নবীন সৈনিকদের ভালো গুণাবলি অর্জন করতে হবে: রাষ্ট্রপতি

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০ | আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০৯

যাযাদি ডেস্ক
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবির ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের শপথ ও প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সর্ব বিষয়ে সেরা নবীন সৈনিক মঈন উদ্দীনকে পুরস্কার প্রদান করেন -ফোকাস বাংলা

সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সোমবার সকাল ১১টায় বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সততা, আনুগত্য ও শৃঙ্খলা একটি বাহিনীর পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের ভালো গুণাবলি অর্জন করতে হবে। আজ তোমরা যারা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পরিবারভুক্ত হলে- তোমাদের চরিত্রে মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটবে এবং লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।' আবদুল হামিদ দেশ ও জাতির প্রয়োজনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে জনকল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত হতে বিজিবির নতুন সদস্যদের পরামর্শ দেন। ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর এ বাহিনীর তৃতীয় রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সীমান্ত এলাকাগুলোতে চোরাচালানের বিরুদ্ধে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে গেছেন।' তিনি ওই অনুষ্ঠানে দেয়া বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা উদ্ধৃত করে বলেন, 'আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, স্মাগলারদের কোনো জাত নাই, ধর্ম নাই, তারা মানুষ নামের নরপশু। ওরা সামান্য অর্থের লোভে এদেশের সম্পদকে বিদেশে চালান দেয়।' রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের রয়েছে দু'শত বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই দেশমাতৃকার সেবায় এই বাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছে। তিনি আরও বলেন, বিজিবি সদস্যরা দেশের অভ্যন্তরে যে কোনো দুর্যোগময় মুহূর্তে জনগণের সেবায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, 'আজ নারীরা বিভিন্ন অঙ্গনে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। আজ তোমরা দেশ মাতৃকার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃপ্ত শপথ নিয়ে সৈনিক জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তোমরা বিজিবির সার্বিক কর্মকান্ড পরিচালনায় আরও গতিশীল ভূমিকা রেখে বাহিনীর সুনাম ও সুখ্যাতি আরও বৃদ্ধি করবে।' কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি। অনুষ্ঠানে ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস স্থান অধিকারী মঈন উদ্দিন এবং অন্যান্য বিষয়ে সেরা সৈনিকদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের কমাড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওমর যাহিদ। আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সেনাবাহিনী ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি, বিজিবি সদস্য ও তাদের পরিবার, নবীন সৈনিকদের অভিভাবকরা। প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ প্যারেড কমান্ডার হিসেবে প্যারেড পরিচালনা করেন ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের অফিসার ইনচার্জ মেজর কাজী মনজুরুল ইসলাম এবং প্যারেড অ্যাডজুটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক বেগ আব্দুলস্নাহ আল মাসুম। ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে শুরু হয়। এ ব্যাচে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে মোট ৫৪৪ জন রিক্রুটের ৪৯৫ জন পুরুষ এবং ৪৯ জন নারী রিক্রুট ছিলেন।