আঁখির স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া

প্রকাশ | ০২ জুন ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে মাঠে নেই খেলা। খেলোয়াড়রা ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছেন। এর মধ্যেই সুখবর পেলেন ৮ নারী ফুটবলার। এবার অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ১০ খেলোয়াড় পরীক্ষা দিলেও উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮ জন। এমন সাফল্যের পর আঁখি-শামসুন্নাহারদের লক্ষ্যও এখন আকাশচুম্বী। রোববার এসএসসির ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। পাস করা নারী ফুটবল দলের ৮ জন হলেন স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না, ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন, শামসুন্নাহার সিনিয়র আনাই মগিনী, ফরোয়ার্ড ঋতুপর্ণা চাকমা, সাজেদা, রেহেনা মাহফুজা। তহুরা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন বুটজয়ী ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৩.৮৩ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। খুবই খুশি আঁখির স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার, সুযোগ হলে নাম লেখাতে চান সেনাবাহিনীতে। সারা বছর ফুটবল নিয়ে কঠোর অনুশীলনের মধ্যে থাকতে হয় আঁখিকে। বিকেএসপির শিক্ষার্থী হওয়ায় পেয়েছেন পড়াশুনার সুযোগ। জাতীয় দলের এ ডিফেন্ডার খুশি নিজের ফলাফলে। করোনাকালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নিজ বাসায় অবস্থান করা আঁখি মুঠোফোনে বললেন, 'খুব খুশি লাগছে। যখন পরীক্ষা দিয়েছি, তখন চিন্তায় ছিলাম। কারণ সারা বছর খেলার ব্যস্ততা ছিল। ভালো পড়াশোনা করার সেভাবে সুযোগ পাইনি। বিকেএসপিতে পরীক্ষা দিতে যখন যাই, দেখতাম আমার সহপাঠীরা পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত, আমি তখনও প্র্যাকটিস করতে মাঠে যেতাম। পাস করেছি, তাই আমার খুবই আনন্দ লাগছে।' আঁখিরা যখন পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, তখন মেয়েদের লিগ চলছিল। পরীক্ষার টেবিলে সেভাবে মনোযোগ ধরে রাখাটা ছিল কষ্টকর। আঁখি নিজেই বলেছেন সেই অভিজ্ঞতার কথা, 'পরীক্ষার শেষের দিকে লিগ শুরু হলো। আমার দল বসুন্ধরা কিংস খেলছে, আর আমি তখন পরীক্ষা দিচ্ছি। এছাড়া সতীর্থ অনেকেই যখন বিকালে পড়াশোনা করত, তখন আমাকে মাঠে অনুশীলন করতে হয়েছে। একই সঙ্গে খেলা ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা বেশ কষ্টদায়ক।' তবে এভাবেই পরিশ্রম করে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চান এই ডিফেন্ডার। আঁখির বাবা-মা পরীক্ষার সময় থেকেই চিন্তায় ছিলেন। খেলার জন্য সেভাবে পড়াশোনায় মন দিতে না পারা মেয়েটা না জানি কেমন রেজাল্ট করে। আঁখি বললেন, 'রেজাল্ট শুনে এখন চিন্তামুক্ত হয়েছেন বাবা-মা। যেদিন থেকে পরীক্ষা দিয়েছি, সেদিন থেকেই খুব চিন্তায় ছিলেন, এখন খুবই খুশি। 'আমার বাবা-মায়ের বড় স্বপ্ন আমি একসময় লেখাপড়া করে শিক্ষিত মানুষ হবো।' আঁখির সঙ্গে এবার মানবিক বিভাগ থেকে ফরোয়ার্ড ঋতুপর্ণা চাকমা জিপিএ ৩.৫০ পেয়েছেন। রংপুরের মেয়ে স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না পেয়েছেন জিপিএ ৩.৯৪। এছাড়া শামসুন্নাহার সিনিয়র জিপিএ ৩.০৬, রেহেনা জিপিএ ৩.৭৫, মাহফুজা জিপিএ ৪.৩৩ ও সাজেদা জিপিএ ২.৮০ পেয়েছেন জিপিএ ৩.৮৩। অন্যদিকে রাঙামাটির স্থানীয় স্কুল থেকে জিপিএ ২.০০ পেয়ে পাস করেছেন আনাই মগিনী।