করোনাকালে মহাসংকটে রয়েছে দেশের খেটে খাওয়া মানুষ। এমন সংকটকালে হুইলচেয়ারে বসেই সমাজের নিম্নআয়ের মানুষদের সহযোগিতা করছেন বাংলাদেশ হুইলচেয়ার ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ মহসিন। নিজেদের উদ্যোগে গড়ে তোলা হুইলচেয়ার ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করে প্রায় চার হাজার মানুষকে সহযোগিতা করেছেন।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মহসিন বলেছেন, 'সব মিলিয়ে আমরা চার হাজার মানুষকে সহযোগিতা দিয়েছি। এর মধ্যে তিন হাজার প্রতিবন্ধী ও এক হাজার হতদরিদ্র। আমাদের সহযোগিতার আওতায় এসেছে টঙ্গী, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, রংপুর, বরিশাল।'
এ ছাড়া বিশেষ তহবিল গড়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরে ৫০০ প্রতিবন্ধী পরিবারকে সাহায্য করেছেন মহসিন। 'ঢাকার বাইরের সাহায্যের জন্য আমরা চার লাখ টাকার ফান্ড তৈরি করেছি। ৮টি জেলাতে ৫০০ প্রতিবন্ধী মানুষকে আমরা সহযোগিতা করেছি। আমাদের লক্ষ্য ঢাকার বাইরে ১৫০০ জনকে সাহায্য করা। আরও এক হাজার জনের তালিকা করে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে।'
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ করে মহসিন আর্থিক সাহায্য এনেছেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, অরিয়ন, এপিলন, সেভ মিশন বাংলাদেশ, বিওয়াইএলসি, ডবিস্নউ ইএফ (ঢাকা হাব), হিরোস ফর অল, অল ফর ওয়ান, এম স্পোর্টস, এনডিডি, ইউসিডি ও এক টাকার আহার বিদ্যানন্দ অন্যতম। মূলত এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে খাদ্যসামগ্রী কিংবা অর্থ এনে প্রতিবন্ধী ও অসহায় দরিদ্র মানুষদের দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া মহসিন ব্র্যাকের সঙ্গে কথা বলে ৩০০ প্রতিবন্ধী পরিবারের মাঝে নগদ ১৫০০ টাকা করে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ সহায়তার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। জাতীয় দলের উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমও ডবল সেঞ্চুরির ব্যাট বিক্রয় করে প্রাপ্ত অর্থের কিছু অংশ মহসিনকে দিয়েছেন। মুশফিকের পাওয়া অর্থে ৫০ জন ক্রিকেটারের মাঝে ভাগ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মহসিন।
অবশ্য এসব কাজে নিজের সীমাবদ্ধতা আছে, তবুও অসহায় মানুষকে এভাবে সাহায্য করে দারুণ তৃপ্ত মহসিন, 'আমি তো অনেকদিন ধরেই কাজ করেছি। খুব কাছ থেকে তাদের কষ্টটা আমি দেখতে পেয়েছি। তাছাড়া আমি নিজেও কঠিন সময় পার করেই এই অবস্থায় পৌঁছেছি। তাই বুঝি গরিবের কষ্টটা কেমন। সেই চিন্তা-ভাবনা থেকে তাদের জন্য কিছু করা। গত কিছুদিন ধরে আমি বাসাতেও যাই না, অফিসে থাকি। সবকিছু দেখভাল এখান থেকেই করছি। সবার মুখে হাসি ফোটাতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে।'