আবহাওয়াও টাইগারদের প্রতিপক্ষ!

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
একের পর এক চোটাঘাত হানা দিয়েছে শিবিরে। সাকিব-তামিমদের মতো শীষর্ ক্রিকেটারদের চোট ভাবাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। ভাবতে হচ্ছে প্রতিপক্ষ দলগুলোতে থাকা লেগ স্পিনারদের নিয়ে। শিরোপার মিশন নিয়ে এশিয়া কাপ খেলতে যাওয়া টাইগারদের বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে আরব আমিরাতের উষ্ণ আবহাওয়া! এমন আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ভালো পারফরম্যান্স দেখানোটাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সাকিব আল হাসান। বছরের শুরুতে পাওয়া আঙুলের চোটে ভুগছেন সাকিব। এশিয়া কাপে তার খেলা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। এই বাহাতি অবশ্য আশাবাদি, শুরু থেকেই খেলবেন। কিন্তু শঙ্কা কাটিয়ে যদি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার মাঠে নামেন; সেরাটা দিতে পারবেন কিনা, সেটা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। তবে সাকিবকে ছাড়াই এশিয়া কাপ খেলার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। এমনটাই জানিয়েছেন টাইগারদের প্রধান কোচ স্টিভ রোডস। সমথর্কদের প্রত্যাশা পূরণে ক্রিকেটাররা সব্বোর্চ্চ নিবেদিত বলেও জানান তিনি। এশিয়া কাপে প্রথম দল হিসেবে রোববার রাতে আরব আমিরাতে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। সোমবারই অনুশীলনে নেমে পড়েছে টাইগাররা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাকিব। আরব আমিরাতে প্রথম দিনের ব্যাট-বলে ঘণ্টাখানেক অনুশীলন করেছেন টাইগার অলরাউন্ডার। এশিয়া কাপে টাইগারদের বড় শঙ্কা চোটাঘাত নিয়ে। দলে রয়েছেন চোটাক্রান্ত তিন খেলোয়াড়Ñ সাকিব, তামিম আর শান্ত। উদ্বেগ নিয়েই রোববার দেশ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল। ভিসা জটিলতায় দলের সঙ্গে যেতে পারেননি তামিম আর রুবেল। রুবেল অবশ্য মঙ্গলবারই ঢাকা ত্যাগ করেছেন, তবে এদিনও ভিসা পাননি তামিম। এদিকে দলের সঙ্গে যোগ দেয়া সাকিব জানিয়েছেন, খেলার জন্য তৈরি আছেন। অনুশীলনে নিজেকে আরও ভালোভাবে ঝালিয়ে নিতে চান তিনি। তবে চোট নিয়ে সেরাটা দেয়া কঠিন এক চ্যালেঞ্জই হবে সাকিবের জন্য। সেই সাকিব আবার আরব আমিরাতে গরমের সাথে মানিয়ে নেয়াটাকে দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পযর্ন্ত গরমের তীব্রতায় রাস্তায় নামা কঠিন হয়ে পড়ে। আরব আমিরাতের এমন কন্ডিশনে ক্রিকেট খেলাটা সহজ হওয়ার কথা নয়। টাইগার ম্যানেজমেন্টে বিষয়টি জানা আছে। তাই সবার আগে দুবাইয়ে পৌছে অনুশীলনে মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন মাশরাফিদের। অনুশীলনে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই দেখা গেছে সাকিবকে। আরব আমিরাতে আগেও খেলেছেন তিনি। সেখানকার মাঠ, উইকেট, কন্ডিশন সম্পকের্ জানাশোনা ভালোই আছে তার। নিজের অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিচ্ছেন দলের মধ্যে। টুনাের্মন্টে সাফল্য পেতে দ্রæত কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়াটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন সাকিব। সাকিবকে শুরু থেকেই পাওয়ার আশা কোচ রোডসের। তিনি বলেছেন, ‘আমি আশা করছি সাকিব এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচ থেকেই মাঠে নামবে। সে খুবই গুরুত্বপূণর্ ক্রিকেটার। সে জানে দলে তার প্রয়োজনটা কতোটুকু। সাকিবের আঙুলের ইনজুরির অস্ত্রোপচার পরে করা হবে বলে কথা জেনেছি। আর যদি শেষ পযর্ন্ত সাকিবকে নাই পাওয়া যায়। তাহলে এমন বাস্তবতা মেনে বাংলাদেশ দল প্রস্তুত আছে এশিয়া কাপে মাঠে নামতে।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সীমিত ওভারের সিরিজে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে সফল স্টিভ রোডস। তবে এই ইংলিশ কোচের লক্ষ্যটা দুর বহু দুর, ‘ওয়ানডে বাংলাদেশ দলের প্রিয় একটা ফরম্যাট। বিশ্বের শক্তিশালী দলগুলো বাংলাদেশকে ভয়ঙ্কর দল বলে। তবে উপমায় এতো আমি সন্তুষ্ট নই। ফলাফল আমাদের পক্ষে থাকতে হবে। এটাই প্রথম ও শেষ কথা। এই জন্য দেশের পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও আপনাকে নিয়মিত সাফল্য পেতে হবে।’ কোচের কথায় স্পষ্ট, সাফল্য পেতে আপোষহীন তিনি। এশিয়া কাপ মানেই দেশের সমথর্কদের কাছে বছরের পর বছর ধরে একটি ট্রফি জয়ের লালিত স্বপ্ন। সমথর্কদের এই আবেগ আর ভালবাসা সম্পকের্ কতোটা অবগত রোডস? এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কতোটা ক্রিকেটপ্রেমী আমি এদেশে আসার আগে থেকেই তা জানি। একজন চাকুরীজীবী থেকে রিক্সা চালক কিংবা শ্রমিক সবাই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অসম্ভব ভালবাসে। ক্রিকেটাররা তাদের দেশের প্রতি শতভাগ দায়বদ্ধ। প্রত্যেক ক্রিকেটার তার সামথের্্যর সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করবে। এটা আমি বিশ্বাস করি।’ সেই বিশ্বাসের বাস্তবায়ন দিতেই ১৫ সেপ্টেম্বর লংকা বধের সংকল্প বাংলাদেশের।