ঈদ মৌসুমে অবৈধ মোবাইলের বিরুদ্ধে অভিযানের আহ্বান

প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
অবৈধ পথে আসা মোবাইল ফোন দেশীয় উৎপাদন শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করছে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ)। এ অবস্থায় ঈদ মৌসুমের আগে ঘনঘন অভিযান চালানোর জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) অনুরোধ করেছে সংগঠনটি। বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএমপিআইএ জানায়, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৬ সালে দেশেই মোবাইল ফোন কারখানা করার জন্য নির্দেশনা দেয়। সরকারের এ যুগান্তকারী পদক্ষেপের ফলে প্রায় সব প্রধান প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের কারখানা গড়ে তুলেছে। এতে একদিকে যেমন আমদানিনির্ভরতা কমেছে, অন্যদিকে দেশে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগও বাড়ছে। এরই মধ্যে দেশে ৯টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ফোন উৎপাদনের উদ্দেশ্যে কারখানা গড়ে তুলেছে এবং আরও কিছু প্রতিষ্ঠান কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। দেশের চাহিদার প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মোবাইল ফোন এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে বলে জানায় বিএমপিআইএ। কিন্তু অবৈধ পথে আসা মোবাইল ফোন দেশীয় উৎপাদন শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করে বিএমপিআইএ। সংগঠনটির মতে, দেশের মোবাইল ফোন বাজারের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ এখন অবৈধ পথে আমদানি হওয়া ব্যবসার দখলে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্মার্টফোন আমদানির ওপর সরকার টোটাল ট্যাক্স ইনসিডেন্ট বা টিটিআই ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৭ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ফলে মোবাইল ফোনের দাম বেড়েছে। এই কারণেও গত কয়েক বছরের চেয়ে গত বছর আরও বেশি বেড়ে গেছে অবৈধ মোবাইল ফোনের বাজার। অবৈধ পথে আসা মোবাইল ফোনের কারণে প্রথমত ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জানিয়ে সংগঠনটি বলছে, নন-ওয়ারেন্টি পণ্য কিনে তারা প্রতারিত হচ্ছেন। ওয়ারেন্টি ছাড়া অবৈধ ও রিফারবিশড পণ্য কেনার ফলে ভোক্তা ফোন নষ্ট হওয়ার পরে অথোরাইজড সার্ভিস পাচ্ছেন না, তাই নষ্ট ফোন সারাতে গুনতে হচ্ছে অনেক টাকা। এতে কাস্টমারের বিপুল সময় নষ্ট হচ্ছে উপরন্তু ফোনটি ঠিক হবে কিনা সেটাও নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত সরকারও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে, টাকার অঙ্গে যা আড়াই হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। তৃতীয়ত বৈধ আমদানিকারক ও দেশীয় উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ অবৈধ পথে আসা নিম্নমানের পণ্যে বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়ায় বৈধ পণ্যের বিক্রি কমে যাচ্ছে। ফলে মোবাইল কারখানার শত কোটি টাকার বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে। বিএমপিআইএ বলছে, মাঝে মাঝেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা, প্রশাসন এবংর্ যাবের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মোবাইল ফোন ধরা পড়ছে, কিন্তু তাতেও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ ফোন ব্যবসা। কারণ এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন।