পানি রপ্তানি করবে বাংলাদেশ

প্রকাশ | ২০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ড. শামসুল আলম
শতবর্ষব্যাপী ডেল্টা পস্ন্যানের পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারলে এ শতাব্দীর শেষে বাংলাদেশ পানি রপ্তানি করতে পারবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম। রোববার রাজধানীর বিজ মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ ও অস্ট্রেলিয়ার কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে 'ঢাকা মেগাসিটির উষ্ণায়ন প্রশমন কৌশল : টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োগ' শীর্ষক সেমিনারে এ কথা জানান তিনি। শামসুল আলম বলেন, 'আমাদের ছাদে বাগান করা হচ্ছে। কিন্তু এসব বাগানের গাছগুলো কতোটা পরিবেশবান্ধব সেটা দেখার বিষয় আছে। এটা নিয়ে ভাবতে হবে। আবার ছাদে যে বাগান করা হচ্ছে, তাতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিচের পানি।' তিনি আরও বলেন, 'এমনিতে পানি ভূপৃষ্ঠ থেকে আরও গভীরে চলে যাচ্ছে। আবার ছাদে বাগান করে সে পানি বেশি বেশি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা হাঁটতে বের হতো, কিন্তু ছাদে বাগান করার ফলে সেটাও বন্ধ হচ্ছে।' শামসুল আলম বলেন, 'আমাদের হাওর এলাকায় বজ্রপাত বেশি হচ্ছে। অনেক প্রাণহানি ঘটছে। দেখতে হবে কেন সেসব এলাকায় বজ্রপাত হচ্ছে এবং এর করণীয় কী। ডেল্টা পস্ন্যানের পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারলে এ শতাব্দীর শেষে আমরা পানি রপ্তানি করতে পারব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফ্রেশ পানির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।' সেমিনারে বক্তারা বলেন, 'ঢাকা শহরের তাপমাত্রা দেশের বাংলাদেশ ভবিষ্যতকে সামনে রেখে ২০১৮ সালে ডেল্টা পস্ন্যান বা বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ হাতে নেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করার পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষিত রেখে উন্নয়নের ধারাবহিকতায় কি কি করণীয় তা রয়েছে এই পরিকল্পনায়। এর মধ্যে বন্যা, নদীভাঙন, নদী শাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশলও নির্ধারণ করা হয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, 'ভারতের গুজরাটে বাড়িতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা বাধ্যতামূলক। এমনটা ঢাকাতেও করা উচিৎ।' সেমিনারে 'মিটিগেশন স্ট্রাটেজিজ ফর আরবান মাইক্রো ক্লাইমেট অব ঢাকা মেগাসিটি টু রিডিউস অ্যাডভার্স ক্রাইমেট চেঞ্জ ইমপ্যাক্ট' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড পস্ন্যানেটারি সায়েন্সের অধ্যাপক আশারাফ দেওয়ান এবং বিজের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির। অন্যদের মধ্যে বিজের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এম. ফজলুল করিম, কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইকনোমিক্স, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রোপার্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল সলিম সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। প্যানেল ডিসকাশনে সভাপতিত্ব করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ ডেভেলমেন্টের পরিচালক ড. সলিমুল হক। সেমিনারে বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরের তাপমাত্রা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি। এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা নগরিক জীবন এবং বাস্তুসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর টিকে থাকার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে রোগের প্রকোপও বাড়ছে। বক্তারা আরও বলেন, এছাড়া এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা মানুষের শরীর এবং মনোজগতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ফলে মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। এ সমস্যা সমাধনে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকরণ, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে অনুসরণ এবং ঘনবসতিপূণ এলাকায় যথেষ্ট পরিমান জলাশয় নিশ্চিত করাসহ কার্যকরী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।