ভিডিও সাক্ষাৎকারে তামিম ইকবাল

ভারতের বিপক্ষে জয় মানেই অন্য কিছু

ভারতের বিপক্ষে জয় মানেই অন্য কিছু। আমার মনে হয় না, এটা ঘৃণা থেকে আসে, বা এমন নয় যে ওদেরকে হারাতেই হবে। আসলে পাকিস্তান-ভারত, অনেক বড় দল তারা, দীর্ঘ ঐতিহ্য তাদের। তাদের বিপক্ষে যে কোনো জয়ই বড় জয়।

প্রকাশ | ০৩ জুন ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ক্রিকেট লড়াই মানেই এখন তুমুল উত্তেজনা। কখনো কখনো তা ছাড়িয়ে যায় ক্রিকেটের সীমানা। ক্রিকেট মাঠ থেকে লড়াইয়ের ঝাঁজ ছড়িয়ে পড়ে যেন গোটা দেশেই। তামিম ইকবালও বলছেন, ভারতের বিপক্ষে জয় মানেই দারুণ কিছু। তবে তার সেই ভাবনা পুরোপুরিই ক্রিকেটীয়, যেখানে আছে সেরা দলকে হারানোর তৃপ্তি। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর ভিডিও সাক্ষাৎকারে ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের প্রশ্নে এই মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এক সময় ক্রিকেটে ফিটনেসের দিক থেকে এগিয়ে থাকত উপমহাদেশের বাইরের দলগুলো। কিন্তু সেই জায়গায় এসেছে বদল। ফিটনেসে দারুণ উন্নতি করে নিজেদেরকে উদাহরণ হিসেবে তৈরি করেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। আনছে সাফল্যও। একটা পর্যায়ে ফিটনেসে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশও এক্ষেত্রে ভারতীয়দের অনুসরণ করে উন্নতি করেছে বলে জানালেন তামিম ইকবাল। এক সময় ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেট লড়াই নিয়ে যেভাবে উত্তেজনার পারদ চড়ে যেত চূড়ায়, অনেকের মতে, গত কয়েক বছরে সেই জায়গা নিয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের লড়াই। মাঞ্জরেকার মনে করলেন তার খেলোয়াড়ি দিনগুলোর কথা, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে কতটা চাপ থাকত তাদের। তিনি জানতে চাইলেন, তামিমদের কাছে কোন দলকে হারানোর তাড়না বেশি, ভারত নাকি পাকিস্তান। তামিম বললেন, ভারতকে হারানোই সবচেয়ে বড়, 'ভারত এত শক্তিশালী একটা দল, এত বড় দল, ভারতের বিপক্ষে জয় মানে অন্য কিছু। আমার মনে হয় না, এটা ঘৃণা থেকে আসে, বা এমন নয় যে ওদেরকে হারাতেই হবে। ব্যাপারটা হলো, সেরা দলকে হারানোর তৃপ্তি। সেই ধরনের মানসিকতা। পাকিস্তানকে হারানোও আসলে পাকিস্তান-ভারত, অনেক বড় দল তারা, দীর্ঘ ঐতিহ্য তাদের। তাদের বিপক্ষে যে কোনো জয়ই বড় জয়।' ফিটনেসের দিক থেকে বাংলাদেশের চোখে পড়ার মতো উন্নতি নিয়ে তামিমের কাছে জানতে চান ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার। তামিম জানান, গত দুই-তিন বছরে পুরো বাংলাদেশ দলের চিন্তার জগতে বড় বদল এসেছে, 'গত দুই-তিন বছরে এই জায়গায় আমাদের বড় উপলব্ধি হয়েছে যে, ফিটনেসে অনেক উন্নতি করতে হবে। ভুঁড়ি নিয়ে খেলা চলবে না। এক সময় আমি নিজেও ফিটনেস নিয়ে ভাবতাম না। তখন আমার চিন্তাটা যে ভুল ছিল, এটা স্বীকার করতে লজ্জা নেই।' আর এই বদলের জন্য ভারতের ক্রিকেটারদের অনুসরণ করার কথাও বলেন তামিম, 'সঞ্জয় ভাই, একজন ভারতীয় ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলছি বলে নয়, আমি বলব, ভারত যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী দেশ, তাদের অনেক কিছুই আমরা অনুসরণ করি। ভারতীয়রা যখন ফিটনেস বদলাতে শুরু করল, সেটিই আমাদেরকে সবচেয়ে প্রভাবিত করেছে।' ফিটনেসের দিক থেকে বিশ্বের ক্রিকেটারদের মধ্যে আদর্শ নাম ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তামিম জানালেন, ৩ বছর আগেও কোহলির ফিটনেস নিয়ে কাজ দেখে লজ্জা পেতেন তিনি, 'আমার বলতে দ্বিধা নেই। আমি মনে হয় প্রকাশ করতে পারি। দুই-তিন বছর আগে যখন বিরাট কোহলিকে জিমে কাজ করতে দেখলাম, আমার কিন্তু লজ্জা লাগত। সত্যিই নিজেকে নিয়ে লজ্জা পেতাম। মনে হতো, ও হয়তো আমারই বয়েসি, অথচ এত ট্রেনিং করে সাফল্য পাচ্ছে। আর আমি তো তার অর্ধেকও করছি না। তখন থেকেই চেয়েছি তার পর্যায়ে যেতে না পারি, অন্তত তার পথটা তো অনুসরণ করতে পারি।' তবে এখন আর বাইরে নয়, তামিমের মতে, বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটাররা নিজেদের দলেই পেয়ে গেছেন এমন একজনকে, যিনি নিজেকে করেছেন অনুকরণীয়, 'আর এখন আমাদের দলেও দারুণ উদাহরণ তৈরি হয়েছে। যেমন- মুশফিকুর রহিম। তার ক্রিকেটীয় দিকে যাচ্ছি না, কেবল ফিটনেস যেভাবে সামলায় সে, তা অনুকরণীয়। বিরাট কোহলি আদর্শ অবশ্যই। তবে এখন মুশফিকও বাংলাদেশ দলের তরুণদের আদর্শ হতে পারে।'