ইংল্যান্ড-উইন্ডিজ প্রথম টেস্ট

বস্ন্যাকউডের ব্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দারুণ জয়

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লম্বা বিরতি শেষে ক্রিকেট ফেরার পর প্রথম বিজয়ী দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অসাধারণ রোমাঞ্চ উপহার দিয়ে সাউদাম্পটন টেস্টে ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে তারা। অথচ এ ম্যাচে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল ইংল্যান্ড। তাও আবার ঘরের মাঠে খেলেছে দলটি। আর তাদের হারের কারণ নিয়ে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক নাসির হোসেন মনে করছেন, ক্যারিবিয়ানদের অবমূল্যায়ন করার কারণেই এমন হার। সাউদাম্পটন টেস্টে ছিলেন না দলের অন্যতম সেরা পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। ১৩৮টি টেস্ট খেলা এ পেসারকে বিশ্রাম দেওয়া নিয়ে অনেক সমালোচনাই হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে উইন্ডিজের বিপক্ষে অতি আত্মবিশ্বাসী ছিল ইংলিশরা। যে কারণে দলের সেরা তারকাকে বিশ্রাম দিতে কার্পণ্য করেনি তারা। তবে ক্যারিবিয়ানদের কৃতিত্ব দিতে ভুল করেননি নাসির, 'ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য তাদের টুপি খোলা অভিবাদন। কিন্তু ইংল্যান্ডকে একটা প্রশ্ন করতে চাই। যদি এটা অ্যাশেজের প্রথম ম্যাচ হতো তাহলে কি তারা স্টুয়ার্ট ব্রডকে বাইরে রাখত? এটা আমাকে বিস্মিত করেছে তারা একটি ভুল করেছে উইন্ডিজের বিপক্ষে। তারা তাদের অবমূল্যায়ন করেছে, উইসডেন ট্রফিটি বর্তমানে জেসন হোল্ডারের দখলে থাকা সত্ত্বেও।' ক্রিকেট তার সব নাটকীয়তা নিয়ে হাজির হলো সাউদাম্পটন টেস্টের শেষ দিনে। ব্যাট হাতে ২৩ রানের ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পর বল হাতে ক্যারিবিয়ানদের কাঁপিয়ে দিলেন জোফরা আর্চার। তার তোপ সামলে দলকে কক্ষপথে ফেরালেন জার্মেইন বস্ন্যাকউড। এই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানের দারুণ ইনিংসে চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় জয় তুলে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম টেস্টে ৪ উইকেটে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল জেসন হোল্ডারের দল। নানা বাঁক পেরিয়ে শেষ সেশনে ২০০ রানের লক্ষ্য স্পর্শ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফল যতটা বলছে, ততটা সহজ ছিল না ক্যারিবিয়ানদের জয়। ইংলিশ পেসারদের দারুণ বোলিংয়ে তাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে প্রতিটি রানের জন্য। ফিল্ডিংয়ে ইংলিশরা এমনিতে বেশ ভালো; তবে দিনটি তাদের ভালো কাটেনি। হাতছাড়া হয়েছে সহজ-কঠিন বেশ কয়েকটি ক্যাচ। কাজে লাগাতে পারেনি রান আউটের সুযোগ। চতুর্থ ইনিংসে দুশ কিংবা এর কম লক্ষ্য তাড়ায় কখনো না হারা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শুরুতেই নাড়িয়ে দেন আর্চার। তার দারুণ গতিময় এক ডেলিভারিতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন জন ক্যাম্পবেল। আরেক ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট হন বোল্ড। রানের খাতা খোলার আগেই এলবিডবিস্নউ শামারাহ ব্রম্নকস। আর শাই হোপকে দ্রম্নত ফেরান মার্ক উড। ২৭ রানে নেই ৩ উইকেট। চোটের জন্য ক্যাম্পবেল বাইরে থাকায় বেশ বিপদে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রোস্টন চেজ ও জার্মেইন বস্ন্যাকউডের দৃঢ়তায় শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় ক্যারিবিয়ানরা। স্বাগতিকদের বাজে ফিল্ডিংয়ের সুযোগ ভালোভাবে কাজে লাগায় তারা। অসাধারণ এক বাউন্সারে চেজের প্রতিরোধ ভাঙেন আর্চার। ভাঙে ৭৩ রানের জুটি। আর্চার পরে ভোগান নতুন ব্যাটসম্যান শেন ডাওরিচকে। ৫ রানে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া এই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে বস্ন্যাকউডের জুটিতে এগিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরে হোল্ডারকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন বস্ন্যাকউড। ছিলেন দ্বিতীয় সেঞ্চুরির পথে। স্টোকসের বলে মিডঅফে জেমস অ্যান্ডারসনের হাতে ধরা পড়ে থামেন ৯৫ রানে। তার ১৫৪ বলের ইনিংস গড়া ১২ চারে। এর আগে দুবার অ্যান্ডারসনের মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে বাউন্ডারি পেয়েছিলেন বস্ন্যাকউড। তৃতীয়বারে আর পারেননি। তার বিদায়ের সময় জয় থেকে ১১ রান দূরে ছিল সফরকারীরা। চাপে ভেঙে পড়েনি দলটি। শুরুতে চোট পাওয়া ক্যাম্পবেল ফেরেন ক্রিজে। উডের গতিময় ডেলিভারি আঘাত হানে তার হেলমেটের গ্রিলে। তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। হোল্ডারকে নিয়ে দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে।