ক্লাবগুলোরও ফুটবলারদের কথা ভাবা উচিত: নাসির উদ্দিন

ক্লাবগুলোর যদি অর্থনৈতিক সমস্যাই হয়ে থাকে তাহলে বিদেশি ফুটবলার ৪ জনের স্থানে দু'জন নিচ্ছে না কেন? আপনারা বলছেন ৬ ম্যাচ খেলে ফুটবলাররা পুরো মৌসুমের টাকা নিয়ে নিচ্ছে। আমরা যে ৪ মাস ধরে প্রস্তুতি নিলাম, ফেডারেশন কাপ খেললাম সেগুলো কে বলবে। বিদেশি ফুটবলাররা যে অনুশীলন করেছে তারা কি পুরোটাকা নিয়ে যায়নি? তাদের জন্য এক নিয়ম আমাদের জন্য আরেক নিয়ম কেন হবে?

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ফুটবল মাঠে নেই প্রায় সাত মাস। ফুটবলাররা বেকার বসে আছেন বাসাতেই। প্রিমিয়ার লিগ বা নতুন মৌসুমের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। যদিও বলা হচ্ছে, নভেম্বর থেকে শুরু হতে পারে আগামী মৌসুম। কিন্তু যে ফুটবলারদের দিয়ে উপকৃত হচ্ছে ক্লাবগুলো। সেই ফুটবলাররাই হয়েছেন অবহেলিত। তাদের কথা চিন্তা না করে ক্লাবের দিকটাই বেশি দেখেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এমনটাই অভিযোগ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ও ঢাকা আবাহনীর ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরীর। ফুটবল মাঠে নেই। কিভাবে নিজেকে এখনো ফিট রাখছেন? জানতে চাইলে নাসির বলেছেন, 'অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। চট্টগ্রামে মুজিব শতবর্ষ টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে। যেখানে আমি, মামুনুলসহ 'বি' লিগের চারজন ফুটবলার চারটি দল করেছি। এ টুর্নামেন্টে স্থানীয়দের সঙ্গে খেলার একটা সুযোগ পাচ্ছি। এতে করে আমাদের ফিটনেসটাও ঠিক থাকবে।' সম্প্রতি ক্লাবগুলোর সঙ্গে বসে ফুটবলারদের পারিশ্রমিকের বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে আপনাদের নতুন মৌসুমে গত বছরের পারিশ্রমিকের ২৫ শতাংশ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি? এমন প্রশ্ন করলে আক্ষেপ ঝরেছে নাসির উদ্দিনের কণ্ঠে, 'সব থেকে দুঃখজনক বিষয় হলো সালাম মুর্শেদীও একজন ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। উনি ফুটবলারদের দিকটা না দেখে ক্লাবের দিকটাই দেখলেন। এই ২৫ ভাগ টাকা দিয়ে কিভাবে একজন ফুটবলার সারা বছর চলবে। আরামবাগের মতো ক্লাবগুলোর কথা যদি ধরেন তাতে ২৫ শতাংশে একজন ফুটবলার হয়তো বছরে ১ লাখ টাকার মতো পাবে। এই টাকাটা দিয়ে কি পুরো বছর চলা সম্ভব!' 'পার্সেন্টিসের বিষয়ে পুরোপুরি খোলাসা করা হয়নি। ক্লাবগুলো দলবদলের আগে গত মৌসুমের ৪০/৪৫ ভাগ দেবে বলে শুনেছি। যদি তাই হয়। বাকি যে ৫৫ ভাগ থাকে সেটার দায়িত্ব কে নেবে? আমি আর মুন্না শেখ জামালের কাছে মোট ৯ লাখ টাকা পাই। এর মধ্যে আমি ৫ লাখ টাকা পাব। বাফুফেকে চিঠি দিয়ে তিন বছর ধরে এই পাওনা টাকার জন্য ঘুরছি। সেই টাকা আজও পাইনি।' যোগ করেন নাসির উদ্দিন। করোনাতে ক্লাবগুলোও তো অর্থনৈতিক সমস্যাতে আছে বলে দাবি করছে। তাহলে তাদের বিষয়ে ফুটবলারদেরও তো নমনীয় হওয়া উচিত। আপনি কি মনে করেন? নাসির উদ্দিন বলেন, 'তাদের যদি অর্থনৈতিক সমস্যাই হয়ে থাকে তাহলে বিদেশি ফুটবলার ৪ জনের স্থানে দু'জন নিচ্ছে না কেন? আপনারা বলছেন ৬ ম্যাচ খেলে ফুটবলাররা পুরো মৌসুমের টাকা নিয়ে নিচ্ছে। আমরা যে ৪ মাস ধরে প্রস্তুতি নিলাম, ফেডারেশন কাপ খেললাম সেগুলো কে বলবে। বিদেশি ফুটবলাররা যে অনুশীলন করেছে তারা কি পুরোটাকা নিয়ে যায়নি? তাদের জন্য এক নিয়ম আমাদের জন্য আরেক নিয়ম কেন হবে?' তাহলে আপনারা ফুটবলাররা বাফুফে সভাপতির কাছে যাচ্ছেন না কেন? নাসির উদ্দিন বলেন, 'আমাদের ২৪ তারিখ যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন সামনে নির্বাচন। তাই এর পর ৫ তারিখে হয়তো বসব। আর আমরা কার কাছে যাব? ফেডারেশনের সব কর্মকর্তারাই তো ক্লাবের দায়িত্বে। নাবিল, রূপু, তাবিথ ভাই সবাই তো ফেডারেশনেরই লোক। খেলোয়াড়দের কথাটা কে চিন্তা করবে?' আক্ষেপ করে নাসির উদ্দিন আরও বলেন, 'বসুন্ধরা ৭ মাস ক্যাম্প করেছে। শেখ জামাল ৬/৭ মাস। আর তিন থেকে সাড়ে তিন মাস হলেই লিগ কিন্তু শেষ। মোটামুটি ৫০ ভাগের উপর কভার করে ফেলেছে সময়। প্রস্তুতি যদি আমরা করে ফেলতে পারি। তার মানে কি লিগ অলমোস্ট শেষ। ৬ ম্যাচের আগে যে আমরা তিন মাস অনুশীলন করেছি তার মূল্যায়ন কে করবে। আজ সাত মাস ঘরে বসে খাচ্ছি। কে খোঁজ খবর নিল? কেউ না। অবহেলিত ফুটবলাররাই। আমাদের সঙ্গে বসার কথা ছিল বসেনি। ২৫ শতাংশ দিতে চেয়েছে ক্লাবগুলো মেনে নিয়েছে। এটা কেন। ফুটবলার এবং ক্লাবের দাবির মাঝখানে আসতে পারত। কোনো কিছুই তো হলো না।' যোগ করেন নাসির উদ্দিন।