পিছিয়ে গেল প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনাল

করোনা-পরবর্তী ক্রিকেট ফেরাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনন্য এক উদ্যোগ প্রেসিডেন্টস কাপ। অল্প সময়ে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করা এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল আজ শুক্রবার। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বিসিবি থেকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত শুক্রবারের ফাইনাল হবে না। তিন দলের এই ফাইনাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে রোববার।

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে আসেন দুই দলের ক্রিকেটাররা -বিসিবি
সবকিছু চূড়ান্তই ছিল। দুই দলের অধিনায়ক ফাইনাল নিয়ে আনুষ্ঠানিক কথাও বলে ফেলেছেন। ফাইনালের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছিল উভয় দল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বদলে ফেলা হয়েছে তারিখ। এমন সময়ে পিছিয়ে গেল প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনাল। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের কারণে দুইদিন পিছিয়ে গেছে ম্যাচটি। ওয়ানডে ফরম্যাটের বিসিবি প্রেসিডেন্ট'স কাপের ফাইনালের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে রোববার। ফাইনালে মুখোমুখি হবে নাজমুল একাদশ ও মাহমুদউলস্নাহ একাদশ। করোনা-পরবর্তী সময়ে ক্রিকেট ফেরাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনন্য এক উদ্যোগ প্রেসিডেন্টস কাপ। অল্প সময়ে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করা এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল আজ শুক্রবার। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বিসিবি থেকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত শুক্রবারের ফাইনাল হবে না। নাজমুল হোসেন শান্ত আর মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের দলের প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনালের বিষয়ে বিসিবি থেকে জানানো হয়েছে যে, আগামী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখেই ফাইনাল পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনো কারণে সেদিনও বৃষ্টি হলে সোমবার রিজার্ভ ডেতে যাবে খেলা। যদিও রবিন লিগের ম্যাচের মতো ফাইনালেও একদিন রিজার্ভ ডে ছিল। কিন্তু বিসিবি আর কোনোরকম দ্বিধা-সংশয়ে থাকতে নারাজ। নতুন সূচি অনুযায়ী, দুইদিন পিছিয়ে আগামী ২৫ অক্টোবর রোববার ফাইনালটি নেওয়া হয়েছে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে। বিসিবি প্রেসিডেন্ট'স কাপের লিগ পর্বের খেলা শেষ হয়েছে বুধবার। এদিন রাউন্ড রবিন পর্বের শেষ ম্যাচে নাজমুল একাদশের কাছে ৭ রানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়েছে তামিমের দল। সহজ ম্যাচ হেরে যাওয়ায় হতাশা লুকিয়ে রাখতে পারেননি অধিনায়ক তামিম ইকবাল। নিজেরা ফাইনালে খেলার যোগ্যতা রাখেন না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। নাজমুল একাদশের বিপক্ষে ম্যাচটা কোনোমতে জিতলেই ফাইনালে উঠতেন তামিমরা। ৪১ ওভারের ম্যাচে তামিমদের লক্ষ্য মোটেও কঠিন কিছু ছিল না। মাত্র ১৬৪ রানের লক্ষ্যে নেমে এমন নাকানি-চুবানি খেয়ে পরাজয় মেনে নিতে পারছেন না দেশসেরা ওপেনার। অর্ধশতক হাঁকিয়ে দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন তামিম। তবে তার বিদায়ের পর অন্য ব্যাটসম্যানরা আসা যাওয়ার মিছিলে শামিল হলে খেই হারিয়ে ফেলে দল। অবশ্য ব্যর্থতার জন্য তামিম নিজেকেও কাঠগড়ায় রাখছেন। হতাশা প্রকাশ করে তামিম বলেন, 'পুরো টুর্নামেন্টে আমরা যেভাবে ব্যাটিং করেছি, তাতে আমার মনে হয় আমরা ফাইনালে খেলার যোগ্যতা রাখি না। আমি যখন আউট হয়েছিলাম তখনো কিন্তু বলের সঙ্গে রানের ব্যবধান অনেক ছিল। প্রয়োজনীয় রানের চেয়ে ৩০ বল বেশি ছিল। কিন্তু ওই জায়গা থেকে যে এভাবে ম্যাচ হারব এটা আমি নিজেও কল্পনা করিনি। তিন ম্যাচেই আমরা দল হিসেবে ভালো ব্যাট করতে পারিনি।' চার ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছে তামিম একাদশ। ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলেও বোলারদের প্রশংসা করতে ভোলেননি তামিম। তিনি বলেন, 'সব ম্যাচেই আমাদের বোলিং ইউনিট ভালো পারফর্ম করেছে। সাইফউদ্দিন, শরিফুল, মেহেদী ওদের পারফরম্যান্স সত্যিই ভালো ছিল। তবে আমিসহ সকল ব্যাটসম্যানের পারফরম্যান্স যতটা ভালো হওয়ার কথা ছিল তার কাছাকাছিও যায়নি।' শেষ ম্যাচে এসে নির্ধারিত হয়েছে টুর্নামেন্টের ফাইনালিস্ট। এদিন নাজমুল একাদশের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিম কাঁধে চোট পেয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবির) প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন মুশফিকের ইনজুরি তেমন গুরুতর নয়। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন ফাইনাল ম্যাচটি টিভিতে সম্প্রচার করা হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী ফাইনাল ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। একদিনের এই টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল সবগুলো ম্যাচ না হলেও অন্তত ফাইনাল ম্যাচ টিভিতে দেখানোর ব্যবস্থা করা হবে। শেষ পর্যন্ত কথা রেখেছে বিসিবি। যদিও বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা নিজেদের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে অনলাইন স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে খেলাগুলো সরাসরি সম্প্রচার করে আসছে। নাজমুল একাদশ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে এক ম্যাচ আগেই নিশ্চিত করেছিলেন ফাইনাল। ৪ ম্যাচে তিন জয়ে নাজমুল একাদশের পয়েন্ট ছিল ৬। বুধবার ফাইনালে যেতে জয়ের বিকল্প ছিল না তামিমের দলের। কিন্তু হেরে গিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যান তারা। চার ম্যাচে কেবল এক জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তলানিতে অবস্থান তামিম একাদশের। ফাইনালের আরেক দল মাহমুদউলস্নাহর একাদশ দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থেকে শেষ করে লিগ পর্ব। শ্রীলংকা সফর স্থগিত হওয়ার পর ক্রিকেটারদের মাঠে রাখতে নিজেদের মধ্যে বেশ কিছু ম্যাচ আয়োজন করে বিসিবি।