জাতীয় দলে ফিরতে না পেরে হতাশ

একজন ফুটবলারের সব থেকে বড় স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলা। নিজের সেরা পারফরম্যান্স দিয়ে তৎকালীন কোচের নজর কেড়ে ২০১৩ সালে সেই জার্সিটা গায়ে জড়িয়েছিলেন শেখ রাসেলের স্ট্রাইকার তকলিস আহমেদ। তবে গত কয়েক বছর ধরেই জাতীয় দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন। অথচ ঘরোয়া ফুটবলে দুর্দান্ত খেলছেন। এরপরও কেন জেমির নজরে পড়ছেন না, সেটা ভেবেই দিন দিন হতাশ হয়ে যাচ্ছেন এই ফুটবলার।

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শেখ রাসেলের স্ট্রাইকার তকলিস আহমেদ
যায়যায়দিন : কোথায় আছেন? কেমন আছেন? তকলিস : সিলেটে নিজের বাড়িতে আছি। এই তো একটু আগেই (বিকালে) অনুশীলন শেষ করলাম। এখানে বেশ কয়েকজন ফুটবলার আছেন, তাদের সঙ্গেই অনুশীলন করছি। যায়যায়দিন : যাদের সঙ্গে অনুশীলন করছেন, তারা কি স্থানীয় ফুটবলার নাকি প্রিমিয়ার লিগ বা জাতীয় দলে খেলেন? তকলিস : আমাদের প্রিমিয়ার লিগের ও জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ফুটবলার এখানে আছেন। এর মধ্যে ইয়ামিন মুন্না, বিপলু, নাইম, মনসুরসহ সাত-আটজন আছে। তাদের সঙ্গেই অনুশীলন করি। যায়যায়দিন : করোনা পরিস্থিতিতে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করছেন? তকলিস : অনুশীলনে এই কয়জন ছাড়া বাইরের কাউকে নিচ্ছি না। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করছি। মাঠে তখনই অনুশীলনে যাই, যখন লোক সমাগম কম থাকে। এ ছাড়া জিমেও যাচ্ছি। তবে সাবধানতা অবলম্বন করে। যায়যায়দিন : ঘরে থেকে অনুশীলন করছেন। ফিটনেসের কী অবস্থা? তকলিস : ফিটনেস আলস্নাহর রহমতে ভালো। তবে সিলেটে ট্রেনিং করা। আর ঢাকার মাঠে ক্যাম্পে থেকে ট্রেনিং করার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। কিন্তু কিছু তো করার নেই। মাঠে খেলা নেই। ক্লাব ছুটি। তাই এখানে যতটা সম্ভব ফিটনেস রক্ষা করার জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছি। যায়যায়দিন : একটা সময় জাতীয় দলের নিয়মিত স্ট্রাইকার তকলিসকে এখন আর দেশের জার্সিতে দেখা যায় না। কারণটা কি? তকলিস : কারণটা তো ভাই আমিও জানি না। প্রিমিয়ার লিগে তো আমি নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলছি। ২০১৮ সালে আমি আর সোলেমান মিলে লিগে ১৭ গোল করেছি। আমি একাই আট গোল করি। আশা ছিল, আবার জাতীয় দলে ডাক পাব। কিন্তু কী কারণে পেলাম না, তা জানি না। হয়তো বা আমার খেলার ধরন কোচ জেমি ডের পছন্দ নয়। ভালো পারফর্ম করেও জাতীয় দলে জায়গা হচ্ছে না। তাই দিন দিন হতাশ হয়ে যাচ্ছি। যায়যায়দিন : আপনার জীবনের সব থেকে আনন্দময় কোন মুহূর্তটা এখন মনে পড়ছে? তকলিস : ২০১৩ সালে এএফসি কাপের ম্যাচে ৭৫ মিনিট পার হওয়ার পর তৎকালীন জাতীয় দলের কোচ ক্রুইফ আমাকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছিলেন। তখন চিন্তাতেই ছিল না খেলতে নামব। এটা ছিল আমার জীবনের সব থেকে আনন্দময় মুহূর্ত। যায়যায়দিন : আপনি তো ক্রুইফের বেশ প্রিয় খেলোয়াড় ছিলেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ হয়? তকলিস : হঁ্যা। তার সঙ্গে প্রায়ই যোগাযোগ হয়। উনি খোঁজখবর নেন। কেমন খেলছি। জাতীয় দলের সুযোগ পাচ্ছি না কেন, এসব জানতে চান। আমি তাকে বলি, চেষ্টা করে যাচ্ছি। যায়যায়দিন : জাতীয় দলের আরেকজন সাবেক ফুটবলার আপনাদের সিলেটের ওয়াহেদ আহমেদ। আপনার ফুটবলে আসার পেছনে তার অনেক অবদান আছে একবার বলেছিলেন। তার কী খবর? তকলিস : আমার ফুটবলে আসার পেছনে তার অবদান অনেক। সে এবং আমি মিলে এখানের গরিব মানুষ ও অসহায় ফুটবলারদের সাহায্য করার চেষ্টা করছি। আমার জীবনের প্রথম বিদেশি বুটজোড়া গিফট করেছিলেন ওয়াহেদ ভাই। যায়যায়দিন : এবার তো লিগ বাতিল হয়ে গেল। এতে ফুটবলাররা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? তকলিস : মাঠে খেলা না থাকলে ফিটনেস ধরে রাখাটা কঠিন হয়ে যায়। এ ছাড়া অর্থনৈতিকভাবে ফুটবলাররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব থেকে বেশি ভুক্তভোগী সেসব ফুটবলার, যারা ছোট ক্লাবে কম টাকায় খেলত। তাদের অনেকে হয়তো ফুটবল ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশাতেই চলে যাবে সংসার চালাতে।