ম্যানসিটিকে হারিয়ে ফাইনালে আর্সেনাল

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
এফএ কাপের প্রথম সেমিতে রোববার ম্যানসিটির বিপক্ষে গোল করছেন আর্সেনালের পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং -ওয়েবসাইট
লিভারপুলের কাছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা হারিয়েও ত্রিমুকুট (ট্রেবল) জয়ের আশা টিকে ছিল ম্যানচেস্টার সিটির। লিগ কাপ জেতা হয়েছে, এফএ কাপ বাকি, সামনে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-ত্রিমুকুট আসতেই পারত। কিন্তু শনিবার রাতে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটির জন্য এফএ কাপ অতীত হয়ে গেছে। এদিন রাতে এফএ কাপের সেমিফাইনালে পেপ গার্দিওলার ম্যানসিটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেছে আর্সেনাল। ম্যাচের ১৯ ও ৭১ মিনিটে গোল দুটি করেছেন গানারদের গ্যাবনিজ স্ট্রাইকার পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের টেবিলে আর্সেনালের অবস্থান ১০ নম্বরে। কিন্তু এফএ কাপ এলেই অন্যরকম হয়ে ওঠে এই টুর্নামেন্টের সফলতম দল। আগের ২০ বার ফাইনালে খেলে ১৩ বার শিরোপা জিতেছে গানাররা। সর্বশেষ শিরোপা জয় তিন বছর আগে ২০১৭ সালে। তাইতো তিন বছর পর কি গানারদের হাতে ১৪তম শিরোপা উঠতে যাচ্ছে? এফএ কাপ জিতলেই শুধু আগামী বছর ইউরোপে (ইউরোপা লিগ) খেলার সুযোগ হবে। না হলে হয়তো অবামেয়াংয়ের মতো স্ট্রাইকারকে আর ধরে রাখা যাবে না। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে মাঠের লড়াইটা আসলে ছিল ম্যানসিটি বনাম আর্সেনাল। পেপ গার্দিওলা বনাম মিকেল আর্তেতা। দুই স্প্যানিশ কোচের লড়াইয়ে নবীন আর্তেতা রণকৌশলে হারিয়ে দিয়েছেন তার বিখ্যাত প্রতিপক্ষকে। কৌশলটা খুব সাধারণ। আর্তেতা জানতেন ম্যানসিটি খেলবে পজেশন নির্ভর হাই-প্রেসিং ফুটবল। সুতরাং রক্ষণটাকে দারুণ সাজিয়েছিলেন তিনি। ৫-৩-২ ফর্মেশনে দুর্গ গড়ে রেখেছিলেন তিন সেন্টার ব্যাক রেখে। সঙ্গে অবামেয়াংয়ের নেতৃত্বে ক্ষুরধার প্রতি-আক্রমণ। এতেই অকার্যকর হয়ে গেল সিটিজেনের যত আক্রমণ। আক্রমণ যদি ক্ষুরধার না হয়, না হয় লক্ষ্যভেদী, বলের দখল রেখে যে কিছু হয় না তার প্রমাণ পাওয়া গেল আবারও। পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে সিটিজেনরা বল দখল ছিল শতকরা ৭১ ভাগ, আর্সেনালের ২৯। ম্যানসিটি গোলে শট নিয়েছে ১৬টি, যেখানে লক্ষ্যে ছিল মাত্র একটি শট। আর উল্টোদিকে আর্সেনালের চারটি গোলমুখী শটের চারটিই ছিল লক্ষ্যে, দুটি থেকে এসেছে দুটি গোল। প্রথম ১৫ মিনিট পর্যন্ত তো সিটিজেনদের বল দখল ছিল ৯০ শতাংশ। কিন্তু এই চাপ কী অসাধারণভাবেই সামাল দিয়েছে আর্সেনালের রক্ষণ। রক্ষণের নেতা কিন্তু সেই ডেভিড লুইজ, লকডাউনের পর আবার প্রিমিয়ার লিগ শুরু হতে যার দোষে ম্যানসিটির কাছে ৩-০ গোলে হেরেছিল আর্সেনাল। একটি আত্মঘাতী গোল করেছিলেন, পেনাল্টি উপহার দিয়ে লালকার্ড দেখেছিলেন। লুইজের পাশে এদিন রাতে অবশ্য সবাই অসাধারণ খেলেছেন শখোদ্রান মুস্তফি, নিকোলাস পেপে, গ্রানিত জাকা এবং অবশ্যই টায়ারনি। তিন দিন আগে লিভারপুলকে লিগে হারিয়ে তাদের রেকর্ড ১০০ পয়েন্ট পাওয়ার আশা শেষ করে দিয়েছেন। এবার হারালেন আরেক পরাশক্তি ম্যানসিটিকে। অসাধারণ একটা সপ্তাহ গেল আর্তেতার। তবে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল জিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডই হোক বা চেলসি, কাউকে ভয় পাচ্ছেন না আর্সেনাল কোচ। তার কথা, কে সামনে দাঁড়ালো তা নিয়ে আমি মোটেই ভাবি না। ছেলেদের ওপর আমার বিশ্বাস আছে। তাদের মধ্যে দারুণ একটা রসায়ন তৈরি হয়েছে, আর তারা জানে কী করতে হবে।' হারের পর গার্দিওলার আত্মোপলব্ধি, 'ম্যাচ হেরেছি দুঃখ নেই। সব ম্যাচ জিততেও পারব না। কিন্তু দুঃখ হলো আজ রাতে আমরা মোটেই ভালো খেলতে পারলাম না। প্রথমার্ধে আমাদের শুরুটাই হয়েছিল বাজে। আমরা তো জানতাম তারা হাই- প্রেসিংয়ের বিপক্ষে পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে নামবে। আমার মনে হয় আমরা প্রস্তুতই ছিলাম না।'