আশঙ্কায় রোগী দেখা বন্ধ

বিদেশফেরত রোগীরা যাচ্ছেন বিভিন্ন প্রাইভেট চেম্বারে!

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় অনেক চিকিৎসক ইতোমধ্যে চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন আবার কেউবা নতুন রোগী দেখা বন্ধ করেছেন

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
'রোগীদের নিরাপত্তার জন্য আমার সকল চেম্বার ১৯ মার্চ থেকে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। আমি হাসপাতালে কুয়েতফেরত এক রোগী এবং প্রাইভেট চেম্বারে মিসরফেরত যাত্রীর সংস্পর্শে এসেছি। এ দুজন রোগী হোম কোয়ারেন্টিনের নিয়মকানুন পালন করেনি। তথ্য গোপন করে হাসপাতাল চেম্বার এসেছে। পুরানো রোগীরা টেলিফোনে আমার সঙ্গে পরামর্শ করতে পারবেন।' দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোগীদের সেবায় নিজের অবস্থান ও নিজ অভিজ্ঞতা জানাতে এক চিকিৎসক এভাবেই কথাগুলো বলেছেন। রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিদেশফেরত যাত্রীদের সংস্পর্শে এসে নিজেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন আশঙ্কায় হাসপাতাল ও প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু এই চিকিৎসক একাই নন, তার মতো অনেকেই এমন চিন্তাভাবনা করছেন। একাধিক চিকিৎসক আশঙ্কা করে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় তারা কেউ ইতোমধ্যে চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন আবার কেউবা নতুন রোগী দেখা বন্ধ করেছেন। তারা বলছেন, সরকারিভাবে মাত্র ১৪ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি। রোগতত্ত্ববিদরা বারবার বিদেশফেরত যাত্রীদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারিন্টনে থাকার পরামর্শ দিলেও তারা তথ্য গোপন করে বাইরে বের হচ্ছেন। জানা গেছে, বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের পরামর্শ নিতে সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারে যাচ্ছেন বিদেশফেরতরা। ফলে চিকিৎসকদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। গত ২১ জানুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৬ লাখেরও বেশি নারী-পুরুষ-শিশু দেশে ফেরেন। তাদের মধ্যে গত কয়েক দিনে হাজার হাজার প্রবাসী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশ থেকে এসেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইইডিসিআরের অত্যাধুনিক বায়োসেফটি ল্যাবরেটরিতে বিদেশফেরত যাত্রী ও তাদের সংস্পর্শে আসা গত ২১ জানুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে আইইডিসিআরের ল্যাবরেটরিতে ৩৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে ১৪ জনকে করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয় ও একজন মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের একজন চিকিৎসক জানান, হাসপাতালের মেডিসিন আউটডোরে জ্বর, হাঁচি, কাশি আক্রান্ত কোনো রোগী এলেই তারা আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছেন। অধিকাংশ রোগী সাধারণ জ্বরের হলেও তাদের মধ্যে অনেকে প্রবাসী এ তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারে রোগীর ভিড় তুলনামূলকভাবে কম। যারা এসেছেন তাদের অনেকেই আবার করোনা থেকে বাঁচতে মাক্স ব্যবহার করেছেন।