সালাউদ্দিনের বড় আশ্বাস হবে ফুটবল উৎসব

বাফুফে কর্তৃক প্রতি মাসে দেশের নূ্যনতম একটি জেলায় দুদিনব্যাপী ফুটবল ফ্যাস্টিভালের আয়োজন করা হবে। একদিন বয়েজ ফ্যাস্টিভাল ও একদিন গার্লস ফ্যাস্টিভাল আয়োজিত হবে। কাজী সালাহউদ্দিন

প্রকাশ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
দীর্ঘ এক যুগ ধরে কাজী সালাউদ্দিন আছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি পদে। এই বারো বছরে তিনি কতটা সফল সেটা দেশের ফুটবল সংশ্লিষ্টরা জানেন। সেসব পেছনে ফেলে নতুন মেয়াদে আবারও বসতে চান দেশের ফুটবলের মসনদে। আগামী ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বাফুফের নির্বাচন। সেই নির্বাচনী লড়াইকে সামনে রেখে গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ৩৬ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছে কাজী সালাউদ্দিন নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ। আগামী চার বছরে তাদের পরিকল্পনা কী, আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহারে তা তারা তুলে ধরেছেন। দুই পাতার নির্বাচনি অঙ্গীকারে রয়েছে ফুটবলকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার নানান পরিকল্পনা। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় ফুটবল দল, ঘরোয়া ফুটবল, মহিলা ফুটবল, উন্নয়ন প্রকল্প ও বিভিন্ন টেকনিক্যাল দিকগুলোর উন্নয়ন। শুধু ইশতেহারই দেয়নি, তার সঙ্গে বিগত ১২ বছরে নিজেদের সাফল্যের খতিয়ানও তুলে ধরেছে। এর আগে অবশ্য এই পরিষদের প্রার্থীদের সবাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়ও করে দেওয়া হয়। নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে সালাউদ্দিন প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন, এবারের ভোটে নির্বাচিত হলে ফিফার র?্যাংকিংয়ে জাতীয় দলের বড় উন্নতি ঘটাতে কাজ করবেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় দলের র?্যাংকিং ১৫০ এর মধ্যে আনার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন। আরও প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন, এবারের ভোটে নির্বাচিত হলে ফিফার র?্যাংকিংয়ে জাতীয় নারী দলের বড় উন্নতি ঘটাতে কাজ করবেন তিনি। বাফুফে নির্বাচনে জয়ী হলে সারাদেশে প্রতিটি জেলায় প্রতি মাসে আয়োজন করা হবে ফুটবল উৎসব। কাজী সালাউদ্দিন বলেন, 'বাফুফে কর্তৃক প্রতি মাসে দেশের নূ্যনতম একটি জেলায় দুদিনব্যাপী ফুটবল ফ্যাস্টিভালের আয়োজন করা হবে। একদিন বয়েজ ফ্যাস্টিভাল ও একদিন গার্লস ফ্যাস্টিভাল আয়োজিত হবে।' টেকনিক্যাল বিভাগের ইশতেহারে আরও বলা হয়, প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে ফুটবল সেন্টারের আয়োজন করা হবে। খেলোয়াড়দের জন্য আন্তর্জাতিক মানের অনাবাসিক উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। সম্মিলিত পরিষদে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আছেন, কাজী সালাহউদ্দিন ও শফিকুল ইসলাম মানিক। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে আছেন- আব্দুস সালাম মুর্শেদী। বর্তমানে ফিফা র?্যাংকিংয়ে ১৮৭তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। লাল সবুজের প্রতিনিধিরা সালাউদ্দিনের সময়েই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বাজে অবস্থান ১৯৭-এ যায়। সবশেষ নির্বাচনের সময় ১৮৫তম অবস্থানে ছিল জাতীয় দল। অর্থাৎ চার বছরে বাংলাদেশের উন্নতি (!) দুই ধাপ অবনমন। তবে বর্তমান বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন এবার জোর দিয়েই বলেছেন, এবার ক্ষমতায় আসলে ২০২৪ সালের মধ্যে জাতীয় দলকে র?্যাংকিংয়ে ১৫০-এর কাছাকাছি অবস্থানে আনার জন্য তিনি ও তার প্যানেল কাজ করে যাবেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগতভাবে মনিটরিংয়ের আওতায় আনারও প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন সালাউদ্দিন। শুধু পুরুষ দলের উন্নয়ন নয়, বরং নারী ফুটবল দলের দিকেও মন দেয়ার কথা বলেছেন সালাউদ্দিন। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের বর্তমান র?্যাংকিং ১৩৪। তবে বাফুফে সভাপতি এবং তার প্যানেল প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন, নারী দলের উন্নয়ন ঘটিয়ে তাদের একশর মধ্যে আনা হবে। ঘরোয়া ফুটবল নিয়ে আবাহনী লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদও কিছু পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। এরমধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো- প্রিমিয়ার লিগ, ফেডারেশন কাপ, স্বাধীনতা কাপ, চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগসহ পাইওনিয়ার লিগ। এসবই আগের মতো আয়োজন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্কুল ফুটবলসহ মেয়েদের লিগ ও অন্য বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাও থাকছে। এমনকি বঙ্গবন্ধু জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপও অনুষ্ঠিত হবে দেশব্যাপী। আরও রয়েছে খেলোয়াড়দের নিবন্ধন কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করার ঘোষণা। নতুন প্রতিযোগিতার মধ্যে জেলা ও বিভাগের দল নিয়ে সারাদেশে শেখ রাসেল অনূর্ধ্ব-১০ প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রতিশ্রম্নতিও মিলেছে এই ইশতেহার থেকে।