নেপালকে হারিয়ে ফাইনালে মালদ্বীপ

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
গোলের পর উচ্ছ¡াসে মেতেছে মালদ্বীপের ফুটবলাররা। বুধবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালে নেপালকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা Ñবাংলানিউজ
‘জয়ের জন্য এক গোলই যথেষ্ট। তবে আমরা আশা করছি, গোল চার-পঁাচটি হবে।’- ম্যাচের আগের দিন মালদ্বীপের কোচ সেগ্রেট পিটারের এমন অধিক আত্মবিশ্বাস দেখে মুখ টিপে হেসেছিলেন অনেকে। তবে চার গোল না হলেও নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সাফ সুজুকি কাপের ফাইনালে ঠিকই নাম লিখিয়েছে সেগ্রেটের দল মালদ্বীপ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠকে ‘সৌভাগ্যের ভেন্যু’ হিসেবে দেখতো নেপাল। কিন্তু বুধবার বৃষ্টিস্নাত মাঠটি আর হিমালয়কন্যার দেশটির দিকে সৌভাগ্যের হাত বাড়ায়নি। বাংলাদেশকে বিদায় করে এবং পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে ‘এ’ গ্রæপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে নাম লেখানো দলটি এদিন মাথা তুলেই দাড়াতে পারেনি। মাত্র একটি পয়েন্ট নিয়ে ভাগ্যের জোরে ‘বি’ গ্রæপের রানাসর্আপ হয়ে শেষ চারে আসা মালদ্বীপ বাল গোপাল মহাজের্নর নেপালকে পয়া ভেন্যুতে ফুটবলের দীক্ষা দিয়েছে! সাফের মতো আন্তজাির্তক টুনাের্মন্টের সেমিফাইনাল, গ্যারারিতে হয়তো পা ফেলারও জায়গা থাকতো না, যদি বাংলাদেশ টুনাের্মন্টে টিকে থাকতো। গ্রæপ ম্যাচেই বঙ্গবন্ধুর গ্যালারিতে নেমেছিল দশের্কর ঢল। সেমিফাইনালে সেই গ্যালারিই শুনশান। হাতেগোনা কয়েকজন দশর্ক দেখা গেল। নেপালের শ’খানেক সমথর্ক হৈ হুল্লোর করলেন, উৎসাহ জোগালেন দলকে। কিন্তু লাভ হলো না। তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনাও জয়ের নেশায় উদ্দীপ্ত করতে পারেনি নেপালকে। বাংলাদেশের বিদায়ের পরই সাফ যেন শেষ হয়ে গেছে। যদিও নেপালের কোচ আশা করেছিলেন, বাংলাদেশের দশর্করা তাদের সমথর্ন দেবেন। কিন্তু দলটির কাছে হেরে সাফে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের তাদের সমথর্ন দিতে কি করে আসবে সমথর্করা? আসেনি। হয়তো আরও কিছু দশর্ক হতো। কিন্তু ম্যাচ শুরু আগে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ভেস্তে দিয়েছে সব। বৃষ্টির বাগড়াতেও অবশ্য নিধাির্রত সময়েই শুরু হয়েছে মালদ্বীপ-নেপাল লড়াই। শুরুতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিললেও ম্যাচের প্রথম দিকেই লিড নেয় মালদ্বীপ। নমব মিনিটে বক্সের বাইরে আলি ফাসিরকে ফাউল করেন নেপালের একজন ডিফেন্ডার। দলীয় অধিনায়ক আকরাম আব্দুল ঘানির দারুণ ফ্রিকিকে বল জড়ায় নেপালের জালে (১-০)। ২২ মিনিটে সুযোগ এসেছিল নেপালেরও। বা প্রান্ত থেকে সুনিল বালের শট বক্সে লাফিয়ে উঠে হেড নিতে গেলেও বলের নাগাল পাননি তার সতীথর্রা। ফিস্ট করে বল ক্লিয়ার করেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। বজ্রপাতের কারণে ২৮ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় আধা ঘন্টা পর আবারো শুরু হয় খেলা। গোল পরিশোধে মরিয়া চেষ্টা চালায় নেপাল। ৩৮ মিনিটে সতীথর্র ক্রস থেকে বক্সে বল পেয়ে পোস্টেও খুব কাছ থেকে শট নিতে গিয়েছিলেন ভারত খাওয়াজ। কিন্তু তিনি শট নেয়ার আগেই বল মাঠের বাইরে পাঠিয়ে নিশ্চিত গোল থেকে নেপালকে বঞ্চিত করেন ইউসুফ হোসেন। ৪০ মিনিটে বিমল মাগারের শট ঠিক মতো ক্লিয়ার করতে ব্যথর্ হন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। পোস্ট ছেড়ে তিনি এগিয়ে আসায় অরক্ষিত ছিল গোলপোস্ট। কিন্তু এবারো নিশ্চিত গোলের সুযোগটা হাতছাড়া করেছেন নেপালের অধিনায়ক ভারত খাওয়াজ। প্রথমাধের্ সমতায় ফিরতে পারেনি নেপাল। তাই এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে গেছে মালদ্বীপ। বিরতির পর ৪৭ মিনিটে কনার্র আদায় করে নেয় নেপাল। তবে মালদ্বীপের শক্ত রক্ষণের সহজেই বক্সে জটলায় বল বিপদমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। দুই মিনিট পর বল নিয়ে একক প্রচেষ্টায় নেপালের অধের্ ঢুকে পড়েন ফরোয়াডর্ হাসান নাইজ। পোস্ট লক্ষ্য করে জোরালো শটও নেন। কিন্তু নেপালের গোলরক্ষক কিরণ কুমার লিম্বুর পায়ে বল লেগে দিক পরিবতীর্ত হয়ে যাওয়ায় আরও এক গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় মালদ্বীপের। ৬১ মিনিটে বক্সে বল পেয়ে হেড নিয়েছিলেন নেপালের বিমল গাত্রী মাগার। কিন্তু বল ফিস্ট করেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। ৮৪ মিনিটে বদলি ফরোয়াডর্ আসাদুল্লাহ আবদুল্লাহর শট ফিরিয়ে দেন নেপালের এক ডিফেন্ডার। কিন্তু ফিরতি বলে বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ইব্রাহিম (২-০)। দুই মিনিট পর আবারও দৃশ্যপটে এই ফরোয়াডর্। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে নিখুঁত শটে আবারো তিনি গোল করলে ৩-০ ব্যবধানের বড় জয় নিয়েই ফাইনালে নাম লেখানোর আনন্দে মাতে মালদ্বীপ।