সফর পেছালেও আশা ছাড়েনি বিসিবি

সব অনিশ্চয়তা দূর করে আমাদের জাতীয় দল শ্রীলংকা খেলতে যাচ্ছে। সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গিয়েছে। আশা করছি আগামী তিন-চারদিনের ভেতরে লংকান বোর্ডের সঙ্গে চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়ে যাবে। তবে এখনকার খবর হলো সফর হচ্ছে। আমরা শ্রীলংকা খেলতে যাব। সেই লক্ষ্যেই আমাদের কথাবার্তা এগিয়েছে। আকরাম খান

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের শ্রীলংকা সফর নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছেই না। এর আগে জানানো হয়েছিল চলতি মাসের আজকের দিনটিতেই দেশটিতে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে রওনা দেবে টাইগাররা। সে সম্ভাবনা এখন নেই বললেই চলে। নতুন খবর, পিছিয়ে গেছে মুমিনুল হকের দলের শ্রীলংকা সফরের তারিখ। বিষয়টি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি। আগামী ৭ থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে শ্রীলংকা সফরের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন বিসিবির এই পরিচালক। তবে শ্রীলংকার কাছ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে আরও দুই-তিনদিন অপেক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আকরাম খানের কথায় যা বোঝা যাচ্ছে, তাতে দুই দেশের বোর্ডের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা চলছে। এখন শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত পেলেই সফরসূচি চূড়ান্ত করতে বসে যাবে দুই বোর্ড। তবে সফরটি হলেও স্বাভাবিকভাবেই আগের দিনক্ষণ মেনে শ্রীলংকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা হবে না টাইগারদের। অনিবার্যভাবেই অন্তত সপ্তাহ দুয়েক হয়তো পিছিয়ে যাবে এই সফর। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কর্তাদের ধৈর্য্যের চরম পরীক্ষা নিচ্ছে শ্রীলংকা। টাইগারদের লঙ্কা সফর হবে কিনা সেটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছে না আয়োজক দেশের বোর্ড (এসএলসি)। তারপরও ইতিবাচক বার্তা পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করে যাচ্ছে বিসিবি। এসএলসি বাংলাদেশের জন্য নিজেদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কোয়ারেন্টাইনে ছাড় অনুমোদন করে নিলেও সেটি দেশটির কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সে গিয়ে আটকে যাওয়াতেই অপেক্ষা দীর্ঘ হচ্ছে। সফরকারী দলের জন্য স্বাগতিক দেশের কঠিন কোয়ারেন্টাইন গাইডলাইনের শিথিলতার সিদ্ধান্ত না হওয়ায় কারণে পিছিয়ে যাচ্ছে সফরটি। শনিবার বিসিবি কার্যালয়ে প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী, নির্বাচক ও কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে সভা করেন আকরাম। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, 'আমরা বসেছিলাম শ্রীলংকা সফর নিয়ে আলোচনায়। প্রাথমিকভাবে রোববার ফ্লাইট ছিল, কিন্তু যেহেতু যেতে পারছি না, কাজেই আমাদের পরিকল্পনা কী হবে তা নিয়ে নির্বাচক ও প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে সভা করেছি।' আকরাম খান বলেন, 'সব অনিশ্চয়তা দূর করে আমাদের জাতীয় দল শ্রীলংকা খেলতে যাচ্ছে। সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গিয়েছে। আশা করছি আগামী তিন-চারদিনের ভেতরে লঙ্কান বোর্ডের সঙ্গে চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়ে যাবে। তবে এখনকার খবর হলো সফর হচ্ছে। আমরা শ্রীলংকা খেলতে যাব। সেই লক্ষ্যেই আমাদের কথাবার্তা এগিয়েছে।' তিনি জানান, 'শ্রীলংকা ক্রিকেট বোর্ড থেকে সবশেষ আগের কথাই বলেছে। অর্থাৎ বিষয়টা ওদের হাতে নেই। ওরা আশা করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গত শুক্রবার কোনো খবর পাবে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে হয়তো পেয়ে যাবে। ওরা চেষ্টা করছে।' 'ওরা চাচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিরিজটা আয়োজন করতে। আমার মনে হয় ওরা ইতিবাচক আছে। আশা করছি সোমবার বা মঙ্গলবার চূড়ান্ত কিছু চলে আসবে। যদি ইতিবাচক হয়, আমরা আগামী মাসের ৭-১০ তারিখের মধ্যে যেতে পারি। যেহেতু ওদের যে শ্রীলংকান টি২০ লিগ (এলপিএল) হওয়ার কথা ছিল সেটা এখন নিশ্চিত না। অতএব ওদের কাছে সময় আছে।' শ্রীলংকা সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও মিরপুরে আনুষ্ঠানিক অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। অবধারিতভাবেই পিছিয়ে যাওয়া এ সফরের জন্য বিসিবি ক্রিকেটারদের তিন দিনের বিশ্রাম দিয়েছে। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন এ তথ্য। পূর্বনির্ধাতির সূচি অনুযায়ী শনিবারই ছিল টাইগারদের শেষ অনুশীলন। সফর পিছিয়ে যাওয়ায় প্রাথমিক দলের ২৭ ক্রিকেটার বিশ্রামে থাকবেন মঙ্গলবার পর্যন্ত। তার মধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে শ্রীলংকা সিরিজের ভাগ্য। যদি সফর না হয় তাহলে কী করবেন মুমিনুল-মুশফিকরা- এ প্রশ্নের জবাবে আকরাম বলেন, 'আমরা তো পরিকল্পনার মধ্যেই আছি। এখন তিন দিনের বিরতি দিয়েছি। এই তিনদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত এলে আমরা আবার অনুশীলন নিয়ে পরিকল্পনা করব।' 'বিসিবি সভাপতি (নাজমুল হাসান পাপন) তো বলেছেন যদি সফর না হয় একটা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট করব। সেটা আমাদের মাথায় আছে। পস্ন্যান 'এ', 'বি', 'সি' সব করাই আছে। আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ীই আছি। যেহেতু খেলোয়াড়রা ৭-৮ দিন অনুশীলন করে ফেলেছে সেহেতু একটা বিরতির দরকার আছে।' এর আগে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন এবং ওই সময়ে অনুশীলনে নিষেধাজ্ঞাসহ বেশকিছু শর্ত বেঁধে দেয় লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দাবি ছিল, কোয়ারেন্টিন ৭ দিনে নামিয়ে আনা। একইসঙ্গে কোয়ারেন্টিন চলাকালীন সময়ে অনুশীলনের দাবি জানায় বিসিবি। তবে এর কোনো কিছুই মেনে নেয়নি দেশটির কোভিড টাস্কফোর্স। সফরে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই সিরিজটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত।