তরুণদের পক্ষে সরব ওয়ালশ

প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
কোটির্ন ওয়ালশ
ভালো মানের পেসার উঠে আসছে না। বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিষয়টা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে দিন দিন। তবে প্রতিভার অভাব দেখছেন না জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ কোটির্ন ওয়ালশ। ক্যারিবীয় কিংবদন্তি অভাব দেখছেন সুযোগের। তার মতে, নিজেদের প্রমাণের পযার্প্ত সুযোগ পাচ্ছেন না তরুণ পেসাররা। ঘরের মাঠে স্পিন-সহায়ক উইকেট পেলে সাকিব, মিরাজ, তাইজুল বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন দারুণভাবে। তারা সামথর্্য রাখেন প্রতিপক্ষকে দু’বার অলআউট করার। পেসারদের পারফরম্যান্স নিয়ে তেমন না ভাবলেও চলে। কিন্তু বিদেশের মাটিতে তো নিজেদের পছন্দমতো উইকেট পাওয়া সম্ভব নয়। সেখানে দায়িত্ব চাপে পেসারদের কাঁধে। আর তখনই হয়ে যায় গড়বড়। শেষটায় ভালো করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরটা রাঙিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তবু ঘুরেফিরে আসছে টেস্টের হতশ্রী পারফরম্যান্সের কথা। দুই টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হারের জন্যে অনেকেই ব্যাটসম্যানদের দুষতে পারেন। তবে একই উইকেটে টাইগার বোলাররাও তো উইন্ডিজদের চেপে ধরতে পারেনি। অভিযোগের তীরটা তাই পেসারদের দিকেও যায়। সাম্প্রতিককালে পেসারদের আহামরি কোনো নৈপুণ্য নেই। পেসারদের সাফল্য না পাওয়া ও ভালো মানের পেসার তৈরি না হওয়া নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। জাতীয় দলের পেসাররাই মনে করেন, পাথর্ক্যটা তৈরি হচ্ছে ঘরোয়া ক্রিকেটেই। সেখানে স্পিনারদের আধিপত্যের কারণেই ভালো মানের পেসার তৈরি হচ্ছে না। এই হাহাকার অনেকদিনের। উন্নতি চোখ পড়ছে না বলেই চিন্তা বাড়ছে। অবশ্য ওয়ালশের কণ্ঠে ভিন্ন সুর। ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বরে পেস বোলিং কোচের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশে আসা এই কিংবদন্তি প্রতিভার অভাব দেখছেন না। পেসারদের মধ্যে শেখার আগ্রহেরও কমতি দেখছেন না তিনি। দুই বছর টাইগারদের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করে ওয়ালশের আক্ষেপ, তরুণ পেসবোলাররা যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছে না। আর এই সুযোগের অভাবেই তারা জাতীয় দলে ভ‚মিকা রাখতে পারছে না। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ আর শ্রীলংকার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে এবারের এশিয়া কাপ। ৬ জাতির এই টুনাের্মন্টে অংশ নিতে আজ সন্ধ্যায় দেশ ছাড়বে টাইগাররা। ইতোমধ্যে ঘোষণা হয়েছে চ‚ড়ান্ত দল। ঘোষিত দলে রয়েছেন চার পেসার। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জার সঙ্গে রয়েছেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন আর আবু হায়দার রনি। এশিয়া কাপ খেলতে আরব আমিরাতে যাওয়ার আগে শনিবার মিরপুরে দলের পেস বোলিং কোচ ওয়ালশ গণমাধ্যমকে বললেন, ‘টেস্টে আমরা ততটা উন্নতি করিনি। ওয়ানডে আর টি২০তে কিছুটা হয়েছে। তবে দলে তরুণ কয়েকজন বোলার উঠে এসেছে। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্টে আমাদের পারফরম্যান্স এতটাই হতাশাজনক ছিল যে প্রত্যাশার ধারেকাছেও যেতে পারেনি। তবে আমার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আরও কয়েকজন প্রতিভাবান পেসার পাব বলে আশা করছি।’ এশিয়া কাপের দল নিবার্চনের পর ঢাকায় এসেছেন ওয়ালশ। ঘোষিত দলে তরুণদের সুযোগ না পাওয়া নিয়ে আক্ষেপ ফুটে উঠেছে তার কণ্ঠে, ‘বেশ কজন তরুণ ক্রিকেটার উঠে আসছে। কিন্তু দলে না নেয়া হলে তো বোঝা যাবে না তারা কেমন! আমার মনে হয়, এদিকটায় আমাদের আরেকটু বেশি মনোযোগ দেয়া উচিত। আমার মনে হয়, আমরা তরুণদের সুযোগ দিতে একটু বেশিই ভয় পাই। আমরা যদি ওদের শুধু অপেক্ষায় রাখি এবং খেলার সুযোগ না দেই, তাহলে তো লাভ নেই। যত খেলবে ওরা, তত শিখবে। খেললেই অভিজ্ঞতা বাড়বে। ওরা প্রস্তুত নয় বলে যদি সুযোগ না দেয়া হয়, তাহলে তো ওরা কখনই প্রস্তুত হবে না!’ তরুণদের যথেষ্ট ক্ষুধা নেই, শেখার আগ্রহ নেই বলে অভিযোগ ওঠে প্রায়ই। ওয়ালশের অবশ্য সেই অভিযোগ নেই। বরং আবারও বললেন যথেষ্ট সুযোগ না দেয়ার কথা, ‘আমি বলব না ক্ষুধা নেই। আমার মনে হয় ওদের যথেষ্ট ধারাবাহিকভাবে সুযোগ দেয়া হয়নি। তরুণদের যথেষ্ট সুযোগ দিতে হবে। একটি-দুটি ম্যাচ খেলিয়েই বাদ দেয়া যাবে না। পারফরম্যান্স ভালো-খারাপ হবেই। কিন্তু একটু খারাপ করলেই সবাই বাদ দিতে উঠে পড়ে লাগে। এসবে লাভ বেশি হবে না। কেউ খারাপ করলে শোধরানোর সুযোগ দেয়া উচিত। যে তরুণ ক্রিকেটারদের আমি দেখেছি, ওরা যথেষ্ট আগ্রহী, শিখতে চায়, পারফমর্ করতে চায়। ওদেরকে সুযোগটা দিতে হবে।’ মাশরাফিকে নিয়েও কথা বলেছেন ওয়ালশ, ‘ম্যাশের অভিজ্ঞতা ও ওর স্কিলসেট অন্যদের থেকে অনেক আলাদা। আরও ভালো। বরাবরই সে দারুণ এক ফাস্ট বোলার।’ পেস বোলিং কোচ কথা বলেছেন মুস্তাফিজকে নিয়েও, ‘এই সফরটি মুস্তাফিজের জন্য খুব ভালো হতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে সে ভালো করেছে। ইনজুরিগুলো যদি দূরে থাকে সে আরও ভালো করবে। কারণ, সে স্পেশাল প্রতিভা, তার স্কিলও স্পেশাল।’