এখনই মাঠে ফেরা হচ্ছে না টাইগারদের

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
এশিয়ার দেশ শ্রীলংকা দুদিন আগে দলীয় অনুশীলন শুরু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সহসাই মাঠে ফেরা হচ্ছে না -ফাইল ফটো
দেশে সাধারণ ছুটি উঠিয়ে নেওয়া দেখে কেউ কেউ হয়তো ভেবেছিলেন জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসতে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। উল্টো বাংলাদেশে করোনা আরও জেঁকে বসেছে প্রবলভাবে। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে করোনার সংক্রমণ এখন অনেক বেশি। এরকম সংকট ও উদ্বেগজনক অবস্থায় স্বল্প পরিসরে অফিস-আদালত খুললেও দেশের খেলাধুলা বিশেষ করে ক্রিকেট কার্যক্রম চালুর চিন্তাও রীতিমতো অলীক স্বপ্ন। এর মধ্যে একটি খবর শুনে ক্রিকেটভক্তরা আরও চমকে উঠেছেন। তা হলো, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ক্রিকেটারদের সংস্পর্শ ছাড়া অনুশীলনের উদ্যোগ নিয়েছে। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এখন দেশে করোনার যারপরনাই খারাপ অবস্থা। প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। এমনকি আক্রান্তের সংখ্যাও উদ্বেগ জাগানিয়া। আর এমন পরিস্থিতিতে খুব জরুরি দরকার ছাড়া ঘর থেকে বের হতে চান না কেউই। সেখানে হোক সংস্পর্শহীন মানে একা একা অনুশীলন, তারপরও এরকম সংকট ও কঠিন অবস্থায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অনুশীলন কার্যক্রম! খটকা লাগার মতো ব্যাপারই বটে। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের শারীরিকভাবে তৈরি করার পাশাপাশি স্কিল ট্রেনিং করানোর জন্য সত্যিই কি বিসিবি এমন কোনো উদ্যোগ নিয়েছে? জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কাছে বুধবার দুপুরে এমন প্রশ্ন রাখা হলে তিনি বলেন, 'এখনকার পরিবেশ-প্রেক্ষাপটে ক্রিকেটারদের নিজ নিজ বাসার বাইরে অন্য কোথাও কোনোরকম ফিটনেস ট্রেনিং, জিমওয়ার্ক, স্কিল ট্রেনিং করানো অসম্ভব। আমরা এখনই এই ধরনের চিন্তা-ভাবনাও করছি না।' বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আরও যোগ করেন, 'তবে ক্রিকেটারদের প্রস্তুত রাখার কথাও ভাবতে হচ্ছে আমাদের। মাথায় রাখতে হচ্ছে, তাদের শারীরিকভাবে ফিট রাখা অতি জরুরি। পাশাপাশি স্কিল ট্রেনিংটাও দরকার। কিন্তু সেটা নির্ভর করছে আসলে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ওপর। এখন যে ভয়াবহ অবস্থা, এর মধ্যে ট্রেনিং ক্যাম্প আয়োজনের প্রশ্নই আসে না, আমরা তা চিন্তাও করছি না। তবে অবস্থা ভালো হলে যাতে ক্রিকেটাররা দ্রম্নতই অনুশীলন শুরু করতে পারে- সেই ধরনের চিন্তা আছে আমাদের।' তবে সেটা কবে নাগাদ হতে পারে? এ প্রশ্নের জবাবে বিসিবির প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, 'এটা পুরোপুরি করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। এখন তো ঘর থেকেই বের হওয়া দায়। তাই আমরা অন্তত এই মাস দেখব, তারপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেব। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, জাতীয় দলের অনুশীলন বলি আর ঘরোয়া ক্রিকেট বলি- যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনোরকম ট্রেনিং ক্যাম্প পরিচালনার সুযোগ নেই। এছাড়া ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশও মেনে চলতে হবে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে নিষেধাজ্ঞা না উঠলে মাঠের কোনো ক্রিকেটীয় কার্যক্রম চালু সম্ভব না। শুনেছি সরকার নাকি করোনা মোকাবিলায় কিছুদিন পর বিভিন্ন জোন ভাগ করে দেবে। মিরপুর তথা শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের আশপাশ যদি রেড জোনে পড়ে তাহলে অনুশীলন, ফিটনেস ট্রেনিং আয়োজনের কোনোরকম প্রশ্নই থাকবে না। এমনকি যাদের বাসা মিরপুরে তারাও তো ঘর হতে বের হতে পারবে না।' বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচকের শেষ কথা, 'অনুশীলন কবে শুরু করা সম্ভব হবে, তা এখন আমাদের জানা নেই। সেটা একমাত্র আলস্নাহই ভালো করে জানেন, কবে করোনার এই ভয়াবহতা কমবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে এমনিতে আমরা একটি ছক তৈরি করে রেখেছি। তা হলো, ক্রিকেটারদের শতভাগ ফিট হিসেবে গড়ে তুলতে প্রথমে তিন সপ্তাহের ফিজিক্যাল ট্রেনিং করানো হবে।' বিশেষ করে ক্রিকেটাররা অনেকদিন ধরে খেলার বাইরে আছেন। তবে খেলার বাইরে থাকলেও ক্রিকেটাররা নিজ ঘরের মধ্যে শরীরটাকে ঠিক রেখেছেন বলেই বিশ্বাস করেন মিনহাজুল আবেদিন, 'এমনিতে সবাই কমবেশি ঘরে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করছেন। আমরা জাতীয় দলের ট্রেনিং কার্যক্রমও শুরু করব অন্তত তিন সপ্তাহের ফিজিক্যাল ট্রেনিং দিয়ে। তারপর দুই সপ্তাহ ধরে চলবে স্কিল ট্রেনিং। তবে এই কার্যক্রম আপাতত শুরু করার কোনো সম্ভাবনা নেই। সেটা কবে কখন শুরু করতে পারব, তা এখন বলাও সম্ভব না। সেজন্য আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।'