এই টুর্নামেন্ট দিয়ে ব্যাটসম্যানের বিচার করা অন্যায় : ডমিঙ্গো

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
'আমার মনে হয় গণমাধ্যম চায় খেলোয়াড়রা সবসময় ভালো করুক, যেটা বাস্তবিক নয়। বিশেষ করে ছয়-সাত মাস পর খেলায় নামলে তো খুব ভালো হয় না। আমি আশা করব গণমাধ্যম খেলোয়াড়দের সমর্থন দেবে, কঠোর বিচার না করে পাশে থাকবে। ছেলেদের নিশ্বাস ফেলার সুযোগ দিতে হবে।' রাসেল ডমিঙ্গো প্রধান কোচ
সাত মাসের স্থবিরতা পার করে প্রেসিডেন্ট'স কাপ দিয়ে ফিরেছিল দেশের ক্রিকেট। তবে লম্বা বিরতির পর বোলাররা ছন্দে থাকলেও বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই করেছেন হতাশ। বিশেষ করে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের রানের দেখাই নেই। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো এই টুর্নামেন্ট দিয়ে খেলোয়াড়দের বিচার করাটাকে ন্যায্য মনে করছেন না। তিন দলের সাত ম্যাচের প্রেসিডেন্ট'স কাপের বাকি আছে কেবল ফাইনাল। শুক্রবারের বদলে তা হবে রোববার। কিন্তু এই ছয় ম্যাচে জাতীয় দলের তারকাদের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন কেবল মুশফিকুর রহিম। তার ব্যাট থেকে এসেছে এক সেঞ্চুরি আর দুই ফিফটি। দুই ফিফটি করেছেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। তরুণ আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকে এসেছে উলেস্নখযোগ্য রান। ইমরুল দুই ম্যাচে থিতু হয়ে ইনিংস আগাতে পারেননি। চার ম্যাচ খেলে তামিম ইকবাল করেছেন এক ফিফটি। তাতেও দলকে জিতিয়ে কাজটা শেষ করে আসতে পারেননি তিনি। ওপেনিংয়ে তার সম্ভাব্য সঙ্গী লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাঈম শেখরা ছিলেন নিষ্প্রভ। রান আসেনি নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ মিঠুনদের কাছ থেকেও। জাতীয় দলের বাইরের ক্রিকেটারদের মধ্যে তরুণ তৌহিদ হৃদয়, ইরফান শুক্কুররা ভালো করেছেন। এক ম্যাচে ভালো করেছেন ইয়াসির আলি। তবে প্রায় সবাইকেই বাজে শট খেলে আউটের পাশাপাশি জড়োসড়ো দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে বাংলাদেশের কোচ জানালেন, ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা এই মুহূর্তে ন্যায্য না, 'আমার মনে হয় এটা অন্যায্য প্রশ্ন (ব্যাটসম্যানদের রান না পাওয়া)। আপনাকে মনে রাখতে হবে তারা গত সাত মাসে খেলেনি। কোনো সন্দেহ নেই খেলোয়াড়েরা আরও ভালো করবে। তারা ক্রমাগত খারাপ করছে, এটা বলাটা অন্যায়। ছয়-সাত মাস আগেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তারা ৩৪০ করেছে। লিটন ১৮০ (আসলে ১৭৬) করেছে। তামিম দুটো সেঞ্চুরি করেছে। কাজেই আমার মনে হয় প্রশ্ন তোলা অন্যায়। সবচেয়ে ইতিবাচক হচ্ছে ছেলেরা অবশেষে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে। পারফরম্যান্স এখানে আমার কাছে মুখ্য ছিল না।' প্রস্তুতিমূলক এই আসরে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে গণমাধ্যমকে কঠোর বিচারে না বসতে অনুরোধ করেন বাংলাদেশের কোচ, 'আমার মনে হয় গণমাধ্যম চায় খেলোয়াড়েরা সবসময় ভালো করুক, যেটা বাস্তবিক না। বিশেষ করে ছয়-সাত মাস পর খেলায় নামলে তো খুব ভালো হয় না। আমি আশা করব গণমাধ্যম খেলোয়াড়দের সমর্থন দেবে, কঠোর বিচার না করে পাশে থাকবে। ছেলেদের নিশ্বাস ফেলার সুযোগ দিতে হবে।' এই টুর্নামেন্ট দিয়ে প্রাথমিক যে লক্ষ্য তা পূরণ হয়েছে বলে তৃপ্ত ডমিঙ্গো, 'আমি খুবই খুশি। টুর্নামেন্টটা দুর্দান্ত নিবেদন নিয়ে সবাই খেলেছে। সবাইকে বুঝতে হবে খেলোয়াড়েরা গত সাত মাসে কোনো প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেনি। তাও কিছু তরুণ ভালো করেছে।' মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে উইকেটের আচরণ বরাবরই কিছুটা মন্থর। এবারও ছিল তা। চেনা সেই বাইশ গজে রান না পাওয়ায় উইকেটকেও ঢাল বানিয়েছেন বাংলাদেশের কোচ, 'কোচ হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল ছেলেদের খেলার সুযোগ করে দেওয়া, লড়াইয়ের একটা আমেজে খেলানো। সেদিক থেকে আমি খুবই খুশি। সব ম্যাচ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। উইকেট খুব সহজ ছিল না। এই কারণে আমার মনে হয় ব্যাটসম্যানরা ভুগছে। কিছু তরুণ রান পেয়েছে। মুশফিক রান পাচ্ছে, আনন্দের বিষয় হচ্ছে এদের আবার খেলতে দেখা।' তবে তার মূল কথা প্রস্তুতিমূলক টুর্নামেন্ট আয়োজন করাই হয়েছে ক্রিকেটারদের জড়তা কাটানোর জন্য। এখানে পারফরম্যান্স বিচার করাটা ঠিক হবে না, 'আমি যেটা বলছিলাম, সাত মাস খেলে নাই তারপর এ রকম টুর্নামেন্টে আপনি খেলোয়াড়দের বিচার করতে পারেন না।'