বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্বে প্রশংসনীয়: আইনমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক -যাযাদি
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সারাবিশ্বে প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে 'ইমপিস্নমেন্টেশন অব দ্য থার্ড পেরিওডিক রিভিউ অব বাংলাদেশ' শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী। আনিসুল হক বলেন, আমাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভালো। এ বিষয়ে নতুন আরও কী করা যায়, মানবাধিকার আরও শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় কাজ করছি। সংবিধানে মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, তারপরও নতুন কিছু যোগ করা যা কিনা, সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ গত ১১ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ্বে উদাহরণ হয়েছে। দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে উলেস্নখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কেউ পিছিয়ে থাকবে না, এটিই সরকারে মূলমন্ত্র। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিংক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, যে কোনো মানবাধিকার রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর যা নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল। ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়ে মানবাধিকারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। আমি আশা করি আইসিজের ইতিবাচক রায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করবে। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ যে কোনো মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ। শুধু দেশের নাগরিক নয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের সরকার আন্তরিক। তাদের অধিকার রক্ষায়ও আমরা কাজ করছি। রোহিঙ্গা ইসু্যতে আইসিজে যে রায় দিয়েছে তা সব নির্যাতিত সব মানুষের মানবাধিকারের জয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, সরকারের প্রস্তুতি থাকলেও চীনের নিষেধাজ্ঞার কারণে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান থেকে এখনই বাংলাদেশিদের ফেরানো সম্ভব নয়। আমাদের প্রায় পাঁচশ জন ছাত্র-ছাত্রী থাকে উহানে। তাদের কেউ যদি স্বদেশে আসতে চায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য। 'আমরা সেজন্য পেস্ননও রেডি করেছি। তবে আমরা চীনা সরকারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তারা বলেছে যে, আগামী দুই সপ্তাহ বা কমপক্ষে ১৪ দিন ওদেরকে আসতে দেবে না।' নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশের আবেদনেও চীন সরকার একই রকম সাড়া দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'তাদের ওখানে পুরোপুরি শাট ডাউন, কোথাও যেতে দেয় না। কোথাও নিয়ে গেছে মার্কেটে বাজার করার জন্য, আবার নিয়ে এসেছে। তারা বলেছে, ১৪ দিন তারা কোনো দেশের লোকদের ওই এলাকা ছাড়তে দেবে না।' মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে গত বছরের শেষ দিনে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। নিউমোনিয়ার মতো লক্ষণ নিয়ে নতুন এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সপ্তাহখানেক আগে রাজ্যের সব গণপরিবহণ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেউ কেউ শহর ছেড়ে গেলেও অনেকে সেখানে কার্যত অবরুদ্ধ। তবে উহানে থাকা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য খোলা 'ওয়েবপেইজের' মাধ্যমে ২৪৫ জনের সঙ্গে 'সার্বক্ষণিক আলাপ-আলোচনা' চলছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চীন সফরের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চীন ও আশেপাশের দেশ থেকে আগতদের বিষয়ে বাংলাদেশ সতর্ক রয়েছে।