সাকিবের ফেরার মিশন শুরু

স্কিল ট্রেনিংয়ে ৩৩ বছর বয়সি এই অলরাউন্ডারকে সহায়তা করবেন তার ঘনিষ্ঠ দুই কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। দীর্ঘদিন বিসিবিতে কাজ করার পর নাজমুল আবেদীন এখন বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা। সাকিবের বরাবরের 'মেন্টর' ও দেশের সেরা কোচদের একজন সালাউদ্দিন থাকেন বিকেএসপি ক্যাম্পাসেই।

প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
অনুশীলন করছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান -ফাইল ফটো
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। শনিবার বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) সেরেছেন প্রথম দিনের ফিটনেস সেশন। বিকেএসপি সূত্রে জানা গেছে, শৈশবের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের অধীনে অনুশীলন করেন সাকিব। রানিং দিয়ে শুরু হয় দিনের কার্যক্রম। প্রাথমিকভাবে এক সপ্তাহের অনুশীলন পরিকল্পনা তৈরির ভার সাকিব ছেড়ে দিয়েছেন সালাউদ্দিনের কাঁধেই। সাকিব শনিবার সকাল থেকেই শুরু করে দিয়েছেন ফিটনেস ট্রেনিং। এনিয়ে বিকেএসপির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, 'শনিবার বিকেএসপিতে আসার কথা ছিল সাকিবের তবে সে শুক্রবার দুপুরেই চলে আসে। ও এখানে মধুমতি ভিআইপি রেস্ট হাউজে উঠেছে। আগামী দুই মাস এখানেই থাকবে। কোচ সালাহউদ্দিন ও নাজমুল আবেদীন ফাহিম স্যার তার অনুশীলনের দিক নির্দেশনা দেবেন।' মোহাম্মদ আশরাফউজ্জামান আরও বলেন, 'আজ সকাল থেকে সাকিব অনুশীলন শুরু করেছে। সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত রানিং ও জিম করেছে। যতদূর জানি প্রথম এক সপ্তাহ তার ফিটনেস অনুশীলন চলবে। এরপর স্কিল (ব্যাটিং, বোলিং)।' স্কিল ট্রেনিংয়ে ৩৩ বছর বয়সি এই অলরাউন্ডারকে সহায়তা করবেন তার ঘনিষ্ঠ দুই কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। দীর্ঘদিন বিসিবিতে কাজ করার পর নাজমুল আবেদীন এখন বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা। সাকিবের বরাবরের 'মেন্টর' ও দেশের সেরা কোচদের একজন সালাউদ্দিন থাকেন বিকেএসপি ক্যাম্পাসেই। ঘরোয়া ক্রিকেট নেই বলে আপাতত ব্যস্ততাও নেই তার। এই দুজনের তত্ত্বাবধানে চলবে সাকিবের স্কিল ঝালাই পর্ব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট রাঙানোর স্বপ্ন পূরণে যে আঙিনায় গড়ে তুলেছেন নিজেকে, সেই বিকেএসপিতে এবার শুরু হয়েছে সাকিব আল হাসানের নতুন অভিযান। টাইগার অলরাউন্ডার বিকেএসপি পৌঁছান শুক্রবার দুপুরে। আবাসিক ক্যাম্প করার জন্য সাকিব উঠেছেন সেখানকার ভিআইপি রেস্ট হাউস মধুমতিতে। কৃতী প্রাক্তন ছাত্রকে সম্ভব সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দেবে বিকেএসপি। এখানকার অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক, সুইমিং পুল, সবই ব্যবহার করতে পারবেন সাকিব। প্রয়োজনে বিকেএসপির মনোবিদের সহায়তাও তিনি নিতে পারবেন। নিষেধাজ্ঞা না ওঠা পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অবকাঠামো ব্যবহার করার সুযোগ নেই। এজন্য সাকিব অনুশীলন করতে বেছে নিয়েছেন বিকেএসপিকে। এখানেই নিবিড়ভাবে অনুশীলন চালিয়ে যাবেন তিনি। নিজেকে প্রস্তুত করার মিশনে যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে পাঁচ মাস কাটিয়ে বুধবার ভোররাতে দেশে ফেরেন সাকিব। দেশে আসার আগেই এক দফা করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল পেয়ে এসেছেন। দেশে ফেরার পরদিন পরীক্ষা করিয়েছেন আরেক দফা। সেখানে 'নেগেটিভ' ফল পেয়েছেন শুক্রবার। এরপর আর দেরি করেননি সাকিব, চলে গেছেন বিকেএসপিতে। সব ঠিক থাকলে দুই মাস পর টাইগার অলরাউন্ডার খেলতে পারবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২৯ অক্টোবর এক বছর শাস্তির মেয়াদ শেষ হবে তার। জুয়াড়ির কাছ থেকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়ে তা আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে (আকসু) না জানানোর মাশুল দিয়ে চলেছেন সাকিব। ১০ মাস ধরে সব ধরনের ক্রিকেটের বাইরে তিনি। আরও কিছুদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে তাকে। টাইগার অলরাউন্ডারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগে শ্রীলংকা গিয়ে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। সফরে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ২৩ অক্টোবর শুরু হতে পারে। নভেম্বরের শুরুতে লঙ্কায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টই হতে পারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টাইগার অলরাউন্ডারের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ। কেননা বিসিবি চাইছে সাকিবকে দ্রম্নত খেলায় ফেরাতে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান কিছুদিন আগে জানিয়েছেন, শ্রীলংকায় দ্বিতীয় টেস্ট থেকেই খেলানো হবে সাকিবকে। সেজন্য নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সপ্তাহ দুয়েক আগে তাকে শ্রীলংকায় নিয়ে যাওয়ার ভাবনা আছে। দলের সঙ্গে না থেকে আলাদা করে অনুশীলন করবেন তিনি। জাতীয় দলের সাপোর্ট স্টাফরা আলাদা করে সেখানে ব্যাক্তিগতভাবে কাজ করতে পারবেন তার সঙ্গে।