ফুটবল মাঠে মুশফিকের অনুশীলন

শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ব্যক্তিগত অনুশীলনের অনুমতি না মেলায় বাড্ডার ফরটিস গ্রম্নপের ফুটবল একাডেমির ফাঁকা মাঠে মঙ্গলবার করেছেন ড্রিল। মাঝমাঠে ম্যাট বিছিয়ে ফুলটস বলে করেছেন অনুশীলন। অনুশীলনের একটি ভিডিও নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন মুশফিক। মুশফিকের প্রথম দিনের অনুশীলনটা অবশ্য হালকাই ছিল।

প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
করোনার কারণে প্রায় চার মাস ঘরবন্দি থেকে নিজেকে সচল রেখেছেন ফিটনেস অনুশীলনের মাধ্যমে। তবে মাঠের অনুশীলন খুব মিস করছিলেন। তাই গৃহবন্দিত্ব ছেড়ে মঙ্গলবার মাঠেই নেমে পড়লেন ব্যাট-প্যাড নিয়ে। সবার আগেই স্কিল অনুশীলনে নেমে পড়েন মুশফিকুর রহিম -ফেসবুক
বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মাঝে সবচেয়ে পরিশ্রমী খেলোয়াড়ের তালিকা করলে প্রথমেই মুশফিকুর রহিমের নাম আসবে। করোনায় ঘরবন্দী অবস্থায় দীর্ঘদিন বাসাতেই অনুশীলন করেছেন তিনি। ঘরে থাকতে থাকতে অনেকটাই ক্লান্ত হয়ে উঠেছিলেন মুশফিক। সেই বন্দিদশা থেকে নিজেকে বের করে এনেছেন মুশফিকুর রহিম। জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের মাঝে সবার আগে তিনিই মাঠে অনুশীলন শুরু করেছেন। ব্যাট হাতে নেমে পড়েছেন মাঠে। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ব্যক্তিগত অনুশীলনের অনুমতি না মেলায় বাড্ডার ফরটিস গ্রম্নপের ফুটবল একাডেমির ফাঁকা মাঠে মঙ্গলবার করেছেন ড্রিল। মাঝমাঠে ম্যাট বিছিয়ে ফুলটস বলে করেছেন অনুশীলন। অনুশীলনের একটি ভিডিও নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন মুশফিক। মুশফিকের প্রথম দিনের অনুশীলনটা অবশ্য হালকাই ছিল। আরও কয়েকজন ক্রিকেটার ওই মাঠটি ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছেন। ফরটিস গ্রম্নপ ও ফুটবল একাডেমির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, ক্রিকেটারদের অনুশীলনের জন্য কয়েকটি উইকেট বানানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। কোনো ফি ছাড়াই অনুশীলন করতে পারবেন টাইগার ক্রিকেটাররা। বেশ কয়েকদিন আগে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলনের অনুমতি চেয়ে বিসিবির কাছে আবেদন করেছিলেন মুশফিক। কিন্তু মিরপুরে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক থাকায় সায় দেয়নি বিসিবি। মুশফিক পরে একটি উপায় ঠিকই বের করে শুরু করে দিলেন প্রস্তুতি। গত সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। মাস্ক পরিহিত অবস্থায় মাঠে একটি ছবি তুলে ফেসবুকে লিখেছিলেন, 'অসাধারণ এই মাঠকে খুব মিস করছি। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন কখন আবার অনুশীলন শুরু করতে পারব।' এর পরদিনই মাঠে নেমেছেন মুশফিক। তবে মিরপুরে নয়, মঙ্গলবার সকালে বাড্ডার বেরাইদা ফর্টিস গ্রম্নপের মাঠে অনুশীলন শুরু করেছেন তিনি। দৃষ্টিনন্দন এই মাঠে ঘণ্টা দুয়েক রানিং, স্ট্রেচিং করার পর পিচে হালকা নক করেছেন। মূলত যথেষ্ট নিরিবিলি থাকার পাশাপাশি অনুশীলন করার ভালো সুযোগ আছে বলেই এই মাঠটি বেছে নিয়েছেন