উজানের নদী রক্ষায়ও জাতিসংঘে যাওয়া উচিত বাংলাদেশের

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
উজানের অভিন্ন নদীর ওপর নির্মিত বাঁধ, ড্যাম, ব্যারাজ অপসারণে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের লক্ষ্যে জাতিসংঘ পানি প্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষর করা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের উচিত সমুদ্রসীমা নির্ধারণ ব্যবস্থার মতো নদী রক্ষায়ও জাতিসংঘের দ্বারস্থ হওয়া। এতে পানি আগ্রাসন যেমন বন্ধ হবে, তেমনি পানিবণ্টনে ন্যায্যতার দ্বারও উন্মুক্ত হবে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের 'দূষণ ও দখলমুক্ত নদী প্রবাহ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক মো. আনেয়ার সাদতের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আনোয়ার হোসেন ও অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ও সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ তাজুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, ইতোমধ্যে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায়ে (ফেব্রম্নয়ারি ২০১৮) বলেছেন, নদী কোনো রাজ্যের একক মালিকানা নয়, অন্যকোনো রাজ্যকে বঞ্চিত করে কোনো নদীর ওপর কোনো রাজ্য একক অধিকার দাবি করতে পারে না। এ রায় অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনে শুধু ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না, যৌথ নদী কমিশনের পানি কূটনীতিকে আরও বেগবান করবে। আমরা মনে করি, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন আলোচনায় ভারতের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান এমনকি চীনকেও রাখা জরুরি। কেননা, চীন ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে। যা ভারত-বাংলাদেশ উভয়ের জন্য অশনিসংকেত। এমতাবস্থায় অভিন্ন নদীর ওপর নির্মিত বাঁধ, ড্যাম, ব্যারাজ অপসারণ ও পানিবণ্টনে ন্যায্য হিস্যা আদায়ে জাতিসংঘ পানি প্রবাহ কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করে জাতিসংঘের দ্বারস্থ হওয়া সরকারের জন্য অত্যন্ত জরুরি। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তখন তিনি প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন, দিন বদলের সনদের। আজ ১১ বছর পড়ে আমরা বলতে পারি আমাদের দিন বদলে গেছে। আজকে নদী নিয়ে কথা বলছেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক মো. আনেয়ার সাদত। বলেছেন, নদী নিয়ে কথা বললে আত্মগোপন করতে হয়। কিন্তু আজকে নদী নিয়ে কথা বললে আর আত্মগোপন করতে হয় না। এখন আত্মগোপন করছেন নদী দখলদাররা। তিনি বলেন, আজ দুইটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুইটি বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মহানন্দা ও করতোয়া নদীর কথা বলা হয়েছে। নদী রক্ষায় আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে। জাতীয় সংসদে ৩০০ এর অধিক নদীর কথা। এছাড়া আমাদের গবেষকরা বলছেন ১৭০০ এবং ১৩০০ ও ১২০০ নদীর কথা। যাহোক আমাদের যে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট আছে, সেখানে এ নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি। আসলে বাংলাদেশে গবেষণার বিষয়টি দুর্বল ছিল। এটা যেকোনো খাতেই যাই না কেন। ফলে আমাদের যেগুলো পাওয়ার কথা ছিল, তা আমরা পাইনি। বর্তমান সরকার গবেষণার দিকে অত্যন্ত মনোযোগী। এজন্য নদী গবেষণায় সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে অবশ্যই আমাদের নদীগুলো চিহ্নিত করতে হবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কাজ করছে।