সাকিবের প্রত্যাবর্তন হবে দুর্দান্ত

অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে সাকিব আল হাসানের। এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবারও সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি মিলেছে দেশসেরা এই বাঁ-হাতি অলরাউন্ডারের

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আবারও ব্যাটে-বলে দারুণ পারফর্ম করবেন সাকিব আল হাসান -ফাইল ফটো
৩৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ। অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে সাকিব আল হাসানের। এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে আবারও আনুষ্ঠানিকভাবে সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি মিলেছে দেশসেরা এই বাঁ-হাতি অলরাউন্ডারের। যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে যাওয়ার আগে বিকেএসপিতে একমাস কঠোর অনুশীলন করেছেন সাকিব। ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি বক্সিং, সুইমিং আর রানিংয়ে জোর দিয়েছেন তিনি। এমনটাই জানিয়েছেন সাকিবের তত্ত্বাবধানে থাকা কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। অন্য পাঁচ বা দশজন ক্রিকেটারের চেয়ে একেবারে আলাদা সাকিব। মাঠের পারফরম্যান্সে তার প্রত্যাবর্তন হবে দুর্দান্ত। এমনটাই বিশ্বাস কোচ সালাউদ্দিনের। সাকিবের জন্যে অধীর অপেক্ষায় গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। সমর্থকদের মতো অপেক্ষায় সাকিবের জাতীয় দলের সতীর্থরাও। একে একে সবাই তাকে স্বাগতম জানিয়েছেন। শুভানুধ্যায়ীদের দৃঢ় বিশ্বাস, কর্পোরেট টি২০ টুর্নামেন্টেই আরও ক্ষুরধার হয়ে ফিরবেন মিস্টার সেভেন্টি ফাইভ। সাকিবের সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের সম্পর্কটা বেশ পুরানো। বাংলাদেশের ক্রিকেটের আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত বিকেএসপিতে একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন দুজন। ফলে সেই কিশোর বয়স থেকেই দুজনের মাঝে বেশ ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে। সাকিব সব ধরনের ক্রিকেটে ফেরার অনুমতি পাওয়ায় আনন্দ-উচ্ছ্বাস লুকিয়ে রাখতে পারেননি মুশফিক। জানিয়েছেন, সাকিবের সঙ্গে খেলতে তার তর সইছে না। মিস্টার ডিপেন্ডেবল তার ফেসবুক পেজে সতীর্থ সাকিবকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন। সঙ্গে তাকে শুভকামনা জানাতেও ভুলেননি, 'তরুণ বয়সে আমরা একসঙ্গে আমাদের ক্যারিয়ার শুরু করি। আমাদেরকে কখনো পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। গত বছর যখন আমরা জানতে পারি যে, এক বছর আমরা একসঙ্গে ড্রেসিং রুম শেয়ার করতে পারব না এটা ছিল আমাদের সবার জন্য বিশাল একটা ধাক্কা।' তিনি আরও বলেন, 'আমাদের দুর্দান্ত কিছু স্মৃতি আছে। একসঙ্গে দারুণ সব মুহূর্ত কাটিয়েছি আমরা। নিজেদের সুসময়গুলোকে আমরা ভাগাভাগি করেছি। কঠিন সময়ে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমি খুব খুশি যে এই একটা বছর কেটে গেছে এবং আমরা আবারও একসঙ্গে মাঠে ফিরতে পারব। তুমি সব সময়ই চ্যাম্পিয়নের মতো কামব্যাক করেছ এবং আমি আবারও তোমার সঙ্গে ম্যাচজয়ী জুটি গড়তে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।' সাকিবের মাঝে অগাধ বিশ্বাস দেখছেন কোচ সালাউদ্দিন। বিপদে এই ক্রিকেটারের আশ্রয়ও গুরুর কাছে। বিশ্বকাপের আগে হায়দরাবাদের অনুশীলন কিংবা নিষেধাজ্ঞার সময় বিকেএসপিতে নিভৃতে কাটানোর সময়েও সাকিবের মেন্টরের ভূমিকায় কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। ছাত্রের সম্পর্কে তিনিই তো জানেন সবচেয়ে ভালোভাবে। সালাউদ্দিন বলেন, 'সাকিব অন্য ৫-১০টা ক্রিকেটারের চেয়ে আলাদা। সে ভালো খেললেও যেমন থাকে, খারাপ খেললেও তেমনই। মানসিকভাবে খুব বেশি হেরফের হয় না। আমি সব সময়ই দেখি, সে খেলার বাইরে থাকলে, খুব ভালোভাবে ফিরে আসে।' এই কোচ আরও বলেন, 'আমি, ফাহিম স্যার আর সাকিব মিলেই প্রোগ্রামটা করি। যেহেতু শ্রীলংকা সফরে টেস্ট খেলা ছিল, সেভাবেই পরিকল্পনা করছিলাম। স্কিলে কোনো সমস্যা মনে হয়নি। ফিটনেসের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেছি। বক্সিং, সুইমিং করানো হয়েছে। রিচার্ডের সময় এইচপিতে যে কঠিন ট্রেইনিং করা হতো, চেষ্টা করেছি তেমন কিছু করার। চার সেশনে ট্রেইনিং হয়েছে। সকালে হয়তো ফিটনেস, এরপর ব্যাটিং অথবা বক্সিং বা সুইমিং করেছি। প্রথম ২-৩ সপ্তাহ কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে মানিয়ে নিয়েছি। ব্যাটিংয়ে আরও ভালো করার সুযোগ আছে। বোলিংটা সাকিবের গড গিফ্‌টেড। এটা নিয়ে খুব একটা কাজের প্রয়োজন নেই।'