বাংলাদেশের শ্রীলংকা সফর বাতিল

হতাশ মুমিনুল-মুস্তাফিজ

প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম সবাই মিলে। সিরিজও হবে হবে করছিল। করোনার কারণে ক্রিকেটের বাইরে থাকার একটা অন্যরকম হতাশা ছিল, মনে করেছিলাম তা কেটে যাবে। আমরা লঙ্কানদের সাথে সিরিজ দিয়ে আবার মাঠে ফিরবো; কিন্তু তা যখন হলো না, তখন খুব খারাপই লাগার কথা। সবার মন খারাপ। খারাপ লাগছে। আমারও তাই। মুমিনুল হক, টেস্ট অধিনায়ক আমাদের সবার মন খারাপ। মাঠে ফেরার সুযোগ এসেছিল। মনে হচ্ছিল করোনার ভয়াল থাবার ভেতরেও আমরা আবার ক্রিকেটে ফিরব। আবার বল ও ব্যাট হাতে মাঠে নামব। টেস্ট খেলার আশায় প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। আমি সাদা বলের চেয়ে লাল বলেই অনুশীলন করেছি বেশি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফর বাতিল হয়ে গেল। সবার মতো আমারও মন খুব খারাপ। মুস্তাফিজুর রহমান, বাঁহাতি পেসার

প্রকাশ | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
শ্রীলংকা সফরের জন্য সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। অপেক্ষা করছিলেন শুধু বিমানে চড়ার। সফরকে সামনে রেখে মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকারসহ প্রায় সব ক্রিকেটারই প্রচুর ঘাম ঝরিয়েছেন। করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে যেমন অনুশীলন করা যায়, তারা সবাই তাই করার চেষ্টায় ছিলেন। ঢাকার শেরেবাংলাসহ অন্যান্য স্টেডিয়ামে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গত দুই মাস অনুশীলন করেছেন ৩৫-৩৬ জন ক্রিকেটার। টাইগারদের শ্রীলংকা সফর বাতিলের ঘোষণায় তাই মুমিনুল হক, মুস্তাফিজুর রহমানসহ সবাই হতাশ। অন্য সবার মতো মন খারাপ টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকেরও। মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক বলেন, 'প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম সবাই মিলে। সিরিজও হবে হবে করছিল। করোনার কারণে ক্রিকেটের বাইরে থাকায় একটা অন্যরকম হতাশা ছিল, মনে করেছিলাম তা কেটে যাবে। আমরা লংকানদের সাথে সিরিজ দিয়ে আবার মাঠে ফিরব; কিন্তু তা যখন হলো না, তখন খুব খারাপই লাগার কথা। সবার মন খারাপ। খারাপ লাগছে আমারও।' তবে মুমিনুলের অনুভব ও উপলব্ধি হলো, ভেতরে রাজ্যের হতাশা এসে বাসা বাঁধলেও এ নিয়ে একদম হতাশায় মুষড়ে পড়ার কিছুই নেই। যে কারণে টু্যর বাতিল হয়েছে, তা পরিবেশ-পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকার কারণেই হয়েছে। মুমিনুলের কথা, 'পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আমরা ঠিকই শ্রীলংকা যেতাম। এখন করোনায় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণেই হবে হবে করেও সফর বাতিল হয়েছে। এটাতো আর কারো পক্ষে কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়। তাই খুব বেশি হতাশ হওয়ার কিছু নেই।' টেস্ট অধিনায়ক মনে করেন, 'আমি মনে করি আমরা যদি এই করোনাকালীন সময়ে প্রসেস ঠিক রেখে অনুশীলন চালিয়ে যেতে পারি, সেটাই মঙ্গল। কারণ হলো, আজ না হোক কাল, কাল না হয় পরশু কিংবা তার পরে খেলাতো হবেই। আলস্নাহর রহমতে এই করোনার ভয়াল রূপও সবসময় থাকবে না। এক সময় সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তার আগেও হয়তো আমাদের খেলতে হতে পারে। সেটা ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা আন্তর্জাতিক মঞ্চ যেখানেই হোক না কেন, তাই মাঠে ফেরার প্রস্তুতিটা নিয়ে রাখা দরকার। নিজেরা তৈরি থাকলে আবার মাঠে নেমে পারফর্ম করা কঠিন হবে না। আমি সামনের দিনগুলোয় সেই প্রসেস ঠিক রেখে অনুশীলন চালিয়ে যেতে চাই। শুনছি আমাদের দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট চালু হবে খুব শিগগিরই। মুখিয়ে আছি তাতে অংশ নিতে।' শ্রীলংকা সফর স্থগিত হওয়ায় একটু বেশিই মন খারাপ পেসার মুস্তাফিজের। সবার মতো কাটারমাস্টারও হতাশ। তারও মন খারাপ। পাশাপাশি একটা অন্যরকম আফসোস-আক্ষেপও আছে তার, যা নেই আর কারও। বলার অপেক্ষা রাখে না, মুস্তাফিজের সামনে ছিল আইপিএল খেলার হাতছানি। গত বছর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএল খেলা কাটার মাস্টারকে এবারও পেতে আগ্রহী ছিল তিন বড় দল কলকাতা নাইট রাইডার্স, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। তার ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রস্তাব ছিল ১ কোটি টাকার। কিন্তু একই সময় শ্রীলংকা সফর থাকায় বিসিবি থেকে আগেভাগেই না করে দেওয়া হয়েছিল। এক কথায় অনুমতি মিলেনি আইপিএল খেলার। সে আফসোসটাই প্রবল হয়ে দেখা দিচ্ছে এখন। নিজের মনকে প্রবোধ দেওয়া কঠিন হচ্ছে মুস্তাফিজের। অফার ছিল, কোটি টাকাও মিলত। কিন্তু যে সফর সামনে রেখে আইপিএল খেলতে যাওয়া হলো না, সেই সফর শেষ পর্যন্ত বাতিল হলো- এর চেয়ে আর আফসোসের কী থাকতে পারে? মঙ্গলবার আফসোসের কথাই শোনান বাঁহাতি এ পেসার। মুস্তাফিজ বলেন, 'আমাদের সবার মন খারাপ। মাঠে ফেরার সুযোগ এসেছিল। মনে হচ্ছিল করোনার ভয়াল থাবার ভেতরেও আমরা আবার ক্রিকেটে ফিরব। আবার বল ও ব্যাট হাতে মাঠে নামব। টেস্ট খেলার আশায় প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। আমি সাদা বলের চেয়ে লাল বলেই অনুশীলন করেছি বেশি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফর বাতিল হয়ে গেল। সবার মতো আমারও মন খুব খারাপ।' 'মন খারাপের পাশাপাশি আফসোসও হচ্ছে। কলকাতা ও মুম্বাই থেকে যোগাযোগ করেছিল। আমাকে পেতে খুবই উৎসাহী ছিল তারা। এ ছাড়া ব্যাঙ্গালুরু থেকেও শেষ দিকে ফোন করেছিল। শ্রীলংকা সফর না থাকলে হয়তো আমি ঠিকই চলে যেতাম আইপিএল খেলতে। গেলে যে সব ম্যাচ খেলতে পারতাম তা বলব না। তবে দলের সঙ্গে থাকা হতো, প্র্যাকটিস করা যেত। নিজেকে ধীরে ধীরে তৈরি করতে পারতাম। এক সময় ম্যাচ খেলার সুযোগ চলে আসত। আমার ক্যাটাগরিতে প্রস্তাবটা ছিল ১ কোটি টাকার। তা থেকেও বঞ্চিত হলাম। সব মিলে খারাপই লাগছে।'