে ময়লায় ৯৭ শতাংশই বালু। সড়কে জলাবদ্ধতার পেছনে অন্যতম কারণ ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া। আর এর জন্য দায়ী বালু জমে যাওয়া। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আছেন, তবে তাদের মাধ্যমে ঝাড়ু দিয়ে এই বালু ঠিকভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। সেজন্য নগরকে পরিচ্ছন্ন করতে এই অত্যাধুনিক যন্ত্র নামানোর উদ্যোগ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় যুক্ত হওয়া নতুন ওয়ার্ডে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাযর্ক্রমের অবস্থাও বেহাল। এসব এলাকায় নামানো হবে ইউরোপিয়ান মানের রোড সুইপার। ইউরোপিয়ান মানের বা ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে যে মানের রোড সুইপার ব্যবহার করা হয় নতুন ১৮টি ওয়ার্ডেও একই মানের রোড সুইপার ব্যবহার করা হবে। দুইটি ওয়ার্ডের জন্য একটি রোড সুইপার ব্যবহার করা হবে। এই জন্য নয়টি রোড সুইপার কিনতে ৫৪ কোটি টাকা খরচ করা হবে। ফলে প্রতিটা রোড সুইপার কেনা বাবদ প্রস্তাবিত ব্যয় ৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া ৯০০টি ডাস্টবিন কিনতে ৯০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্যই আসছে রোড সুইপার। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সরঞ্জাম কেনা হবে। 'ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নতুন অন্তর্ভুক্ত ১৮টি নতুন ওয়ার্ডে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য যান-যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও অবকাঠামো উন্নয়ন' প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ৬১৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। তবে রোড সুইপার তার আগেই কেনা হবে। ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুইটি বড় জেড অ্যান্ড সাকার ও ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ছোট জেড অ্যান্ড সাকার কেনা হবে। ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর জাহিদ হোসেন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের জন্য ৯টি রোড সুইপার কেনা হবে। এগুলো ইউরোপিয়ান মানের হবে। নতুন এলাকার স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখা, মাটি, পানি ও বায়ুদূষণের মাত্রা কমানোর জন্যই এমন উদ্যোগ। বর্জ্য পরিবহণ ও অপসারণের লক্ষ্যে পরিবহণ ভেহিকেল এবং আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে নতুন উদ্যোগে নতুন যুক্ত হওয়া এলাকায় পুরোদমে কাজ করতে পারব। ডিএসসিসির নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ড ইউনিয়ন পরিষদ থাকাকালীন সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম গড়ে ওঠেনি। সংস্থাটির আওতাভুক্ত হওয়ার পর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেবা দেওয়া সিটি করপোরেশনের অন্যতম দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংস্থাটির জনবল স্বল্পতার কারণে ও প্রয়োজনীয় গাড়ি না থাকায় নিজস্ব অর্থায়নে নতুন অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ডগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেবা দিতে সক্ষম হচ্ছে না ডিএসসিসি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অনেক কাজের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্তির পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনর ৫টি জোন ও ৫৭টি ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এসব এলাকার মোট জনসংখ্যা ৩৯ লাখ ৫৭ হাজার ৩০২ জন। এ ছাড়া ঢাকা শহরে ফ্লোটিং বা ভাসমান জনসংখ্যা মোট সংখ্যার ২০ শতাংশ বলে ধরা হয়। এই হিসাবে মোট ভাসমান লোকের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৮ জন। অতি সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়তন বেড়েছে। নতুন ৮টি ওয়ার্ড ও ৫টি জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। নতুন এলাকার আয়তন ৬৪ দশমিক ১৭ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ১০ লাখ ৫৫ হাজার।