ফুটবলারদের ক্যাম্পে করোনার থাবা

প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বুধবার জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাম্পে যোগ দেয়ার কথা ছিল বিশ্বনাথ ঘোষেরও। কিন্তু তার আগেই সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট হাতে আসাতে সেই স্বপ্নটা পূরণ হয়নি দেশসেরা এই ডিফেন্ডারের -ফাইল ফটো
দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব ও এশিয়া কাপকে সামনে রেখে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় ফুটবল দলের আবাসিক ক্যাম্প। প্রথম দিন বাফুফে ভবনে রিপোর্টিং করেছেন ১২ জন ফুটবলার। সকাল সাড়ে ৮টায় বাফুফে ভবনে এসে একে একে প্রবেশ করেন ফুটবলাররা। তবে ফুটবল ক্যাম্পের শুরুতেই মিলেছে দুঃসংবাদ। জাতীয় দলের অন্যতম ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ সস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এই ফুটবলার। কোভিড-১৯ এর থাবায় দীর্ঘদিন মাঠে নেই ফুটবল। যে কারণে ফুটবলারদেরও একজনের সঙ্গে অন্যজনের দেখাসাক্ষাৎ নেই বললেই চলে। ক্যাম্প উপলক্ষে ঈদের পর একসঙ্গে ১২ ফুটবলার। সবাই একসঙ্গে হওয়ায় বেশ স্বতঃস্ফূর্ত ছিলেন তারা। একসঙ্গে সকালের নাশতা সেরে সাড়ে ৯টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেলে করোনা পরীক্ষার উদ্দেশ্যে যান বিপলু-মানিকরা। করোনা পরীক্ষা শেষে আবারও বাফুফেতে ফিরে যান সবাই। করোনা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ফুটবলাররা গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টে ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। ৬ ও ৭ আগস্ট আরও দুইটি গ্রম্নপ করোনা পরীক্ষা শেষে ক্যাম্পে যোগ দেবেন তারা। তবে বাফুফের এই করোনা পরীক্ষার আগে ফুটবলারদের ব্যক্তিগতভাবে করোনা পরীক্ষা করিয়ে ক্যাম্পে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। সেই পরীক্ষাটা উৎরাতে পারলেন না বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলার বিশ্বনাথ ঘোষ। ৩ আগস্ট তিনি করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। যার ফলাফল তার হাতে আসে মঙ্গলবার। সেই রিপোর্টে কোভিড-১৯ 'পজিটিভ' এসেছে বিশ্বনাথের। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এই ফুটবলার নিজেই। এই প্রসঙ্গে বিশ্বনাথ বলেছেন, 'করোনায় পরীক্ষায় আমিসহ আমার স্ত্রী পজিটিভ হয়েছি। যদিও আমার কোনো লক্ষণ নেই। এখন পর্যন্ত ভালো আছি। তাই জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দেওয়া হয়নি।' বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের জন্য তিন ভাগে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা ক্যাম্পে উঠবেন। প্রস্তুতি পর্বে খেলোয়াড়দের ৪ থেকে ৫ জনের গ্রম্নপে বিভক্ত রাখা হবে। এভাবে ১৪ দিন তারা কোচের নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রম্নপভিত্তিক অনুশীলন করবেন। দুই সপ্তাহ শেষে যখন বাফুফে নিশ্চিত হবে তাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে কোনো ঝুঁকি নেই, তখন তারা একসঙ্গে হতে পারবে, অনুশীলন করতে পারবে। এছাড়া বিদেশি কোচদেরও আইসোলোশনে রাখা হবে। তাদেরও কোভিড-১৯ পরীক্ষা করতে হবে। দেখা হবে তাদের কোনো স্বাস্থ্যের ঝুঁকি আছে কিনা। রিসোর্টে যা কিছু প্রয়োজন তা ফেডারেশনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে বাফুফে। শুরুতে ৩৬ জন খেলোয়াড়কে ডাকা হয়েছিল প্রাথমিক ক্যাম্পে। কিন্তু অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও ডিফেন্ডার কাজী তারিক রায়হান ইউরোপে থাকায় আপাতত যোগ দিতে পারছেন না। আর বসুন্ধরা কিংসের তিন ফুটবলার আতিকুর রহমান ফাহাদ, মাশুক মিয়া জনি ও মতিন মিয়াও ক্যাম্পে যোগ দিতে অনুমতি দেয়নি তাদের ক্লাব বসুন্ধরা কিংস। এই তিন ফুটবলারই ইনজুরিতে ছিলেন। বসুন্ধরা কিংস আগেই জানিয়েছিল, তাদের চোট পাওয়া এবং চোট কাটিয়ে ওঠা ফুটবলারদের আগস্টের মাঝামাঝিতে ক্যাম্পে ডাকবে। সেপ্টেম্বরে তারা শুরু করবে এএফসি কাপের জন্য ক্যাম্প। তার আগে তাদের এই তিন ফুটবলারকে ক্লাবের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করাবে বলে বাফুফেকে জানিয়ে দিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। ক্যাম্প শেষে ম্যাচের আগে জেমির চূড়ান্ত দলে ঠাঁই হবে ২৪ অথবা ২৫ জন ফুটবলারের। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ খেলছে 'ই' গ্রম্নপে। পরবর্তী ম্যাচগুলো প্রথমটি ৮ অক্টোবর খেলবে লাল-সবুজরা। যেখানে জামাল ভুইয়ার দলের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। এরপর ১৩ অক্টোবর কাতারের বিপক্ষে এ্যাওয়ে ম্যাচ। পরের দুই ম্যাচই ঘরের মাটিতে। ১২ নভেম্বর ভারত ও ১৭ নভেম্বর ওমানের বিপক্ষে খেলবে জেমির শিষ্যরা। ঘরের মাঠের তিনটি ম্যাচই হবে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে।