একক অনুশীলন চেয়েছিলেন মুশফিক, বিসিবির না

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
মন তো মানে না, তাই নিজের মতোই প্রাকটিসের অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছিলাম। কিন্তু উনারা বলার পর আমিও বুঝতে পেরেছি। মিরপুর এলাকার অবস্থা খুব ভালো নয়। মাঠকর্মীসহ আরও যারা থাকবেন অনুশীলনে, সবাইকে কোয়ারেন্টিনে রাখাও কঠিন হবে।
দলীয় অনুশীলন বর্তমান বাস্তবতায় অনেক দূরের পথ। মুশফিকুর রহিম তাই চেয়েছিলেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এককভাবে অনুশীলন শুরু করতে। তবে বিসিবির অপেক্ষা উপযুক্ত সময়ের। পরিস্থিতি অনুকূলে এলে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করে তবেই সবাইকে অনুশীলনে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছেন মুশফিকও, 'কাউকে একা অনুশীলনের অনুমতি দেওয়া মানে তো শুধু একার ব্যাপার নয়। মাঠ ও উইকেট প্রস্তুত করার লোক রাখতে হবে, সাহায্য করার জন্য কয়েকজন লাগবে, নেট বলার লাগবে। আরও কিছু পারিপার্শ্বিকতা আছে। সব মিলিয়ে ব্যাপারটা ঝুঁকির হয়ে যায়। এটা আসলে অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপার নয়। আমরা পরিস্থিতি তুলে ধরেছি, মুশফিক তো খুবই সেন্সিবল, সে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে। যখন সময় হবে, সবার জন্য একইরকম নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করে অনুশীলনের ব্যবস্থা করব আমরা।' পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করেই শেষ পর্যন্ত মুশফিক সরে এসেছেন অনুশীলন শুরুর ভাবনা থেকে। এ প্রসঙ্গে মুশফিক নিজেও জানালেন, 'মন তো মানে না, তাই নিজের মতোই প্রাকটিসের অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছিলাম। কিন্তু উনারা বলার পর আমিও বুঝতে পেরেছি। মিরপুর এলাকার অবস্থা খুব ভালো নয়। মাঠকর্মীসহ আরও যারা থাকবেন অনুশীলনে, সবাইকে কোয়ারেন্টিনে রাখাও কঠিন হবে। তাছাড়া আমাকে তো আবার বাসায় ফিরতে হবে অনুশীলন করে। পরিবারের সবার জন্যও ঝুঁকির হয়ে যায় সেটি। সব মিলিয়ে ভেবে দেখলাম, ব্যাপারটা এই মুহূর্তে হয়তো ঠিক হবে না। উনারা বলেছেন, সামনে পরিস্থিতি এলে সবকিছু জীবাণুমুক্ত করে, সবার টেস্ট করিয়ে অনুশীলন শুরুর ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত আরও অপেক্ষা করি।' আর সেই অপেক্ষা কতদিনের, জানা নেই কারও। সপ্তাহ দুয়েক পর হয়তো পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হতে পারে বলে মনে করছেন মুশফিক, 'একটা ব্যাপার হলো, করোনার প্রকোপ পুরোপুরি শেষ হওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব কি না। শেষ কবে হবে, কেউ জানে না। কয়েক মাস তো বটেই ২-১ বছরও লেগে যেতে পারে। কাজেই আমাদের কোনো একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। তবে এখনো আমাদের দেশের যা অবস্থা, তাড়াহুড়ো না করাই ভালো। অন্তত আরও ১৪-১৫ দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তারপর ভেবে দেখা যেতে পারে। যদি পরিস্থিতির উন্নতি হয়, তখন অন্তত ২-৩ জনের গ্রম্নপ ভাগ করে অনুশীলন শুরু করা যেতে পারে। সময়ের ওপরই নির্ভর করছে সব।' উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষায় আছে বিসিবিও। ইংলিশ ক্রিকেটাররা কয়েক দিন আগেই শুরু করেছেন অনুশীলন। জীবাণুমুক্ত পরিবেশে আগামী মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলবে তারা। দুই দিন আগে অনুশীলনে ফিরেছে শ্রীলংকান ক্রিকেটাররাও, আবাসিক থেকে চলছে তাদের অনুশীলন। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের বোর্ডও চিন্তাভাবনা করছে শুরুর। এমনকি তারাও অনুশীলন শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন বলে জানালেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরি সুজন, পরিস্থিতি কিন্তু সবার জন্যই নতুন। ইংল্যান্ডের পদ্ধতি কতটা কাজ করবে বা শ্রীলংকার, আমরা কেউই জানি না। সব পদ্ধতিরই ভালো-খারাপ থাকতে পারে। সব দেশের বাস্তবতাও এক নয়। আমরা আমাদের মতো করেই কতটা নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়, তা ভাবছি। প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। আমরা আমাদের কাজ করে রাখছি, তারপর অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড।' তবে সেই সময়টা যে সহসাই আসছে না, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী, 'বাংলাদেশে কিন্তু এখনো আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পিক করছে কেবল। আমরা কেউই জানি না, এক মাস পর বা দুই সপ্তাহ পর পরিস্থিতি কেমন হবে। অনুশীলন শুরু করার পর যদি ক্রিকেটার বা সংশ্লিষ্ট কারও কোনোকিছু হয়, জবাবদিহি করতে হবে আমাদের। কোনো ঝুঁকি নেওয়ার সুযোগ এখানে নেই, উচিতও হবে না।' করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত ১৯ মার্চ থেকে দেশে সব ধরনের ক্রিকেট? বন্ধ আছে। এ প্রসঙ্গে বিসিবির প্রধান নির্বাহী আরও যোগ করেন, 'যখন সময় হবে, আমরা পরিস্থিতি বুঝব, নিজেরা কথা বলব, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেব, ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবকিছু চূড়ান্ত হবে। আপাতত কোনো তাড়াহুড়ো আমাদের নেই।'