করোনা আতঙ্কে কমেছে মার্কেটের বেচা-কেনা

প্রকাশ | ১৪ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে রাজধানীর শপিংমলগুলোতেও। জনসমাগম এড়াতে কেনাকাটা করতে যাচ্ছেন না ক্রেতারা। মার্কেটে ক্রেতাদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তাই অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে বিক্রেতা-কর্মচারীদের। ছবিটি শুক্রবার মিরপুর এলাকা থেকে তোলা -যাযাদি
দেশে নতুন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী না পাওয়া গেলেও জনমনে আতঙ্ক যেন কাটছে না। এর প্রভাবে কমে গেছে জনসমাগম, গণপরিবহণে যাত্রী চলাচল। প্রায় শূন্যের কোটায় চলে এসেছে অভিবাদন জানানোর অন্যতম মাধ্যম হ্যান্ডশেক করা। বাইরে চলাচলকারীর অধিকাংশই এখন মাস্ক ব্যবহার করছেন। কমিয়ে দিয়েছেন ফুটপাতে সিগারেট বা চা পান করা। করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে শপিংমলগুলোতেও। বিক্রেতারা বলছেন, গণমাধ্যমে দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর নিউজ প্রকাশের পর অর্ধেকে কমেছে বেচা-কেনা। তবে শপিংমলে বিক্রি কমলেও ফুটপাতগুলোতে কিছুটা বেচা-কেনা হচ্ছে। তবে বিক্রি তুলনামূলক কম হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর শপিং সেন্টার, শাহ আলী মার্কেট, মুক্তবাংলা মার্কেট, কো-অপারেটিভ মার্কেট, ফরচুন শপিংমল, মৌচাক মার্কেট, আনারকলি মার্কেট, ইস্টার্ন পস্নাজা, গাজী ভবন শপিং সেন্টার, পলওয়েল মার্কেট ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে। এসব মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, একমাস আগে মার্কেটগুলোতে যেমন জনসমাগম থাকত, বিক্রেতারা ব্যস্ত থাকতেন পণ্য বিক্রিতে; এখন তার উল্টো চিত্র, মার্কেটে ক্রেতার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অর্ধেকের কমে নেমে এসেছে বেচা-কেনা। অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে দোকান মালিক ও কর্মচারীদের। দোকানিরা বলছেন, এখন ঈদের সিজন না হলেও দিনে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হয়। কোথাও আবার ৫০ থেকে লক্ষাধিক টাকার পণ্য বিক্রি হয়। তবে দেশের মধ্যে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পরপরই বেচা-কেনা কমেছে অর্ধেক। কোনো কোনো দোকানে আবার অর্ধেকের কম বিক্রি হচ্ছে। মিরপুর শপিং সেন্টারে আফসার আলী নান্টুর দু'টি দোকান রয়েছে। তার দু'টি দোকান থেকে দিনে ৭০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকার বিক্রি হতো। এখন তার দিনে বেচা-কেনার পরিমাণ ৩০ হাজার টাকার কম। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী দেশের মধ্যে পাওয়া এবং গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর থেকে ক্রেতারা আর মার্কেটেও আসছেন না। আজ (শুক্রবার) দুপুর পর্যন্ত দু'টি দোকানে তিন হাজার ৫০০ টাকার বিক্রি হয়েছে। অথচ ভ্যাট বাদেই দু'টি দোকানে দিনে খরচ চার হাজার টাকা। এমন চলতে থাকলে খরচ যোগান দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়বে। একই কথা জানান মৌচাক মার্কেটের বিক্রেতা হাজী ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, এর আগে বাচ্চারা দোকানে এলে আমরা আদর করে পছন্দের পোশাক কিনতে সহযোগিতা করতাম। এখন ক্রেতা নেই, আবার বাচ্চার শরীরে হাত দিলে অভিভাবক রাগ করছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকেই এমন হচ্ছে। তাদের মতো একই অবস্থা রয়েছে ঢাকার অন্য সব মার্কেটে। তবে ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে ফুটপাত মার্কেটে। সেখানে বিক্রির পরিমাণ সামান্য কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, মাসের শুরুতে বিক্রি ভালো হয়, মাঝামাঝি সময়ে বিক্রি কিছুটা কমে আসে। এটা করোনাভাইরাসের কারণে নয় বলে জানান তারা। পল্টন বায়তুল মোকাররম এলাকার ফুটপাত ব্যবসায়ী কালু বলেন, আমাদের বিক্রি ভালো ধরা যায়, এমনিতেই মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিক্রি কম থাকে শুরুতে বিক্রি ভালো থাকে। এটা করোনাভাইরাসের কারণে নয়।