বিসিবির সিদ্ধান্ত

মুশফিকদের ব্যক্তিগত অনুশীলনে অনুমতি

অবশেষে বিসিবি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ক্রিকেটারদের জন্য দেশের চারটি জায়গায় খুলে দেওয়া হবে অনুশীলন সুবিধা।

প্রকাশ | ০৬ জুন ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সিলেট স্টেডিয়ামে অনুশীলনের এক মুহূর্তে মুশফিকুর রহিম -ফাইল ফটো
করোনাভাইরাস ক্রিকেটারদেরও ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে। ফিটনেস ঠিক রাখতে গত দুই-আড়াই মাস কেউ ঘরেই দৌড়ঝাঁপ করেছেন, কেউ ছাদে গিয়ে নাড়াচাড়া করেছেন ব্যাট-বল। কিন্তু এভাবে কতদিন! অবশেষে বিসিবি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ক্রিকেটারদের জন্য দেশের চারটি জায়গা খুলে দেওয়া হবে অনুশীলন সুবিধা। করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা আর প্রাণনাশী রূপ সবাইকে তটস্থ করতে পারলেও, ক্রিকেটঅন্তপ্রাণ মুশফিকুর রহিম সতর্ক-সাবধানী হয়ে চলার পাশাপাশি মুখিয়ে আছেন মাঠে ফিরতে। ক্রিকেট যার ধ্যান-জ্ঞান, খেলার বাইরে অন্য কিছু নেই, সেই মুশফিক বারবার ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনুশীলন করার অনুমতি চেয়েছেন বিসিবিতে। খেলার পাশাপাশি অনুশীলনটাও তিনি দারুণ উপভোগ করেন। সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্র্যাকটিস করেন। নেটেও যার প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটে- সেই মুশফিক ঘরে বসে থাকতে থাকতে একদম হতোদ্যম হয়ে গেছেন। দিন গুনছেন অন্ততপক্ষে অনুশীলনে ফেরার। মুশফিকের সে ইচ্ছা পূরণ হতে যাচ্ছে। অবশেষে বিসিবি ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনুশীলন করার সুযোগ দিতে চাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহের শেষেই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনুশীলন শুরুর সুযোগ দেয়া হবে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী বৃহস্পতিবারই জানিয়েছেন, ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী ও কক্সবাজারে আমরা অনুশীলন শুরু করার ব্যবস্থা করছি। যদি কেউ চায়, আর পাঁচ-সাতদিন পর থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এসব জায়গায় অনুশীলন করতে পারবে।' এসব জায়গায় বিসিবির আওতাধীন মাঠ, জিম ও অন্যান্য অনুশীলন সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন জাতীয় দল ও জাতীয় দলের আশপাশের ক্রিকেটাররা। তবে সে জন্য মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি ও বিসিবির বেঁধে দেওয়া নিয়ম-কানুন। গত কয়েক দিনে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের অনেক ক্রিকেটারই বিসিবির কাছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুশীলন করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। সেটিরই ধারাবাহিকতায় এ ব্যবস্থা। 'সবার তো বাসায় জিম-সুবিধা নেই, অনুশীলন করারও উপায় নেই। সে জন্য কয়েকজন ক্রিকেটার আমাদের বলেছে, তারা মাঠে গিয়ে অনুশীলন করতে চায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে হুট করে এ ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। আমরা সবরকম স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ক্রিকেটারদের সীমিত পরিসরে অনুশীলন-সুবিধা দিতে যাচ্ছি,' বলেছেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী। শুক্রবার বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি মাঠে জাতীয় ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত পর্যায়ের অনুশীলনের সুযোগ করে দিতে চাই। এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার ৪-৫ দিন পর সে সুযোগ পাবে ক্রিকেটাররা। তখন ওরা নিজ ইচ্ছায় মাঠে গিয়ে অনুশীলন করতে পারবে।' করোনার ভয়াবহতার মধ্যেও ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুশীলন করতে দেয়া কেন? এত তাড়া কিসের? নিকট ভবিষ্যতে বা সামনে তো জাতীয় দলের কোন কার্যক্রমও নেই। তবে কি শ্রীলংকা সফরের কথা মাথায় রেখেই ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্র্যাকটিস সুবিধা প্রদানের চিন্তা? আকরাম খানের ব্যাখ্যা, 'না। আমরা পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেব। শ্রীলংকা সফর এখনও নিশ্চিত নয়। এ সম্পর্কে এখনই চূড়ান্ত মন্তব্য করা ঠিক হবে না। হয়তো ১০-১২ দিন পর ওই সিরিজ সম্পর্কে পাকা কথা বলতে পারব। পরিস্থিতি ভালো হলেই কেবল শ্রীলংকায় টেস্ট খেলতে যাওয়া হবে।' শ্রীলংকা সফর নিয়ে যদি এখনই তড়িঘড়ি নাই থাকে, তাহলে করোনার এমন ভয়াল রূপের ভেতরে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনুশীলন করার অনুমতি কেন? আকরাম খানের জবাব, 'আমরা বারবার বলছি, কোনো রিস্ক নেব না। দল বেঁধে অনুশীলন না করার চিন্তাও চূড়ান্ত।' মুশফিকুর রহিমের উদাহরণ টেনে আকরাম খান বলেন, 'মুশফিক তো ঈদের আগেই একা অনুশীলন করতে চেয়েছিল, আমরা তখন অনুমতি দেইনি। এখনও আগ্রহী মুশফিক। 'মুশফিক একা নয়। আরও আগ্রহী ক্রিকেটার আছে, যারা করোনার লকডাউনে ঘরে বসে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করে সময় কাটিয়েছে। কিন্তু সত্যিকার ট্রেনিংটা হয়নি। তাদের কেউ কেউ আগ্রহী জিমওয়ার্ক করতে। পাশাপাশি নিজের উদোগে স্কিল ট্রেনিং করার ইচ্ছাও পোষণ করেছে। আমরা তাই ওদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা পূরণের চিন্তায় মাঠে অনুশীলন করার সুযোগ করে দিতে চাচ্ছি।' আকরাম খানের শেষ কথা, 'কেউ চাইলেই ৪-৫ জন নেট বোলার নিয়ে ব্যাটিং প্র্যাকটিস করতে পারবে না। নামমাত্র এখন সহকারী ব্যবহার করা যাবে।'