সা ক্ষা ৎ কা র

পরিবেশের কারণে ভালো সংগঠকরা দূরে সরে গেছে : আমিনুল

বাংলাদেশের ফুটবলের জনপ্রিয় নাম আমিনুল হক। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এ গোলরক্ষক ছিলেন ২০১০ সাফজয়ী দলের অধিনায়ক। জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি খেলেছেন মোহামেডান ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের মতো দলে। তবে ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা পার করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রে। বাফুফের নির্বাচন সামনে রেখে নিজের অভিমত জানাতে সাবেক এ ফুটবলার মুখোমুখি হয়েছিলেন দৈনিক যায়যায়দিনের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ক্রীড়া প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান

প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আমিনুল হক
যায়যায়দিন : তিন মেয়াদে কাজী সালাউদ্দিনকে সফল না কি ব্যর্থ হিসেবে দেখবেন? আমিনুল : সত্যি বলতে আমি হতাশ। কারণ প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা ফলাফল পাইনি। বিগত ১২ বছরে সালাউদ্দিন ভাই দৃষ্টিগত তেমন কোনোকিছু করে দেখাতে পারেননি। সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলেরর্ যাংকিং নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। উনি গত নির্বাচনের সময় বলেছিলেন আর কখনো সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না। ওই টার্মই ছিল শেষ। হঠাৎ করে এসে উনার কথা আর কাজের যে অমিল পেলাম এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে। তার মতো একজন দায়িত্বশীল লোক। একজন লিজেন্ডারি ফুটবলার। তার কথা আর কাজে যদি মিল না থাকে তাহলে তার কাছ থেকে ভালো কি আমরা আশা করতে পারি! যায়যায়দিন : বলছিলেন আসল ক্রীড়া সংগঠকরা না কি দূরে সরে যাচ্ছে। এর কারণ কী? আমিনুল : বাংলাদেশে শুধু ফুটবল না। সব স্পোর্টসেই এমনভাবে রাজনৈতিকীকরণ করা হয়েছে যে, সেখানে যারা বাস্তবিক অর্থে এদেশের ফুটবল বা অন্যান্য ক্রীড়া সংগঠক তারা পুরোপুরি বিমুখ হয়ে গেছে। এই বিমুখতা আমাদের পুরো ক্রীড়াঙ্গনকেই যেকোনো সময় একটা খারাপ পজিশনে ফেলে দিবে বলে আমার মনে হয়। সঠিক সংগঠকদের হাতে যদি স্পোর্টসটা না থাকে তারা বিমুখ হয়ে যায়। যায়যায়দিন : এই একযুগে ফুটবলের কতটা উন্নতি হয়েছে বলে মনে করেন? আমিনুল : আমরা এখন সাফেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি না। ২০১১ পর্যন্ত আমরা বলতে পারি আমাদের যে দলটা ছিল আমরা সাফে অংশ নিতে গেলেই ভাবতে পারতাম যে আমরা ফাইনাল খেলব। ২০১০ এ আমরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হলাম। যেখানে আমি অধিনায়ক ছিলাম। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত আর তেমন কোনো ভালো ফল নেই। সাফ ফুটবলে আমরা এখন ভুটানের কাছে হেরে যাই। যেখানে আমরা কখনো চিন্তাও করিনি ভুটানের কাছে হেরে যাব। আমার কাছে মনে হয় চেয়ারের চেয়ে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে ভাবনাটা অনেক বড়। সেই ভাবনা থেকে আমার কাছে মনে হয় সালাউদ্দিন ভাই যদি সরে যেতেন বা অন্য কাউকে দায়িত্ব দিলে হয়তো একটা পরিবর্তন আসত। যেটা দরকার ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে। যায়যায়দিন : কাজী সালাউদ্দিন দায়িত্ব নেওয়ার পর নিয়মিত মাঠে খেলা থাকছে। নারী ফুটবলেও উন্নতি হয়েছে। এটাকে কি সফলতা হিসেবে দেখবেন না? আমিনুল : নিয়মিত ঘরোয়া ফুটবল মাঠে আছে সেটা অবশ্যই সফলতা। তবে নতুন ভালো মানসম্পন্ন ফুটবলার কিন্তু উঠে আসছে না। ফুটবলাররা ভালো পারিশ্রমিক পাচ্ছে। ভালো অনেক ক্লাব ফুটবলে আসছে এটা গুড সাইন। কিন্তু ভালো মানসম্পন্ন ফুটবলারের থেকে ভালো ক্লাবের সংখ্যা বেশি। যায়যায়দিন : ফুটবলের উন্নতি করতে তাহলে কী করা উচিত? আমিনুল : গ্রাস রুট লেভেলে নজর দিতে হবে। শুধু খেলার জন্য খেললাম এমনটা হওয়া উচিত না। আগের মতো বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলো নিয়মিত হচ্ছে না। এখনো হয়তো অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্ট হয়। তারপর সেই ফুটবলাররা টুর্নামেন্ট খেলে কোথায় হারিয়ে যাচ্ছেন তার কোনো খোঁজখবর থাকে না। জেলা লিগও নিয়মিত হচ্ছে না। ফুটবল যেমন একটা টিমওয়ার্ক। তেমনই ফুটবলের উন্নয়ন করতে হলেও সবার পরামর্শ নিতে হবে। যারা ফুটবলটাকে ভালোবাসে। ফুটবলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ছিল ফুটবলের উন্নয়নে তাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। যায়যায়দিন : এ ধরনের সুযোগ এলে আপনি কি ফুটবল ফেডারেশনের কোনো পদে নির্বাচন করবেন? আমিনুল : বর্তমানে ফেডারেশন নির্বাচন নিয়ে যে নোংরামি বা নিজেদের ভেতরে কাদা ছোড়াছুড়ি; যে রাজনীতিকরণ;- এমন পরিবেশে বাফুফের নির্বাচনে আসার চিন্তা করি না। রাজনীতির ঊর্ধ্বে যখন চিন্তা করব তখন আমাদের মতো অনেক মানুষই হয়তো চিন্তা করবে ফেডারেশনে একবার আমাদের আসা উচিত। ভবিষ্যতে এদেশের সমগ্র ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে।