সা ক্ষা ৎ কা র

'সময় দিলে জাতীয় দল আরও অনেক ভালো করবে'

একই পরিবারে দুই গোলরক্ষক। সুজন আর পাপ্পু। সম্পর্কে সহোদর। আপন মামা ফরোয়ার্ড সোহেল রানা খেলেন জাতীয় দলে। বড় মামা রাজু হোসেন সুমনের বুট আর জার্সিতে শুরু। ফুটবলের মধ্যেই যেন বেড়ে ওঠা মোহামেডানের ফুটবলার মো. সুজন হোসেনের। বয়সভিত্তিক বিভিন্ন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে উঠলেও এখনো পূরণ হয়নি সিনিয়র দলে খেলার সাধ। তাই স্বপ্ন আছে সুযোগ পেলে দেশের জন্য নিজের সেরাটা দেওয়ার। কৈশোরে জুনিয়র জাতীয় দলে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া প্রীতি ম্যাচে বল বয়ের কাজ করেছিলেন। তাই খুব কাছ থেকে দেখেছেন মেসি-ডিমারিয়ার মতো তারকা ফুটবলারদের।

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ফুটবলার মো. সুজন হোসেন
কেমন আছেন? কোথায় আছেন? ঢাকাতেই আছি। ভালো আছি। তবে মাঠে যেতে পারছি না। ঠিকমতো অনুশীলন করতে পারছি না। তার জন্য খারাপ লাগছে। অনুশীলন কোথায় করেন? আমাদের এখানে তো আর কোনো মাঠ নেই অনুশীলনের মতো। বাফুফের টার্ফে রাতে গোপনে অনুশীলন করি। গোপনে কেন? আসলে আমাদের আরামবাগ এলাকার ছেলেরা অনেক ফুটবল ভালোবাসে। এখন আমরা লিগের ফুটবলাররা যদি দিনের বেলা অনুশীলন করতে যাই, তখন অনেকেই এসে ভিড় করে ফুটবল খেলতে। তাই আমরা রাতে গোপনে অনুশীলন করি। দুই মামা ফুটবলার। আপনারা দুই ভাই ফুটবলার হয়েছেন। কখন মনে হলো ফুটবলার হতে হবে? সত্যি বলতে মামাদের দেখেই ফুটবলে আসার চিন্তাভাবনা শুরু। যখন আমার মামা সোহেল রানা ফুটবলার হিসেবে দেশে-বিদেশে ঘুরতে যেতেন তখন থেকেই চিন্তা মাথায় আসে ফুটবলার হওয়ার। এরপর বয়সভিত্তিক দল দিয়ে শুরু। অনূর্ধ্ব ২৩ জাতীয় দলেও খেলা হয়েছে। তবে সিনিয়র দলে খেলতে পারিনি। বিদেশে যাওয়ার সেই স্বপ্নটা কি পূরণ হয়েছে? সত্যি বলতে যখন ছোট ছিলাম। প্রথম স্বপ্ন ছিল পেস্ননে উঠব। ফুটবল আমার জীবনের অনেক স্বপ্নই পূরণ করেছে। দু'বার ইরাক গিয়েছি। নেপাল ও ভারতে একবার করে গিয়েছি। আলস্নাহর কাছে শুকরিয়া। মাঝপথে লিগ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে আপনাদের টিম কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হলো? আপনারা ফুটবলাররা কতটা ক্ষতির মুখে পড়লেন? আমাদের যে কোচ শন লেন, তার মধ্যে দারুণ একটা ব্যপার আছে। উনি ফুটবলারদের ভেতরের প্রতিভাটা বের করে আনতে পারেন। এবার আমাদের যে টিমটা হয়েছিল সেটা নিয়ে আমরা অনেকদূর যেতে পারতাম। লিগ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে তো আর হলো না। আমরা ফুটবলাররাও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। কী কী ক্ষতি হয়েছে আপনাদের? আমার মতো এমন অনেক ফুটবলার আছেন, যারা খুব অল্প টাকাতে বিভিন্ন টিমে এবার খেলেছেন। ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি। আমার একটা সংসার আছে। দু'বছরের একটা সন্তান আছে। আমার ভাই পাপ্পু (গোলরক্ষক) যদি পাশে না দাঁড়াতো আমি হয়তো চলতেই পারতাম না। তার মতো এমন একটা ভাই আর কারো হয় কি না জানি না। খেলার মধ্যে থাকলে আমাদের ফিটনেস আরও অনেক ভালো থাকত। নিয়মিত টাকা পেতাম। আরও অনেক ভালোভাবে চলতে পারতাম। বলছিলেন একসময় না কি বলবয়ের কাজও করেছিলেন। সেটা কেন? মূলত বলবয় হওয়ার কারণটা ছিল বড় বড় ফুটবলারদের কাছ থেকে দেখা। তাদের খেলা দেখে তাদের থেকে কিছু শেখা। বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া প্রীতি ম্যাচে মেসি-ডিমারিয়াদের খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। তারা যখন অনুশীলন করেছে। তখনও দেখেছি। শুধু বল বয়ের দায়িত্ব পালন করার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। তখনও আমি অনূর্ধ্ব ১৬ দলের হয়ে খেলি। এমন সুযোগ আসলে সবার জীবনে আসে না। সিনিয়র জাতীয় দলে তো খেলা হয়নি। সুযোগ পেলে কতটা দিতে চান? এটা হয়তো আলস্নাহর বড় পরীক্ষা। এখনো সিনিয়র দলে খেলতে পারিনি। বাংলাদেশের এমন কোনো ম্যাচ নেই যেটা দেখি না। মোহামেডান গ্যালারিতে কোনায় বসে যখন অন্যদের জাতীয় দলের জার্সিতে দেখি। তখন অনেক কষ্টই লাগে। সুযোগ পেলে অবশ্যই নিজের সেরাটা দিতে চাই। বর্তমান জাতীয় দলটা কেমন আপনার চোখে? এই দলটা খুব ভালো হয়েছে। একজন কোচের অধীনেই যদি এদের রাখা হয় এরা ভবিষ্যতে আরও অনেক ভালো করবে। আফগানিস্তান আর ভারত ম্যাচে বাংলাদেশ জিতবে এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। আমাদের দেশ কিন্তু অনেক ভালো খেলেছে।