এসি বাসের ভাড়াতেই চড়া যাবে মেট্রোরেলে

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দ্রম্নত গতিতে এগোচ্ছে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ -ফাইল ছবি
মেট্রোরেলের ভাড়া এখনও ঠিক হয়নি। তবে উত্তরা থেকে মতিঝিল এসি বাসে যত ভাড়া তার থেকে একটু বেশি রাখা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ-ঢাকা ম্যাসর্ যাপিড ট্রানজিট (ডিএমটিসিএল)। আর মেট্রোরেল স্টেশনে ই-সাইকেল রাখা থাকবে। যা ব্যবহার করে স্টেশনের আশপাশে যাতায়াত করা যাবে। গাড়ি রেখে মেট্রোতে ওঠার জন্য যথেষ্ট পার্কিং রাখা হবে। আর রাতে স্টেশন বন্ধ হওয়ার পর গাড়ি থাকলে জরিমানা গুনতে হবে। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু হবে আগামী বছরের ডিসেম্বরে। এজন্য এরই মধ্যে ৯ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ শেষ হয়েছে। পিলার তুলে রাখা আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে ২০ ফেব্রম্নয়ারি থেকে স্প্যান উঠানো শুরু হয়েছে। ডিএমটিসিএল এমডি এম এ এন ছিদ্দিক জানান, ফার্মগেট থেকে স্প্যান উঠিয়ে বাকি অংশের উড়াল সড়কপথ নির্মাণ শুরু হচ্ছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে মানুষ মেট্রোতে উঠবে সেই লক্ষে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠার বিষয়ে ধারণা দিতে একটি ইনফেরশন সেন্টার নির্মাণের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। উত্তরা দিয়াবাড়িতে এই সেন্টারে একটি হুবহু কোচ রাখা থাকবে। মিতসুবিসি ও কাওয়াসিকির তৈরি সেই কোচ জাপান থেকে এনে এখন উত্তরায় কন্টেইনারের ভেতরে রাখা হয়েছে। মেট্রোরেল এমডি জানান, ভাড়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি কমিটি কাজ করার কথা। তারা এখনও কাজ শুরু করেনি। তবে ভাড়ার ধারণা দিয়ে তিনি বলেন, এটি এসি বাসের ভাড়ার চেয়ে একটু বেশি হবে। তবে খুব বেশি নয়। আর মেট্রোরেল স্টেশনে ই-সাইকেল রাখার চিন্তা-ভাবনা করছে কর্তৃপক্ষ। যেমনটা জো-বাইক নামে মিরপুর ডিওএইচএস ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আছে। এসব সাইকেলে জিপিএস লাগানো থাকবে। মোবাইলের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। মেট্রোরেল সূত্র জানায়, মেট্রোরেলে দুই ধরনের টিকিট থাকবে। স্মার্ট কার্ড আর একদিনের কার্ড। অন্যান্য দেশে পর্যটকরা সারাদিনের ভ্রমণের জন্য যে কার্ড ব্যবহার করেন সে রকম। আর স্টেশনে টিকিট বিক্রির মেশিন থেকে গন্তব্যস্থান প্রেস করে টিকিট কিনতে পারবেন। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানায়, স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি কাঠামোর প্রথম মেট্রোরেল পতাকার রঙে রাঙানো থাকবে। চলবে ফজরের আজানের পর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। ১৭টি স্টেশনে থামবে এটি। প্রতি চার মিনিট অন্তর অন্তর ট্রেন আসা-যাওয়া করতে থাকবে। ২১ কিলোমিটারে চলবে মোট ২৪ সেট ট্রেন। প্রতিটি সেটে থাকবে ৬টি করে কোচ। এর মধ্যে একটি কোচ শুধুমাত্র নারী ও শিশুদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক সারোয়ার জাহান বলেন, মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে একটা বড় বিষয় হবে কানেক্টিভিটি। অর্থাৎ বাসা থেকে মেট্রোতে উঠতে যদি আরেকটি পরিবহণের দরকার হয় বা মেট্রো রেল স্টেশনে যাওয়ার পথ সুশৃঙ্খল না থাকে তাহলে এই প্রকল্প সফলতা বয়ে আনবে না। দিলিস্নর মেট্রোরেল এর উদাহরণ দিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, দিলিস্নতে মেট্রোতে চড়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় অল্প সময়ে যাওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু সেই জায়গা থেকে নেমে আবার যখন মানুষ তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে চায় তখন রাস্তাঘাটে বিড়ম্বনা তৈরি হয়। ঢাকার ক্ষেত্রেও এমন আশঙ্কা রয়ে গেছে। তাই সরকার ঢাকার ফুটপাত, রাস্তাঘাটে শৃঙ্খল এবং সম্প্রসারণে মনোযোগ না দিলে মেট্রোরেলের মতো ব্যয়বহুল গণপরিবহণ ব্যবস্থায় সফলতা প্রত্যাশা করা উচিত নয় বলেও মনে করেন সারোয়ার জাহান।