ডিপিএল নিয়ে আশার খবর নেই

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) অংশ নেয়া খেলোয়াড়রা -ফাইল ফটো
করোনাভাইরাসের কারণে আড়াই মাস বন্ধ দেশের ক্রিকেট কার্যক্রম। এক রাউন্ড হয়েই স্থগিত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। আবার কবে শুরু হবে অপেক্ষায় দিন গুনছেন খেলোয়াড়রা। লিগের আয়োজক ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম) তাকিয়ে সরকারি নির্দেশনার জন্য। খেলা চালুর সবুজ সংকেত পেলে ১২টি ক্লাবের সঙ্গে সভায় বসবে তারা। তার আগে লিগ নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন দেখছে না কর্তৃপক্ষ। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও এরই মধ্যে রাস্তাঘাটে মানুষজন, যানবাহন বেড়েছে খানিকটা। সব ঠিক থাকলে আজ থেকে শিথিল হচ্ছে অঘোষিত লকডাউন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া অফিস-আদালত যাচ্ছে খুলে। প্রাইভেটকার, রিকশা, সিএনজির পাশাপাশি সীমিত পরিসরে গণপরিবহণও চলবে সোমবার থেকে। সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার এ খবরে নড়েচড়ে বসেছেন ক্রিকেটার, প্রশিক্ষক ও অনুরাগীরা। তারা ভাবছেন, খুব শিগগিরই হয়তো ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট মাঠে গড়ানোর ঘোষণাও আসছে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে তেমন ঘোষণা আসার কোনো সম্ভাবনাই নেই। সিসিডিএম সচিব আলি হোসেন জানালেন, 'খেলা চালু নিয়ে সরকারি নির্দেশনা পেলেই আমরা ক্লাবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসব। তার আগে আলোচনা করে তো লাভ নেই। খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তাই আমাদের কাছে মুখ্য। আইসিসির গাইডলাইন থাকবে। ক্লাবের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।' আলী হোসেন জানান, 'আসলে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শুরুর বিষয়টি নির্ভর করছে কয়েকটি প্রক্রিয়ার ওপর। বাংলাদেশ সরকার, বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি এবং বিসিবির সবুজ সংকেত অতি জরুরি। সবার আগে দরকার ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তথা সরকারের সবুজ সংকেত। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার খেলাধুলার নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়, তার আগে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ চালুর প্রশ্নই আসে না।' 'এরপর দেখতে হবে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালুর ক্ষেত্রে আইসিসির নির্দেশনা কী? আইসিসি কীভাবে দেখছে, কী চাচ্ছে এবং ক্রিকেট মাঠে গড়াতে কী কী নির্দেশনা- সেটাও খুব জরুরি। ওই নির্দেশিকার ওপর নির্ভর করেই বিসিবি তথা সিসিডিএমের এগুতে হবে। আমরা সেই নির্দেশনা মেনেই ঠিক করতে পারব, কী করা যাবে, আর কী করা যাবে না? প্রিমিয়ার লিগ শুরুর বিষয়টি একটি সামষ্টিক ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করছে। এর সব প্রক্রিয়া ও ধাপ অতিক্রম করেই লিগ শুরুর চিন্তাভাবনা করতে পারব, তার আগে নয়।' সিসিডিএম সদস্য সচিব অবশ্য বলেছেন, 'দেশের ক্রিকেটের বৃহত্তর স্বার্থ, ক্রিকেটার ও ক্লাবের কথা ভেবে আমরাও চাই প্রিমিয়ার লিগ মাঠে গড়াক। এটা শুধু দেশের ক্রিকেটের একমাত্র পঞ্চাশ ওভারের জমজমাট আসরই নয়, অনেক ক্রিকেটারের রুটি-রুজির জায়গাও। লিগ না হলে যে ক্রিকেটারদের বড় অংশ আর্থিক দিক থেকে বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে, সেটাও আমরা জানি। তাই বিসিবি-সিসিডিএমও নীতিগতভাবে চায় লিগ হোক। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা শুরু সম্ভব না।' সরকারি পর্যায় থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলা শুরুর অনুমতি মিললেই ঢাকা লিগ মাঠে গড়াবে, ব্যাপারটা এত সরলও নয়। দুর্যোগের সময়ে সব ক্লাব খেলোয়াড়দের চুক্তির টাকা পরিশোধ করতে পারবে কি না সেটিও বিবেচ্য। তাছাড়া অনুশীলন ও ম্যাচের দিনের খরচ তো রয়েছেই। সব মেটানোর মতো আর্থিক সঙ্গতি সব ক্লাবের আছে কি না সেটি উঠে আসবে আলোচনায়। খোদ সিসিডিএম সমন্বয়ক আলী হোসেন জানালেন, আর্থিক টানাপোড়েন চলছে কয়েকটি ক্লাবের। সেক্ষেত্রে বিসিবি প্রণোদনা না দিলে হয়ত কয়েকটি ক্লাবের পক্ষে সম্ভব হবে না লিগের সমুদয় খরচ বহন করা। এ অবস্থায় লিগের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা থেকেই যায়। তাছাড়া দুই মাসেরও বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকায় জাতীয় লিগ, বিসিএল, বিপিএলের সূচিও সামনে আসতে শুরু করবে। সূচি বিপর্যয় থেকে ঘরোয়া মৌসুমকে বাঁচাতে প্রিমিয়ার লিগকে পড়তে হবে চ্যালেঞ্জের মুখে। এছাড়া শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে বর্ষা মৌসুম। বৃষ্টি মৌসুমে খেলা পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে। করোনার বিস্তার রোধে গত ১৬ মার্চ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের সব ধরনের খেলাধুলা স্থগিত করার ঘোষণা দেয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি দেশের পরিস্থিতি। বরং দিন দিন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এরপরও সীমিত পরিসরে গণপরিবহণ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল অবশ্য বলেছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে এলে মাঠে গড়াতে পারে খেলা। সে সিদ্ধান্তটা নিতে হবে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সর্বসম্মতিতে।