উচ্চশিক্ষায় প্রতিবন্ধকতা

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

নন্দিনী ডেস্ক
দেশে প্রাথমিক স্তর থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষায় নারীদের উপস্থিডু বেশি হলেও উচ্চ মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত এ চিত্র ভিন্ন। উচ্চ মাধ্যমিক স্তর থেকে ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে নারীরা। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান বু্যরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক স্তরে ছাত্রীর হার ৫০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, জুনিয়র স্কুলে (৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) ৫৫ দশমিক ১৪ শতাংশ, মাধ্যমিকে (নবম থেকে দশম শ্রেণি ) ৫১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এর পরই ছাত্রীদের সংখ্যা কমতে থাকে। উচ্চ মাধ্যমিকে ছাত্রীর হার (একাদশ-দ্বাদশ) ৪৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ, ডিগ্রিতে ৪১ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ৩৬ দশমিক ০৭ শতাংশ। দারিদ্র্য, উচ্চশিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত আবাসনের সুবিধা না থাকা, বিয়ে হয়ে যাওয়া- এগুলোই উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীদের ভর্তির হার বেশি হলেও নারীদের ঝরে পড়ার হারও বেশি। স্কুল, মাদ্রাসা ও ভোকেশনাল শিক্ষায় ৪০ শতাংশ ছাত্রী ঝরে পড়ছে। নারীর উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের ক্ষেত্রে এখনো অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। তবে মফস্বল এলাকার নারীদের ক্ষেত্রে এই প্রতিবন্ধকতা আরও বেশি। উচ্চশিক্ষার জন্য আবাসনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত আবাসনের সুযোগ নেই। সামাজিক নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এছাড়া, দারিদ্র্যের কারণে অনেক বাবা-মা আগে আগেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। মাধ্যমিক স্তরে মেয়েদের হার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে সব সরকারই শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত মেয়েদের পড়াশোনা এক প্রকার অবৈতনিক বলা যায়। এছাড়া, উপবৃত্তিসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এছাড়া, নারী শিক্ষার উন্নয়নে অনেক এনজিও নানা ধরনের সহযোগিতা করে থাকে। এ কারণে এই স্তরে মেয়েদের অংশগ্রহণ বেশি। কিন্তু উচ্চশিক্ষার স্তরের এত সুযোগ নেই নারীদের জন্য। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমাটা উন্নয়নশীল দেশের চিত্র। আর্থ-সামাজিক কারণে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। উচ্চশিক্ষার ব্যয় বেশি। সরকারের পক্ষ থেকে তেমন আর্থিক সহায়তা নেই এই স্তরের শিক্ষায়। পরিবারও ছেলের পেছনে শিক্ষা ব্যয় করতে বেশি আগ্রহী। মেয়েদের যাতায়াতেও সমস্যা হয়। এছাড়া, এসএসসির পর মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার এক প্রকার ঝোঁক থাকে। এ কারণে উচ্চশিক্ষায় মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বাবা-মা মনে করেন, ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সে বিয়ে দেওয়ার আদর্শ সময়- এই ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় পাঠাতে হবে। মেয়েদের উচ্চশিক্ষা দিলে তারা ছেলেদের চেয়ে ভালো করবে। সরকারের উচিত মেয়েদের শিক্ষার পেছনে ব্যয় বাড়ানো। মেয়েদের শিক্ষার সব অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করলে এ স্তরে মেয়েদের ভর্তি বাড়বে।