মুশফিক। জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান প্রতি সপ্তাহে একদিন এখানে অনুশীলনে আসবেন বলে জানা গেছে। আগে বেশ কয়েকবারই শোনা গেছে টাইগাররা মাঠে ফিরছেন। জাতীয় দলের না হয় ব্যক্তিগত পর্যায়ের অনুশীলনে নামবেন। বিসিবি থেকে ছকও কষে দেয়া হয়েছিল, কিভাবে ক্রিকেটাররা শারীরিক সংস্পর্শ ছাড়া অনুশীলন করবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনোটাই হয়নি। জাতীয় দলের অনুশীলন বহুদূরে, ব্যক্তিগত পর্যায়ের অনুশীলনও শুরু হয়নি। বেরাইদার ফুটবল মাঠে মুশফিকের অনুশীলনের খবর প্রকাশ পাওয়ায় এবার ক্রিকেটারদের জন্য এবার খুলে যাচ্ছে হোম অব ক্রিকেট শেরে বাংলা স্টেডিয়ামও। ক্রিকেটাররা যাতে তাদের প্রিয় শেরে বাংলার চেনা জানা কন্ডিশনে নিজেদের মত করে প্র্যাকটিস করতে পারেন-এবার সে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই বিসিবির উদ্যোগেই শুরু হতে যাচ্ছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের অনুশীলন। জাতীয় দলের পর্যবেক্ষণ, পরিচর্যা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান গণমাধ্যমকে দিয়েছেন এ তথ্য। মঙ্গলবার একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'আমরা সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছি। মাঠ, পিচ, ইনডোর, একাডেমির মাঠ সবই তৈরি করে রাখা হয়েছে। এখন ক্রিকেটাররা চাইলেই প্র্যাকটিস করতে পারবে।' আগেই জানা গিয়েছিল যে, চলতি মাসের শেষ ভাগে না হয় আগস্টের প্রথম দিকে অনুশীলন শুরুর সম্ভাবনার কথা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বিষয়টি জানিয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচকের সেই কথার সূত্র ধরে সর্বশেষ খবর দিলেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান। জানালেন, 'করোনার তীব্রতা কমলেই যাতে ক্রিকেটাররা অনুশীলনে নামতে পারে, সে উদ্যোগই নেয়া হয়েছে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন।' কবে নাগাদ ক্রিকেটাররা অনুশীলন শুরু করবে সে বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানান আকরাম খান। তিনি বলেন, 'না, কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়নি। করোনা পরিস্থিতির ওপর সব নির্ভর করছে। যদি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে এবং করোনার ভয়াবহতা কমে আসে, তাহলে হয়তো ঈদের আগেও তিন-চারদিনের অনুশীলন করা সম্ভব। না হয়, ঈদের ছুটির পর অবস্থার উন্নতি ঘটলে ক্রিকেটারদের অনুশীলনে নামার সম্ভাবনা আছে।' বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আরও জানান, 'যেহেতু এশিয়া কাপের (পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সেপ্টেম্বরে শুরুর কথা) আগে আমাদের আর কোন সিরিজ বা সফর নেই। তাই আমরা এশিয়া কাপকে টার্গেট রেখে ক্রিকেটারদের তৈরি করার কথা ভাবছি। আমরা প্র্যাকটিসের সব রকম ফ্যাসিলিটিজ প্রস্তুত করে ফেলেছি। ক্রিকেটাররা মাঠে অনুশীলনে নামলে যা যা দরকার হয়, সব যাতে পায়, তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন শুধু করোনার অবস্থার উন্নতির অপেক্ষা। করোনার প্রকোপ কমলে ক্রিকেটারদের অনুশীলন করার অনুমতি দেয়া হবে।'